• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মুসাফিরের রোজা ও তারাবির নামাজের বিধান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২০  

প্রশ্ন : অনেকের মুখে শুনেছি মুসাফির ব্যক্তির রোজা রাখতে হয় না। আমি জানতে চাই মুসাফির বলতে কাকে বুঝায়? আমার শোনা কথা কি সঠিক? রোজা না রাখার অবকাশ থাকলে তারাবিও না পড়ার সুযোগ আছে? বিষয়গুলো জানতে পারলে উপকৃত হতাম।

উত্তর : শরীয়তে সফর দ্বারা উদ্দেশ্য :  শরীয়তে সফর বলতে বুঝানো হয়, সফরের নিয়তে তিন মনজিল সমপরিমান দূরত্বে যাওয়া। এক মনজিল সমান ১৬ মাইল। মাইল দ্বারা প্রচলিত মাইল উদ্দেশ্য। অতএব, তিন মনজিল বা ৪৮ মাইল দূরে ভ্রমণে গেলে তা সফর বলে গণ্য হবে। প্রচলিত কিলোমিটার হিসেবে ৭৭ কিলোমিটার। (আপকে মাসায়েল, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৭৭)।

গ্রহণযোগ্য সফর হওয়ার জন্য শরীয়তে নিয়তের শর্ত করা হয়েছে। সুতরাং কোনো ব্যক্তি যদি নিয়ত ছাড়া এর চেয়েও বেশি দূরত্বে যায় তবুও সে মুসাফির হবে না। (ফিকহি দওয়াবেত, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৯৪)।

মুসাফিরের পরিচয় : যে ব্যক্তি নিজ বাড়ি বা আবাসস্থল থেকে, পূর্বোক্ত সমপরিমান বা তার চেয়ে বেশি দূরতে যায় এবং সেখানে পনেরো দিনের কম থাকার নিয়ত করে সেই মুসাফির। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-২য়, পৃষ্ঠা-৭২৮, আপকে মাসায়েল, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৭৭)। মুসাফির হওয়ার জন্য দ্বীনি কোনো কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া শর্ত নয়। জাগতিক কোনো উদ্দেশ্য এমনকি খারাপ নিয়তে বের হলেও সে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে। (আদ দুররুল মুখতার, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৭২৭)।

মুসাফিরের রোজার বিধান : রোজা রাখার ব্যাপারে মুসাফির ব্যক্তির বিধান ঐচ্ছিক। ইচ্ছা হলে রাখতেও পারে, না রাখারও সুযোগ আছে। তবে শরীয়তবেত্তাদের পরামর্শ হচ্ছে, রোজা রাখতে যদি কষ্ট না হয় তাহলে মুসাফিরের জন্য রোজা রাখা উত্তম। সফরের কারণে যদি রোজা রাখা না হয় তাহলে বাড়িতে ফিরে ওই রোজার কাযা করতে হবে। (ফতোয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৭২, মাকতাবা দারুল উলুম দেওবন্দ)। সফররত অবস্থায় মারা গেলে ছুটে যাওয়া রোজার ফিদিয়া দিতে হবে না। আর মুসাফির ফিরে আসার পর রোজা কাযা না করেই যদি মারা যায় তাহলে এক্ষেত্রে দেখতে হবে, সে রোজা রাখার সুযোগ পেয়েছিলো কী না। সুযোগ পাওয়ার পরও যদি না রেখে মারা যায় তাহলে রোজার ফিদিয়া দিতে হবে। এর আগেই যদি মারা যায় তাহলে ফিদিয়া দিতে হবে না। (আল লুবাব, পৃষ্ঠা-১৭৭)।

মুসাফিরের তারাবির নামাজের বিধান : মুসাফিরের তারাবির নামাজের বিধান অন্যান্য সুন্নত নামাজের মতো। অর্থাৎ মুসাফির যদি কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো বা ভয়-ভীতিতে না থাকে এবং তারাবির নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে সে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে তাহলে সে তারাবি পড়বে। অন্যথায় তাকে তারাবি পড়তে হবে না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩য়, পৃষ্ঠা-৭৩৭, আপকে মাসায়েল, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১০৫, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া, খণ্ড-১১, পৃষ্ঠা-৬০৭)।