• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ঘূর্ণিঝড় ও দূর্যোগে পড়ার দোয়া

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ মে ২০১৯  

মহানা আল্লাহ মানুষসহ সকল প্রাণীর এবং আসমান-জমীনের সর্বশ্রেষ্ঠ আশ্রয়দাতা। তার নিকট দোয়া  প্রার্থণা হচ্ছে যে কোনো সমস্যায় আশ্রয় লাভের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।  তাছাড়া দোয়া আল্লাহর নিকট স্বতন্ত্র ইবাদতও বটে। তাই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে আশ্রায় পেতে মহানবী (সঃ) সাহাবিদেরকে অনেক দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন।  এ দোয়াগুলো পড়ে নিজের জন্য এবং ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করে আমরা আশ্রায় কামনা করতে পারি।  কিছু দোয়া নিচে তুলে ধরা হলো-

 

ঝড় তুফানে পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : `আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা।’ (বুখারি)  অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিয়ো না।’

উচ্চারণ : `আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্আলুকা খায়রাহা ওয়া খায়রা মা ফিহা- ওয়া খায়রা মা উরসিলাতবিহি; ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাতবিহি।`

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর মঙ্গল, এর মধ্যকার মঙ্গল ও যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার মঙ্গলসমূহ প্রার্থনা করছি এবং আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এর অমঙ্গল হতে, এর মধ্যকার অমঙ্গল হতে এবং যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার অমঙ্গলসমূহ হতে।’

 

ঘূর্ণিঝড়ে পড়ার দোয়া

বান্দার জন্য বাতাস আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত। কারণ মানুষ বাতাস ছাড়া বাঁচতে পারে না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। তবে যদি তোমরা একে তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেখতে পাও, তবে এ দোয়া করবে- উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরি মা ফিহা ওয়া খাইরি মা উমিরাত বিহি, ওয়া নাউজুবিকা মিন শাররি হাজিহির রিহি ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উমিরাত বিহি’ (তিরমিজি, মিশকাত)

অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট এ বাতাসের ভালো দিক, এতে যে কল্যাণ রয়েছে তা এবং যে উদ্দেশ্যে তা নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার উত্তম দিকটি প্রার্থনা করছি। এবং তোমার নিকট এর খারাপ দিক হতে, এতে যে অকল্যাণ রয়েছে তা হতে এবং এটা যে উদ্দেশ্যে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার মন্দ দিক হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

 

মেঘের গর্জনে পড়ার দোয়া

হজরত আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং কুর`আন মাজীদের এই আয়াত তিলাওয়াত করতেন- উচ্চারণ : ‘সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা`দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি।’ (মুয়াত্তা)

অর্থ : ‘পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা- তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে।’

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেঘের গর্জন শুনলে বা বিদ্যুতের চমক দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই এই দোয়া করতেন- উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা লা তাক্বতুলনা বিগজাবিকা ওয়া লা তুলহিকনা বিআ’জাবিকা, ওয়া আ’ফিনা ক্ববলা জালিকা।’ (তিরমিজি)

অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! তোমার ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের মেরে ফেলো না আর তোমার আযাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করো না। বরং এর আগেই আমাদেরকে ক্ষমা ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে নিও।’

 

 

ভূমিকম্পসহ যাবতীয় দুর্যোগ থেকে বাঁচার দোয়া

উচ্চারণ : ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ।’ (বুখারি ও মুসলিম)

উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনজ জ্বালিমিন।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৭)

 

বিপদাপদ থেকে আত্মরক্ষায় প্রতিদিনের দোয়া

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেহ সকাল এবং সন্ধ্যায় নিন্মোক্ত দোয়াটি পড়বে; তাকে কোনো বিপদাপদ, বালা-মুছিবত স্পর্শ করবে না-

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহিল লাজি লা ইয়াদূররু মাআস মিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামিই ওয়াহুয়া সামিয়ুল আলিম।’ (তিরমিজি, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)।

 

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, যেন তাঁর উম্মতকে দুর্যোগ ও বিপর্যয় দিয়ে এক সঙ্গে ধ্বংস করে দেয়া না হয়। এ সব বিপদকালীন সময়ে বিশ্বনবি বেশি বেশি তাওবা ও ইসতেগফার করতেন এবং অন্যদেরকেও তা পড়তে নির্দেশ দিতেন। তাই সকল মুসলিমদের উচিত ঘূর্ণিঝড়, প্রবল ঝড়ো বাতাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সব ধরনের দুর্যোগে এ দোয়াগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নিকট আশ্রয় লাভে প্রার্থণা করা।  আল্লাহ তাআলা সবাইকে হাদিসের আমলগুলো করার তাওফিক দিন। আমিন।