• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় গৃহবধূর ছেলে-ভাতিজাকে বেঁধে নির্যাতন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২০  

ঠাকুরগাঁওয়ে এক গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন ইউপি সদস্য। কিন্তু তার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি গৃহবধূ। এর জেদ মেটাতে ইউপি সদস্য তার সহযোগীদের নিয়ে ওই গৃহবধূর কিশোর ছেলে ও ভাতিজাকে চুরির অপবাদ দিয়ে হাত পা বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার দুই কিশোর হলো-সুমন ও তার মামাতো ভাই কামরুল।

গত ২২ মে জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সেনগাঁও ইউপির দেওধা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এরপর পরিবারটিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সুযোগ পেয়ে গত শুক্রবার পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন নির্যাতনের শিকার সুমনের মা ও কামরুলের ফুফু সরিফা খাতুন। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হয়।

পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মামলায় সেনগাঁও ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম, মোতালেব আলীসহ আরো সাত জনকে আসামি করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে মোতালেব আলী তার প্রতিবেশী গৃহবধূ সরিফা খাতুনকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে সাড়া না দেয়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে গত ২২ মে স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম, মোতালেব আলীসহ আরো সাতজন মিলে সরিফা খাতুনের ছেলে সুমন ও তার ভাতিজা কামরুল ইসলামকে আটক করে।

এরপর তারা একটি সালিস বৈঠকের আয়োজন করে। সালিস বৈঠকে হাত-পা বেঁধে ওই দুই কিশোরকে ব্যাপক মারধর করে ইউপি সদস্যসহ তার সহযোগীরা। সেই ঘটনা মোবাইলেও ধারণ করে রাখে তারা। পরে ভিডিওটি গৃহবধূ সরিফা খাতুনকে দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

চাঁদা না পেয়ে ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা গৃহবধূকেও মারধর করে ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। সেসময় তারা গৃহবধূর বাড়ি থেকে একটি গরু নিয়ে যায়। এরপর তারা ওই পরিবারটিকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য সদস্য জহিরুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একপর্যায়ে তিনি ফোনটি বন্ধ করে রাখেন।

সেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। এটি খুবই নিন্দনীয় কাজ। এর বিচার হওয়া দরকার। তবে আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। আমি নিজ উদ্যোগে ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামকে কয়েকবার ফোন দিয়েছি। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। লোক পাঠিয়ে তাকে যোগাযোগ করতে বলেছি, এরপরও তিনি যোগাযোগ করেননি বা ফোন ব্যাক করেননি।

নির্যাতিত পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কি না জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আগেই একটি মামলা হয়েছে। সে সেক্ষেত্রে পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগের আর কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনি। 

এদিকে মামলা দায়েরের সাত দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।