• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনায় ডায়াবেটিস রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বেশি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২০  

বিশ্বব্যাপী নীরব ঘাতক ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই ঘাতক ব্যাধির শিকার হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের নারী-পুরুষ। শহর থেকে গ্রাম- সর্বত্রই প্রায় সমান হারে ডায়াবেটিস ছড়িয়ে পড়ছে।

দেশে বর্তমানে প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের হাসপাতালে রোগীদের ওপর জপির চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে।

এদিকে চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা ডায়াবেটিক রোগীর জন্য আরো ঝুঁকির সৃষ্টি করেছে। গবেষণায় দেখা যায়, করোনায় আক্রান্তের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত ছিলেন। একইসঙ্গে করোনার সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পর ৭৫ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগী কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। 

আবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকে নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া প্রতি তিনজনের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাডাস সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম থাকে। এ কারণে যে কোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার সক্ষমতা শরীরের থাকে না। সুতরাং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। 

তিনি আরো বলেন, অনেকের ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, হৃদরোগ, হাইপারটেনশনসহ কোমরবিডিটি (বিভিন্ন রোগ) রয়েছে। এসব ব্যক্তির বয়স ষাটোর্ধ্ব হলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত কম থাকে। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে করোনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মৃত্যুহার বেশি। বাংলাদেশে করোনায় মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশির বয়স ষাটের ওপরে। 

করোনা পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিক রোগীর করণীয় সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার নির্দেশিত কেন্দ্রগুলোতে নমুনা পরীক্ষা এবং পরবর্তী চিকিৎসার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।

তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনে ইনসুলিন নিতে হবে। খালি পেটে শর্করার মাত্রা ৬ মিলিমোলের কম আর খাবার দুই ঘণ্টা পরে ৮ মিলিমোলের কম মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে থাকা জরুরি। এই সময়ে পার্ক কিংবা বাইরে হাঁটার প্রয়োজন নেই। শর্করা নিয়ন্ত্রণে বাড়িতে, বারান্দা কিংবা করিডোরে হাঁটাচলার পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করতে হবে।