• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

রমজান মাসের আমল

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১ মে ২০১৯  

রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো...

(৫) সাহরী খাওয়া: সাহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে এবং সিয়াম পালনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদীসে এসেছে, ‘সাহরী হলো বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন’ (মুসনাদ আহমাদ : ১১১০১, সহীহ)।

(৬) সালাতুত তারাবীহ পড়া: সালাতুত তারাবীহ পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। তারাবীহ পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব হাসিলের আশায় রমজোনে কিয়ামু রমজান (সালাতুত তারাবীহ) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’ (সহীহ আল-বুখারী : ২০০৯)।

তারাবীহ এর সালাত তার হক আদায় করে অর্থাৎ ধীরস্থীরভাবে আদায় করতে হবে। তারাবীহ জামায়াতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমামের সঙ্গে প্রস্থান করা অবধি সালাত আদায় করবে (সালাতুত তারাবীহ) তাকে পুরো রাত কিয়ামুল লাইলের সাওয়াব দান করা হবে’ (সুনান আবূ দাউদ : ১৩৭৭, সহীহ)।

(৭) বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা: এটি কোরআনের মাস। তাই এ মাসে অন্যতম কাজ হলো বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ’’ (সুনান আত-তিরমিযী: ২৯১০, সহীহ)।

রাসূলু (সা.) রমাজান ব্যতীত কোনো মাসে এত বেশি তেলাওয়াত করতেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রমাজান ব্যতীত অন্য কোনো রাত্রিতে আমি রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ণ কোরআন তেলাওয়াত করতে, কিংবা ভোর অবধি সালাতে কাটিয়ে দিতে অথবা পূর্ণ মাস রোজা পালন করে কাটিয়ে দিতে দেখিনি।’ (সহীহ মুসলিম : ১৭৭৩)।

(৮) শুকরিয়া আদায় করা: রমাজান মাস পাওয়া এক বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। সেজন্য আল্লাহ তায়ালার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা এবং আগামী রমজান পাওয়ার জন্য তাওফীক কামনা করা। রমজান সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে: ‘আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।’ (সূরা আলবাকারাহ : ১৮৫)।

‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সূরা ইব্রাহিম : ৭)।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, নবী (সা.) নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করে বলতেন অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। (সুনান আত-তিরমিযী : ২৭৩৮)।

(৯) কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা: এ মাসটিতে একটি ভালো কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সেজন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভালো কাজ করতে হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘এ মাসের প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহবান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ কর। (তুমি কী জান?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তায়ালা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (সুনান আত-তিরমিযী : ৬৮৪)।

 (১০) সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়া: রমজান মাস ছাড়াও সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়ার মধ্যে বিরাট সাওয়াব এবং মর্যাদা রয়েছে। রমজানের কারণে আরো বেশি ফজিলত রয়েছে। যেহেতু সাহরী খাওয়ার জন্য উঠতে হয় সেজন্য রমজান মাসে সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করার বিশেষ সুযোগও রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের সালাত অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সালাত।’ (সহীহ মুসলিম : ২৮১২)।