• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

উচ্ছেদের পরই রাস্তা বন্ধ করে রাতের আঁধারে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২০  

উচ্ছেদের পর পরই যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে (ঘর নির্মাণ) স্থাপনার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ভূমি দস্যুর বিরুদ্ধে। রাতের আঁধারে রাস্তার ওপর স্থাপনা নির্মাণ করায় সাংবাদিকের পরিবারসহ কয়েক শতাধিক পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পরেছে। গত ৮-১০ দিন ধরেও তারা রাস্তা দিয়ে বের হতে পারছে না।

 বিদ্যালয়ের জমি দখল মুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গোড়াই মমিননগর সৈয়দপুর রাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে।


বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আঞ্চলিক রোড গোড়াই-সখীপুর–ঢাকা রোড সংলগ্ন ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর মৌজার ২৪৩৩ নং দাগের ৯০৭ খতিয়ানের মধ্যে ৭০ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে। এই জমিতে বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত সরকারি কর পরিশোধ করা হয়। সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ খানের ছেলে প্রভাবশালী মো. আজম খান (৫৫) এবং মো. আনোয়ার মাস্টারসহ (৫৩) কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে রাতারাতি পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের পাশের রাতের আঁধারে রাস্তা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্বাণ করছে। আজম খানকে বারবার নিষেধ করার সত্ত্বেও রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নেওয়ায় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ নভেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেন। এ সময় সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ভূমিদস্যু আজম খান ও তার সহযোগীরা অভিযোগ করেন।

 অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়ার পরই গত ১৮ নভেম্বর রাতের আধারে আজম খান তার বাহিনী নিয়ে রাতের আধারে আবারও সরকারি রাস্তা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী।

 গত ৮-১০ দিন ধরে এক সাংবাদিক পরিবার এবং এলাকার কয়েক শতাধিক পরিবার রাস্তা দিয়ে বের হতে পারছে না।


ভুক্তভোগীদের মধ্যে সাংবাদিক মোশারফ হোসেন, ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ ও রফিকুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ভূমিদস্যু আজম খানের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাদের নানা ভাবে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছেন।

 সরকারি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পরেছেন পুরো গ্রামবাসী। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।


এ ব্যাপারে মো. আজম খান ও মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, সৈয়দপুর মৌজায় ২৪৩৫ নং ও ২৪৪৮ নং দাগের মধ্যে মো. মজিদ খান, মোকছেদ আলী, কেশব সরকার ও গয়ানাথ সরকার জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করে দিয়ে সৈয়দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিদ্যালয়ের পাশে তাদের জমি রয়েছে। তারা দাবি করেন, আমরা বিদ্যালয়ের কোন জমি জবরদখল করিনি।

আজম খান বলেন, আমার নিজের রাস্তা ভাড়া দিয়েছিলাম এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আমি রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়দেব সরকার বলেন, এটা বিদ্যালয়ের জমি। এলাকার কিছু লোকজন বিভিন্নভাবে কাগজ তৈরি করে বিদ্যালয়ের জমি জবরদখলের চেষ্টা কওে রেখেছেন। বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধার ও রাস্তা দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আবার রাতের আধাঁরে রাস্তা দখল করে অবৈধ স্থাপনা হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে রাস্তা দখল মুক্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।