• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

যে কারণে নবীজির রওজার মূল দরজা আজও খোলা হয়নি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯  

হজ্জ ও ওমরাহ্‌ পালনকারীদের মদিনায় যাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য হল নবীজির রওজা মোবারক জিয়ারত করা। কিন্তু হাজীরা সেই রওজার অনেকটা দূরে থেকেই তা জিয়ারত করেন। কিন্তু জানেন কি গত ৭০০ বছরেও নবীজির রওজার দরজা খোলা হয়নি কখনও। ডেইলি বাংলাদেশের আজকের আয়োজনে থাকছে যে কারণে ৭০০ বছরেও খোলা হয়নি নবীজির রওজার মূল দরজা তা সম্পর্কে। 

পবিত্র ভূমি মদিনার মসজিদে নববীতে চির নিদ্রায় শায়িত আছেন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম। নবীজি যে ঘরটিতে  স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) কে নিয়ে বসবাস করতেন সে ঘরটিতে মৃত্যুর পর তাকে দাফন করা হয়। রাসুলের (সাঃ) রওজার পাশে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রাঃ) ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রাঃ) এর কবর পাশে আর একটি কবরের জায়গা খালি। এখানে হযরত ঈসা (আঃ) এর কবর হবে। এই কারণে হজ্জ পালনের আগে কিংবা পরে হাজীরা মদিনা শরীফ আসেন।  

মদিনায় অবস্থানকালে হাজীদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হচ্ছে মসজিদে নববীতে হাজিরা দেয়া এবং সেখানে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। মসজিদে নববীতে এক রাকাত নামাজের সওয়াব ৫০ হাজার রাকাত নামাজের সমান। এছাড়া  মসজিদে নববীতে বিরতিহীনভাবে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের আলাদা ফজিলত রয়েছে। সুদীর্ঘ ৭০০ বছরেও নবীজির রওজার মূল দরজা খোলা হয়নি। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আবেগ এতটাই বেশি যে নবীজির রওজার দরজা খোলা থাকলে হয়ত তার ভিতরে ধূলা বালিও নিয়ে যেত তাই নবীজির রওজা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বেশ খানিকটা দূরে থেকে রওজা জিয়ারতের সুযোগ দেয়। 

সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী নবীজির রওজা মোবারক নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে। বিভিন্ন দেশে নবীজী ও খলিফাদের ভুয়া রওজার ছবি দেখিয়ে অবৈধ অর্থ রোজগারের অপচেষ্টা চলছে। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আল আলামিন ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করা উচিত নয় বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন। তাছাড়াও রওজা শরীফ  সম্পর্কে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে। হযরত মুহম্মাদ (সাঃ) বলেন যে ব্যক্তি আমার মসজিদে ৪০ দিন জামাতে নামাজ আদায় করেছে আর কোন নামায কাজা করেনি সে নিফাক আর দোযকের আযাব থেকে নাজাত পাবে। 

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর রওজা শরীফ জিয়ারতের ফজিলত প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উফাত এর পর তার রওজা মোবারক জিয়ারত করল সে যেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় তাকে দর্শন করলো। মসজিদে নববীতে প্রবেশের অনেকগুলো দরজা রয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম পাশে রাসূলের রওজা জিয়ারতের জন্য যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হয় ওই দরজাকে বাবুস সালাম বলা হয়। বাবুস সালাম দিয়ে প্রবেশ করে রাসূলের রওজা সালাম শেষে বাবুল বাকী দিয়ে বের হতে হয়। 

মদিনায় জিয়ারত হাজীদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। কারণ মদিনায় এসে দুনিয়ায় জীবিত থাকতে জান্নাতে ভ্রমণের সুযোগ মেলে। কারণ নবী করীম সাল্লাহু সাল্লাম এর রওজা শরীফ এবং এর থেকে পশ্চিম দিকে রাসূল সাঃ এর নিম্বর পর্যন্ত স্বল্প পরিসরের স্থান টুকুতে  রিয়াজুল জান্নাত বা বেহেস্তের বাগিচা বলে পরিচিত। এটি দুনিয়াতে একমাত্র জান্নাতের অংশ। এই স্থানে সতন্ত্র রঙের কার্পেট বিছানো থাকে। এই স্থানটুকু সম্পর্কে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন, আমার রওজা ও নিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে বেহেস্তের একটি বাগিচা বিদ্যমান। বস্তুত দুনিয়ার সব কবরের মধ্যে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে বেশি জিয়ারতের  উপযুক্ত স্থান হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর রওজা মোবারক। তাই এর উদ্দেশ্যে সফর করা উত্তম। এই কথার ওপর পূর্বাপর সব ওলামায়ে কেরামের ঐক্য মত রয়েছে।