• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২০  

পবিত্র কোরআনুল কারিমে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং যে কেউ সীমালঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করব।’ (সূরা: নিসা, আয়াত: ২৯-৩০)।

ইসলামে আত্মহত্যা নিষিদ্ধ। ইসলামি আইনে এটিকে হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর পরিণতি হিসেবে বলা হয়েছে যে পরকালে আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির আত্মহত্যা করার পদ্ধতি অনুযায়ী তার যন্ত্রণাকে অব্যাহত রাখা হবে। 

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ পাহাড় থেকে পড়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনে চিরস্থায়ীভাবে পাহাড় থেকে পড়ার অনুরূপ শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করবে, সে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের আগুনে বিষপানের আজাব ভোগ করতে থাকবে। আর যে কেউ কোনো ধারালো কিছু দিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের আগুনে তা দ্বারা শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। (বুখারি, হাদিস: ৫৭৭৮)।

এমনকি রাসূল (সা.) উম্মতের প্রতি অধিক দয়ালু হওয়া সত্ত্বেও নিজে কখনো কোনো আত্মহত্যাকারীর জানাজায় শরিক হতেন না। তাই জীবনে যতই ঝড় আসুক, তা মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে কাটিয়ে উঠতে হবে। আত্মহত্যার মতো ঘৃণ্য পথ বেছে নেয়া যাবে না। যারা আল্লাহর ওপর আস্থা রাখে না তারাই এ ধরনের পথ বেছে নিতে পারে। মুমিন তো সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে।

মহান আল্লাহ নিজেই যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁকে ডাকার আদেশ করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি তাঁর বান্দার ডাকে সাড়া দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর যখন আমার বান্দারা তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, (তাদের বলুন) আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায়, তারা সঠিক পথে চলবে। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৬)।

আল্লাহ যখন সর্বদা মুমিনের পাশেই থাকেন, তাই মুমিন কখনো কোনো পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে না। সুখ-দুঃখ আমাদের জীবনের সঙ্গী। রাতের পরে যেমন দিন আসে, দুঃখের পরেও সুখ আসে। বিপদে ধৈর্য ধারণ না করলে সেই সুখের দেখা মিলবে কী করে?

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৫৩)।

তাই আসুন, আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করি, বিপদে তাদের মহান আল্লাহর বাণীগুলো স্মরণ করিয়ে দিই। তাহলেই সমাজ থেকে এই মারাত্মক ব্যাধি দূর হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ!