• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

এক টাকায় ঢাকায় আসবে রাজশাহীর আম

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২১  

এবারও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাঁচটি ওয়াগন (মালগাড়ি) চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে ঢাকা রুটে চালু হতে যাচ্ছে একটি ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। রাজশাহী থেকে মাত্র এক টাকা ১৭ পয়সায় এ আম রাজধানী ঢাকায় পাঠাতে পারবেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

প্রতিটি ওয়াগনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৪৩ মেট্রিক টন। তবে আম বহন করা হবে ৩০ মেট্রিক টন। কাঁচা বা আধাপাকা আম যেন অতিরিক্ত গরম ও চাপে নষ্ট না হয়ে যায় সে কারণে ওয়াগনে ধারণক্ষমতার কিছু কম আম বহন করা হবে। ট্রেনটি চালুর জন্য এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

সব কিছু ঠিক থাকলে গত বছরের ধারাবাহিকতায় আগামী ২৫ মে বিকেল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ রুটে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী) মো. নাসির উদ্দিন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে আমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য পার্সেল পরিবহনের জন্য এবারও বিশেষ এ ট্রেনটি চালু করা হচ্ছে। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যখন ঢাকা যাবে তখন ট্রেনটির নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-২’। আর ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফেরার পথে নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-১’। ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতিদিনই চলাচল করবে।

ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি প্রতিদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকেল ৪টায় ছেড়ে  আসবে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাবে ৫টা ২০ মিনিটে। পণ্য তোলার জন্য ট্রেনটি এখানে ৩০ মিনিট বিরতি দেবে। বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি আবারও ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।

ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২টায়। ঢাকা থেকে ট্রেনটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে। রাজশাহী পৌঁছাবে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে। সেখানে ২০ মিনিট থেমে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পৌঁছাবে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে। এক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে তরজাতা ও সতেজ আম এবং শাক-সবজিসহ কৃষিজাত পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে।

ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটিতে মোট পাঁচটি ওয়াগন (মালগাড়ি) থাকবে। এতে আমের পাশাপাশি সব প্রকার শাক-সবজি, ফলমূল, ডিমসহ কৃষিজাত পণ্য, আসবাবপত্র এবং রেলওয়ের আইনে পার্সেল হিসেবে বহনযোগ্য সব প্রকার মালামাল বহন করা হবে। ট্রেনটিতে ‘কাঁচা বা আধাপাকা আম যেন গরম ও অতিরিক্ত চাপে নষ্ট না হয়ে যায় সে কারণে ধারণক্ষমতার কিছু কম পণ্য বহন করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে ট্রেনটি আমনুরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ, আড়ানি ও আব্দুলপুর বাইপাস স্টেশনে থামবে। এসব স্থানে আমসহ পার্সেল পণ্য ট্রেনে তোলা হবে।

এরপর যমুনার ওপারে থাকা টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গী, ঢাকা বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও এবং কমলাপুর স্টেশনে থামবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন।  

ফেরার পথে ট্রেনটি রাজধানীর ঢাকার তেজগাঁও, টঙ্গী, টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জ, চাটমোহর এবং রাজশাহী স্টেশনে থামবে। তবে যাত্রাপথে কোথাও সাধারণ যাত্রী এ ট্রেনে তোলা হবে না।

ট্রেনটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগবে এক টাকা ৩০ পয়সা। আর রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পরিবহন করতে খরচ পড়বে ১ টাকা ১৭ পয়সা। ক্যারেট প্রতি লেবার খরচ ধরা হয়েছে ১০ টাকা। এটি নির্ধারিত। কোনো শ্রমিক বেশি নিলে বা কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার রেলওয়ের প্রত্যেকটি লেবারকে নির্ধারিত লাল রঙয়ের পোশাকও দেওয়া হয়েছে। নিয়মানুযায়ী ট্রেন ছাড়ার আগে যে কেউ তাদের মালামাল বুকিং দিতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের এ দুর্যোগকালে চাষিদের পাশে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী থেকে এবারও ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু করা হচ্ছে।  

এর আগে গত বছর ৫ জুন প্রথমবারের মতো এ রুটে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। গত বছরের জুন ও জুলাইয়ে মোট ৮৫৭ মেট্রিক টন আম ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে পাঠানো হয়েছিল। এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আয় হয় নয় লাখ ২৯ হাজার ৮৬৯ টাকা। তবে এবার ঢাকা ছাড়াও খুলনা ও চট্টগ্রামের দিকে চাহিদা অনুযায়ী আম পাঠানো হবে। সেক্ষেত্রে ডেডিকেটেড ট্রেনে এসব পণ্য পাঠানো হবে। পরে এ বিষয়গুলো আলোচনা সাপক্ষে চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কর্মকর্তা নাসির।