• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

গেইলকে ছাপিয়ে ব্রিজটাউনে রয়-রুটের `বস`গিরি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

জ্যাসন রয় ও জো রুটের দুর্দান্ত দুই সেঞ্চুরিতে ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ৩৬১ রানের লক্ষ্য ৮ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। ওয়ানডেতে এটি তাদের সর্বোচ্চ রান-তাড়া করে জয়। এভাবে ম্লান হয়ে গেছে তাই ক্রিস গেইলের ওয়ানডে ক্রিকেটের ফেরার দিনে গেইল-সুলভ এক সেঞ্চুরি। ‘ইউনিভার্স বস’-কে যেন বাঁকা হাসি দিলেন ইংল্যান্ডের সাদা বলের নতুন কান্ডারিরা, র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী ওয়ানডে ক্রিকেটের এখনকার ‘বস’রা। টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজের শুরুটাও দারুণ হলো ইংল্যান্ডের। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ এদিন মেরেছিল রেকর্ড ২৩টি ছয়, যা ছিল বিশ্ব রেকর্ড। তবে আলোর নিচের আঁধারের মতো করে ছিল ১৪৩টি ডট বল। বিপরীতে ইংল্যান্ড দিয়েছে ৯৮টি ডট, মাত্র ৬টি ছয়ের সঙ্গে ৩৭টি ছয় রানতাড়াকে বানিয়েছে সহজ। গেইলের ক্যাচ ফেলেছিলেন জ্যাসন রয়, ৯ রানের মাথায়। গেইল পরে করেছিলেন ১৩৫ রান। রয় নিজে ১২৩ রান করে যেন পুষিয়ে দিলেন সেটাই, আর অন্তত ৫টি ক্যাচ ফেলার মাশুল ভালভাবেই গুণতে হলো উইন্ডিজকে। 

রানতাড়ায় শুরু থেকেই রয় ও জনি বেইরস্টোর ইঙ্গিত ছিল পরিষ্কার। ১১ ওভারের আগেই ওপেনিং জুটিতে উঠেছে ৯১ রান। হোল্ডারের শর্ট বলে বেইরস্টো ফিরেছেন, তবে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা শীঘ্রই পায়নি উইন্ডিজ। অ্যাশলি নার্সকে সোজা শটে ছয় মেরে রয় পূর্ণ করেছেন সেঞ্চুরি, মাত্র ৬৫ বলে। দুজনের জুটি পেরিয়েছে ১০০, ২৬ ওভারেই ২০০ ছুঁয়েছে ইংল্যান্ড। সেঞ্চুরির পর কিছুটা যেন মনযোগে ঘাটতি ছিল রয়ের, শেষ পর্যন্ত বিশুর অফস্টাম্পের বাইরের বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়ার আগে অবশ্য গড়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ভিত- ৮৫ বলে ১২৩ রান করে। 

আর আগে থেকেই ইংল্যান্ডের ইনিংস ধরে রেখেছিলেন জো রুট। অধিনায়ক ওইন মরগানের সঙ্গে তিনি গড়েছেন ১১৬ রানের জুটি। মরগান ফিফটি ছুঁয়েছেন ৩৭ বলে, এরপর ওশ্যান থমাসের বলে আউটও হয়েছেন। আর জয় থেকে ১ রান দূরে থাকতে রুট আউট হয়েছেন হোল্ডারের ফুলটসে। তার আগেই ছুঁয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি, চতুর্থ দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসেবে এদিন ৫০০০ রানের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন তিনি। স্টোকস ক্রিজে ছিলেন, চার মেরে ইংল্যান্ডের রেকর্ড জয়টা নিশ্চিত করেছেন জস বাটলার। 

এর আগে গেইল তুলেছেন তার হঠাৎ-ঝড়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৫২, গেইলের রান মাত্র ৯! সেটিও আবার ৩১ বলে! বেশ কিছুদিন ধরেই এমন স্লথ শুরু গেইলের জন্য নিয়মিত হয়ে গেছে। কিন্তু কদিনই বা সেটা পুষিয়ে দিতে পেরেছেন পরে?

আজ যে পারবেন, সেই আভাস প্রথম দিলেন ১৫তম ওভারে এসে, মঈন আলীর বলে ছয় মেরে। তার আগে ২৮ বলে ৩০ রান করে ফিরে গেছেন ক্যাম্পবেল, শুরু হয়ে গেছে শেই-হোপ শো। গেইল তখন অলস দর্শক, পাক্কা ৫০ বল খেলে তুলেছেন মাত্র ২১ রান। এরপর মঈনকে আরও কয়েকটি ছয় মারলেন, তাও ফিফটি করতে খেলতে হলো ৭৬ বল। ওদিকে ৪৮ বলে ফিফটি পেয়ে গেছেন হোপ।

 

এরপর প্লাঙ্কেটকে এক ওভারে দুই বার ছয় মারলেন, ততক্ষণে গোটা তিনেক বল বদলানো হয়ে গেছে। স্টোকসের বলে ৬৪ রান করে আউট হলেন হোপ, গেইল পরর মার্ক উডকে মারলেন আরও দু ছয়। চতুর্থ বারের মতো বল বদলাতে হলো সেবারই। প্লাঙ্কেটকে আবার দুই ছয় মারলেন, দেখতে দেখতে ৯৩ বলে হয়ে গেল ৯৩। ২৪তম সেঞ্চুরি পেলেন ঠিক ১০০ বলে, পরের ফিফটির জন্য খেলতে হয়েছে মাত্র ২৪ বল। ২০১৫ সালের পর দেশের হয়ে মাত্র দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, হাঁটু গেড়ে উদযাপনও হলো সেরকম স্পেশাল। এর মধ্যে আফ্রিদিকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ছয়ও হয়ে গেছে।

ওদিকে হেটমেয়ার ১৫ বলে ২০ রান করে আউট হয়েছেন, ওয়ানডে অভিষেকে কোনো রান না করে ফিরে গেছেন নিকোলাস পুরান। কিন্তু গেইল নির্লিপ্ত ঋষির মতো তাঁর কাজ করছেনই। ড্যারেন ব্রাভো এসে প্রথম বলেই মারলেন ছয়, পরে মঈন আলীর ওভার থেকে গেইলসহ নিলেন ২৭ রান। ৩০ বলে ৪০ রান করে আউট ব্রাভো, তবে গেইল ছিলেন ৪৭ ওভার পর্যন্ত। তার আগে ১২টি ছয় মেরেছেন, ওয়ানডেতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অন্তত তিনটি ইনিংসে দশটির বেশি ছয় মারলেন।

তবে ব্রিজটাউনে যথেষ্ট হলো না সেসব।