• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারি ২০১৯  

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার, মির্জাপুর ও  ধনবাড়ি উপজেলায় এক সময় মানুষের বাসস্থান হিসাবে মাটির তৈরি টালি ঘরের প্রচলন ছিল সামর্থ্যবান কিংবা বিত্তহীন উভয়ের মাটির ঘর ছিল বৈঠক ঘর হিসেবে মধ্যবিত্তরা ব্যবহার করতো

দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল, ফাজিলহাট, পাথরাইল ইউনিয়নে ও ধনবাড়ি  বানিয়াজান, যদুনাথপুর, পাইস্কা, বীরতারা, ধোপাখালী, মুশুদ্দি ও বলিভদ্রসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই চোখে পড়তো মাটির তৈরী ঘর কিন্তু এখন আর এগুলো চোখে পড়ে না

সময়ের তালে ও মানুষের আর্থিক সামর্থ্য আর রুচির পরিবর্তনের ফলে গ্রাম থেকে হারিয়ে গেছে এ মাটির ঘর

বিশ বছর আগেও টাঙ্গাইলের গ্রামে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ঘর ছিল মাটির বসবাসের জন্য মাটির ঘর ব্যবহার হতো

মাটির ঘরে একটি বিশেষ বিশেষত্ব আছে আর তা  হচ্ছে আরামদায়ক হিসেবে শীতের উষ্ণতায় মাটির ঘরের জুড়ি নেই গায়ে গরম কাপড়ের দরকার হবে না এসব ঘরে রাত কাটালে

মজার ব্যপার হচ্ছে, শীতকালে যেমন গরম অনুভব হয় তদ্রুপ গ্রীষ্মকালেও ঠাণ্ডা প্রদানে মাটির ঘরের আছে বিশেষ বিশেষত্ব খা খা রোদের উত্তাপেও মাটির ঘর দিবে শীতল অনুভূতি ও প্রাণ জুড়ানো ঘুম তাপমাত্রা ধরে রাখে বিধায় এটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের মতোই কাজ করে 

মাটিই প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয় এই ঘর তৈরী করার জন্য প্রয়োজন এঁটেল বা দো-আঁশ মাটি ঘর তৈরী করার জন্য তেমন খরচ হতো না

মাটি ঝুরঝুরি করে চেলে পানি মিশিয়ে থকথকে কাঁদা করে নেয়া হয়  তারপর সেই কাঁদামাটি দিয়ে তৈরি করা হতো মাটির ঘর ব্যবহার করা হতো বাঁশের চাটাই , কঞ্চি ও ধইঞ্চা

অল্প-অল্প করে মাটি বসিয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট উচু করে এবং সেই কাঁদায় ২৫/৩৫ ইঞ্চি চওড়া করে দেয়াল তৈরী করা হতো 

এ দেয়াল তৈরি করতে বেশ সময় লাগতো। কারণ এক সাথে বেশি উঁচু করে তৈরি  করা যেতো না প্রতিবার এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত উঁচু করা যেতো কয়েকদিন পর শুকিয়ে গেলে আবার তার উপর একই উচ্চতার দেয়াল তৈরী করা হতো এভাবে দেয়াল তৈরী করা হলে কিছু দিন রোদে শুকানো হতো তারপর এই দেয়ালের উপর বাঁশের চাল তৈরী করে খড় বা টিন দিয়ে ছাউনি দেয়া হতো একটি মাটির ঘর তৈরী করতে ২ থেকে ৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগতো

বণ্যা, ভূমিকম্প বা প্রবল ঝড় না হলে এসব ঘর শত বছর পর্যন্ত টিকে থাকে যারা এলাকার বিত্তশালী তাদের বাড়ীতে থাকতো দু’তালা আর মধ্যবিত্তদের থাকতো একতালা ছোট আকারের ঘর