• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

কোরআনের যে ৩ আয়াতের আমলে মিলবে শহিদের মর্যাদা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২০  

পৃথিবীর সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ হলো পবিত্র কোরআনুল কারিম। এর প্রত্যেকটি আয়াতই আলাদা আলাদা ফজিলত বহন করে। প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নাজিল হয়েছে এ আয়াতগুলো। 

এর কোনোটির তেলাওয়াতে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার কোনোটির নিয়মিত আমলে মিলে আল্লাহর বিশেষ রহমত ও অসীম নেয়ামত। এমন তিনটি আয়াত হলো সূরা আল হাশরের শেষ তিন আয়াত। আসুন জেনে নেই, এ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত সম্পর্কে।

হাদিসে এসেছে- হজরত মাকাল ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিন বার আউজু বিল্লাহিস সামিঈল আলিমি মিনাশশাইত্বানির রাজিমসহ ‘সূরা হাশরের’ শেষ তিন আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য আল্লাহ তায়ালা ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন।

সে ফেরেশতারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর আল্লাহর রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। যদি ওই দিন সে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন তবে সে শহিদের মর্যাদা লাভ করবে।

আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যার সময় এ আয়াতগুলো পাঠ করবে তাঁর জন্যও আল্লাহ তায়ালা ৭০ হাজার রহমতের ফেরেশতা নিয়োগ করবেন। যারা তাঁর ওপর সকাল হওয়া পর্যন্ত রহমত প্রেরণ করতে থাকবে। আর যদি ওই রাতে সে মৃত্যুবরণ করে তবে শহিদের মর্যাদা লাভ করবে। (সুনানে তিরমিজী, হাদিস নম্বর-৩০৯০)।

উচ্চারণ ও অর্থসহ সূরা আল হাশরের শেষ ৩ আয়াত (২২-২৪)

بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

অর্থ: শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

(২২)
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ: হুওয়াল্লাহুললাজি লা ইলাহা ইল্লাহু- আলিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদাতি হুওয়ার রাহমানুর রাহিম।

অর্থ: তিনিই আল্লাহ তায়ালা, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।

(২৩)
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
উচ্চারণ: হুওয়াল্লাহুল লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু- আল মালিকুল কুদ্দুসুসসালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। সুবহানাল্লাহি আম্মা ইউশরিকুন।

অর্থ: তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত; যারা তাঁর শরিক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র ও মহান।

(২৪)
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
উচ্চারণ: হুওয়াল্লাহুল খালিকুল বারিউল মুছাওয়্যিরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউসাব্বিহু লাহু মা ফিচ্ছামাওয়াতি ওল আরদি ওহুয়াল আজিজুল হাকিম।

অর্থ: তিনিই আল্লাহ তায়ালা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নামসমূহ তাঁরই। নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা সবাইকে এ ফজিলতপূর্ণ আমলটি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

অর্থসহ সূরা আল হাশর

সূরা আল-হাশর‌ (আরবি ভাষায়: الحشْر) পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআনুল কারিমের ২৮তম পারার ৫৯তম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ২৪। সূরা আল-হাশর‌ মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর পূর্ববর্তী সূরা আল-মুজাদালাহ আর পরবর্তী সূরা আল-মুমতাহিনাহ।

এই সূরাটির দ্বিতীয় আয়াতের أَخْرَجَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ مِنْ دِيَارِهِمْ لِأَوَّلِ الْحَشْرِ বাক্যাংশের الْحَشْرِ অংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে।

بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡم
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

(১)
سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
অর্থ: নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে। তিনি পরাক্রমশালী মহাজ্ঞানী।

(২) هُوَ الَّذِي أَخْرَجَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ مِن دِيَارِهِمْ لِأَوَّلِ الْحَشْرِ مَا ظَنَنتُمْ أَن يَخْرُجُوا وَظَنُّوا أَنَّهُم مَّانِعَتُهُمْ حُصُونُهُم مِّنَ اللَّهِ فَأَتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوا وَقَذَفَ فِي قُلُوبِهِمُ الرُّعْبَ يُخْرِبُونَ بُيُوتَهُم بِأَيْدِيهِمْ وَأَيْدِي الْمُؤْمِنِينَ فَاعْتَبِرُوا يَا أُولِي الْأَبْصَارِ
অর্থ: তিনিই কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে প্রথমবার একত্রিত করে তাদের বাড়ী-ঘর থেকে বহিষ্কার করেছেন। তোমরা ধারণাও করতে পারনি যে, তারা বের হবে এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদের দূর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহর কবল থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহর শাস্তি তাদের ওপর এমনদিক থেকে আসল, যার কল্পনাও তারা করেনি। আল্লাহ তাদের অন্তরে ত্রাস সঞ্চার করে দিলেন। তারা তাদের বাড়ী-ঘর নিজেদের হাতে এবং মুসলমানদের হাতে ধ্বংস করছিল। অতএব, হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিরা, তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।

(৩)
وَلَوْلَا أَن كَتَبَ اللَّهُ عَلَيْهِمُ الْجَلَاء لَعَذَّبَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابُ النَّارِ
অর্থ: আল্লাহ যদি তাদের জন্যে নির্বাসন অবধারিত না করতেন, তবে তাদেরকে দুনিয়াতে শাস্তি দিতেন। আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আজাব।

(৪)
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ شَاقُّوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَمَن يُشَاقِّ اللَّهَ فَإِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ: এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।

(৫)
مَا قَطَعْتُم مِّن لِّينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيُخْزِيَ الْفَاسِقِينَ
অর্থ: তোমরা যে কিছু কিছু খর্জুর বৃক্ষ কেটে দিয়েছ এবং কতক না কেটে ছেড়ে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই আদেশ এবং যাতে তিনি অবাধ্যদেরকে লাঞ্ছিত করেন।

(৬)
وَمَا أَفَاء اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْهُمْ فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلَا رِكَابٍ وَلَكِنَّ اللَّهَ يُسَلِّطُ رُسُلَهُ عَلَى مَن يَشَاء وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
অর্থ: আল্লাহ বনু-বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রাসূলকে যে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার ওপর ইচ্ছা, তাঁর রাসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। আল্লাহ সবকিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।

(৭)
مَّا أَفَاء اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ كَيْ لَا يَكُونَ دُولَةً بَيْنَ الْأَغْنِيَاء مِنكُمْ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ: আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রাসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রাসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।

(৮)
لِلْفُقَرَاء الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن دِيارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا وَيَنصُرُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُوْلَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
অর্থ: এই ধন-সম্পদ দেশত্যাগী নিঃস্বদের জন্যে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টিলাভের অন্বেষণে এবং আল্লাহ তাঁর রাসূলের সাহায্যার্থে নিজেদের বাস্তুভিটা ও ধন-সম্পদ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে। তারাই সত্যবাদী।

(৯)
وَالَّذِينَ تَبَوَّؤُوا الدَّارَ وَالْإِيمَانَ مِن قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُونَ فِي صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِّمَّا أُوتُوا وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
অর্থ: যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে মদিনায় বসবাস করেছিল এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তারা মুহাজিরদের ভালবাসে, মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে, তজ্জন্যে তারা অন্তরে ঈর্ষাপোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদেরকে অগ্রাধিকার দান করে। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।

(১০)
وَالَّذِينَ جَاؤُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
অর্থ: আর এই সম্পদ তাদের জন্যে, যারা তাদের পরে আগমন করেছে। তারা বলে: হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভ্রাতাদেরকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।

(১১)
أَلَمْ تَر إِلَى الَّذِينَ نَافَقُوا يَقُولُونَ لِإِخْوَانِهِمُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَئِنْ أُخْرِجْتُمْ لَنَخْرُجَنَّ مَعَكُمْ وَلَا نُطِيعُ فِيكُمْ أَحَدًا أَبَدًا وَإِن قُوتِلْتُمْ لَنَنصُرَنَّكُمْ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ
অর্থ: আপনি কি মুনাফিকদেরকে দেখেননি? তারা তাদের কিতাবধারী কাফের ভাইদেরকে বলে: তোমরা যদি বহিষ্কৃত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদের সঙ্গে দেশ থেকে বের হয়ে যাব এবং তোমাদের ব্যাপারে আমরা কখনও কারো কথা মানব না। আর যদি তোমরা আক্রান্ত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করব। আল্লাহ তায়ালা সাক্ষ্য দেন যে, ওরা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।

(১২)
لَئِنْ أُخْرِجُوا لَا يَخْرُجُونَ مَعَهُمْ وَلَئِن قُوتِلُوا لَا يَنصُرُونَهُمْ وَلَئِن نَّصَرُوهُمْ لَيُوَلُّنَّ الْأَدْبَارَ ثُمَّ لَا يُنصَرُونَ
অর্থ: যদি তারা বহিষ্কৃত হয়, তবে মুনাফিকরা তাদের সঙ্গে দেশত্যাগ করবে না আর যদি তারা আক্রান্ত হয়, তবে তারা তাদেরকে সাহায্য করবে না। যদি তাদেরকে সাহায্য করে, তবে অবশ্যই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পলায়ন করবে। এরপর কাফেররা কোনো সাহায্য পাবে না।

(১৩)
لَأَنتُمْ أَشَدُّ رَهْبَةً فِي صُدُورِهِم مِّنَ اللَّهِ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ
অর্থ: নিশ্চয় তোমরা তাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা অপেক্ষা অধিকতর ভয়াবহ। এটা এ কারণে যে, তারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়।

(১৪)
لَا يُقَاتِلُونَكُمْ جَمِيعًا إِلَّا فِي قُرًى مُّحَصَّنَةٍ أَوْ مِن وَرَاء جُدُرٍ بَأْسُهُمْ بَيْنَهُمْ شَدِيدٌ تَحْسَبُهُمْ جَمِيعًا وَقُلُوبُهُمْ شَتَّى ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْقِلُونَ
অর্থ: তারা সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবে না। তারা যুদ্ধ করবে কেবল সুরক্ষিত জনপদে অথবা দুর্গ প্রাচীরের আড়াল থেকে। তাদের পারস্পরিক যুদ্ধই প্রচণ্ড হয়ে থাকে। আপনি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করবেন; কিন্তু তাদের অন্তর শতধাবিচ্ছিন্ন। এটা এ কারণে যে, তারা এক কাণ্ডজ্ঞানহীণ সম্প্রদায়।

(১৫)
كَمَثَلِ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ قَرِيبًا ذَاقُوا وَبَالَ أَمْرِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
অর্থ: তারা সেই লোকদের মতো, যারা তাদের নিকট অতীতে নিজেদের কর্মের শাস্তিভোগ করেছে। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

(১৬)
كَمَثَلِ الشَّيْطَانِ إِذْ قَالَ لِلْإِنسَانِ اكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ
অর্থ: তারা শয়তানের মতো, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অতঃপর যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান বলে: তোমার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্বপালনকর্তা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করি।

(১৭)
فَكَانَ عَاقِبَتَهُمَا أَنَّهُمَا فِي النَّارِ خَالِدَيْنِ فِيهَا وَذَلِكَ جَزَاء الظَّالِمِينَ
অর্থ: অতঃপর উভয়ের পরিণতি হবে এই যে, তারা জাহান্নামে যাবে এবং চিরকাল তথায় বসবাস করবে। এটাই জালেমদের শাস্তি।

(১৮)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
অর্থ: মুমিনরা! তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে খবর রাখেন।

(১৯)
وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ نَسُوا اللَّهَ فَأَنسَاهُمْ أَنفُسَهُمْ أُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
অর্থ: তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা আল্লাহ তায়ালাকে ভুলে গেছে। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে আত্ন বিস্মৃত করে দিয়েছেন। তারাই অবাধ্য।

(২০)
لَا يَسْتَوِي أَصْحَابُ النَّارِ وَأَصْحَابُ الْجَنَّةِ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمُ الْفَائِزُونَ
অর্থ: জাহান্নামের অধিবাসী এবং জান্নাতের অধিবাসী সমান হতে পারে না। যারা জান্নাতের অধিবাসী, তারাই সফলকাম।

(২১)
لَوْ أَنزَلْنَا هَذَا الْقُرْآنَ عَلَى جَبَلٍ لَّرَأَيْتَهُ خَاشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنْ خَشْيَةِ اللَّهِ وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
অর্থ: যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের ওপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তায়ালার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।

(২২)
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
অর্থ: তিনিই আল্লাহ তায়ালা, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।

(২৩)
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
অর্থ: তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত; যারা তাঁর শরিক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র ও মহান।

(২৪)
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
অর্থ: তিনিই আল্লাহ তায়ালা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।