• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতির চাকা গার্মেন্টস

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২০  

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। গত কয়েক বছরে কারখানার সংস্কার ইস্যুতে বড় ধরণের অগ্রগতি হয়েছে। ফলে বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীতে পোশাক রপ্তানির বড় বাজার ইউরোপ ও আমেরিকা ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত করে দেয়। করোনায় বাংলাদেশের ৩২০ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়। আর এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত।

তবে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে এবং পোশাক খাতের মূল প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ও চীন ইতোমধ্যে কারখানা খুলে দেওয়ায় ক্রেতাদের ধরে রাখতে দেশের কারখানাগুলো পর্যায়ক্রমে  খুলতে হয়েছে। এক্ষেত্রে সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরন করা হচ্ছে।

 সুইডেন জানিয়েছে বাংলাদেশের পোশাক খাতের কোনো অর্ডার তারা  বাতিল করবে না। সকল প্রকার স্বাস্থ্য বিধি মেনে রফতানিমূখী পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। এর আগে যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা যাতে গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশে ক্রয়াদেশ বাতিল না করেন সে বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।  

এদিকে  বাতিল হওয়া কার্যাদেশ ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কুটনীতিক,   ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ চলছে। এছাড়া ক্রেতাদের অর্থ সহায়তা দিয়ে ক্রয়াদেশ ঠিক রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর পোশাক শিল্পের ক্ষতি কমানোর পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংসদ সদস্য রুশনারা আলী। 

দেশের তৈরি পোশাক খাতের ৩৭০ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতের বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএফসি বিশ্বের ৪০টি উন্নয়ন অংশীদারি প্রতিষ্ঠান, পোশাক ব্র্যান্ড, কারখানা প্রতিনিধি ও আর্থিক মধ্যস্থতাকারীদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছে কয়েকদিন আগে। 

পোশাক শিল্প মালিকদের প্রত্যাশা, শিগগিরই করোনাভাইরাস সংকট কেটে যাবে। তখন তাদের তৈরি পণ্যের চাহিদা আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে। ভিয়েতনাম কারখানা খুলে দিয়েছে এবং  অন্য প্রতিযোগীরা খুলে দিলে তারা ক্রয়াদেশ ধরতে সমস্যায় পড়বেন। পূর্বের  অসমাপ্ত কার্যাদেশ শেষ  করা ও নতুন কাজ ধরার জন্য এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ঝুঁকি মাথায় নিয়েই  স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খুলে দেয়া জরুরী।


 স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে গার্মেন্ট কারখানার সব মালিক একমত হয়েছেন। ধাপে ধাপে তারা দেশের সব কারখানা চালু করবেন। যদিও শুরুতে সীমিত পরিসরে উৎপাদন চলছে। পরবর্তীতে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে কারখানাগুলো। এদিকে পোশাক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে উদ্যোক্তারা তাদের মতামতে  জানিয়েছেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। বিজিএমই’র গাইড লাইন কঠোরভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। 


 দুটো দিক লক্ষণীয় , একটি হলো এটা ঠিক যে ক্রেতারা একের পর এক ব্যবসায় লোকসান গুনতে শুরু করেছিল। আমাদের এখানে কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছে হঠাৎ করেই। কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য অর্থ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটাও ঠিক অর্থনীতি সচল করতে একটা জায়গা থেকে শুরু তো করতেই হবে। পশ্চিমারা যেহেতু সচল হতে শুরু করেছে ফলে আমাদেরও ধীরে ধীরে সচল হতে হবে। আবার মহামারীর পরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তাই  অর্থনীতির চাকা ঘোরানো শুরু করতেই হবে।