• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পড়ি বিসমিল্লাহ পড়ি আলহামদুলিল্লাহ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮  

যে কোনো কাজ বিসমিল্লাহ বলে আমরা শুরু করে থাকি এ শিক্ষাই আমাদের দেয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআন পাঠের শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলেই পাঠ করতে হয় এবং কোরআনে তা-ই বর্ণিত।

যে কোনো দোয়া আল্লাহর প্রশংসামূলক বাক্যের পর নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরূদ পাঠ করে আবেদন নিবেদন পেশ করতে হয়। বিষয়টি সবারই জানা।

কিন্তু উত্তরার একটি মসজিদের একজন খতিবকে দেখা গেল নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরূদ পাঠ করে বাংলা খুতবা দিচ্ছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন দরূদ পাঠের পর আমি তো ‘আল্লাহর’ নাম বলেছি।

প্রশ্নের উত্তর কি দিলেন তিনিই ভালো জানেন। আমরা তাদের কাছ থেকেই জেনেছি মানবজাতির আদি পিতা আদম (আ.) সর্বপ্রথম যে শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন তা ছিল ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে পবিত্র কোরআন পঠের শুরুটা বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম বলে পাঠ করতে হয়। খাতামুন্নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর ওহি নাজিলের প্রথম বাক্যটি ছিল ‘পড় তোমার প্রভুর নামে’ (সূরা আলাক আয়াত-১)।

তিনি সর্বপ্রথম যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা ছিল তৌহিদের বাণী লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তারপর বলেছেন আমাকে স্বাক্ষ্য দাও আমি আল্লাহর রাসূল। আমরা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরূদ ও সালাম অসংখ্যবার পাঠ করব এতে আমাদের ওপর আল্লাহপাকের রহমত বর্ষিত হবে এবং আমাদের পাপও আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা এর উসিলায় ক্ষমাও করতে পারেন সন্দেহ নেই। কিন্তু আল্লাহর প্রশংসা করার পর দরূদ ও সালাম পেশের নিয়ম সুন্নতসম্মত বলে আমরা জানি।

খোদ মসজিদুল হারাম এবং মসজিদ-ই-নববীতে খুতবা দেয়া হচ্ছে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রশংসামূলক বাক্যগুলো পাঠের পর নবীর ওপর দরূদ ও সালাম পেশের মাধ্যমে।

যা আমরা টিভির মাধ্যমে সরাসরি দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশের সব মসজিদেও তাই হচ্ছে। উত্তরার এ মসজিদ ছাড়া অন্য কোনো মসজিদে এ রেওয়াজ চালু আছে কিনা আমার জানা নেই।

এই ইমাম এবং এই শ্রেণীর আরও কোনো ইমাম থাকলে তার বা তাদের কাছ থেকে আমরা কি আকিদা শিখব তা আমাদের ভেবে দেখা দরকার।

সালাত : আমাদের প্রচলিত নামাজের কাতার ঠিক করা প্রসঙ্গে বলছি। সালাত বা নামাজের একামাত দেয়ার পর আল্লাহর ঘর মসজিদুল হারাম এবং মসজিদ-ই-নববীর সম্মানিত ইমামরা স্ব স্ব কণ্ঠে কাতার সোজা এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানোর বাক্যগুলো উচ্চারণ করেন।

ডানে-বামে তাকিয়ে দেখেন, কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ ইমামদের দেখা যায় মুয়াজ্জিনদের দিয়ে এ বাক্যগুলো এলান করিয়ে ইকামতের বাক্য পাঠ করিয়ে থাকেন। এর কারণ আমাদের অজানা। কেন তারা তাদের মুখে এই বাক্যগুলো পাঠ করেন না জানতে ইচ্ছা করে।

রুকু, সেজদাহ এবং নীরব সালাতের তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে প্রথমেই বলতে হচ্ছে, ‘আল্লাহর’ দেয়া সালাত কী করে হয়ে গেল নামাজ। কোরআন পাকে ৮২ বার সালাত শব্দটি আছে।

নামাজ বাংলা শব্দ নয় এরপরও আমাদের শিখানো হয়েছে। কাজেই সালাত যদি শিখানো হতো তাহলে আমরা তাই শিখতাম এবং আমাদের দেশে প্রচলিত হয়ে যেত।

যেমন : হজকে হজ, জাকাতকে জাকাত, ফরজকে ফরজ বলে থাকি। কোরআনের একটি হরফ পাঠ করলে দশটি নেকি পাওয়া যায়। নামাজ শব্দ উচ্চারণ করলে একটি নেকিও পাওয়া যাবে না। কাজেই ধর্মপ্রাণ মুসলমন যারা ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করেন তারা যখন সালাতে যাওয়ার সময় ঘরে বাইরে লোকের প্রশ্নের উত্তরে অথবা ঘরের লোকদের বলে থাকেন নামাজে যাচ্ছি, নামাজে যাচ্ছি তখন যদি সালাতে যাচ্ছি বলতেন তাহলে দশটি নেকি লাভ করতে পারতেন।

এ নেকি লাভ থেকে বঞ্চিত করার দায়ভার কে নেবেন, বলতে পারেন কি? বা বলা যাবে না কারণ শিষ্য-সাগরেদদের অবস্থাও একই।