• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

‘ঘুষ দিলেই’ রাজস্বে ছাড় সাভারে!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২১  

জরিমানা মওকুফের প্রতিশ্রুতিতে একটি বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে সাভার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ দাবি সংক্রান্ত কথোপকথনের একটি ভিডিও রয়েছে  জাতীয় দৈনিক দেশ রূপান্তরের কাছে। এমন তথ্য দাবি করে খবর ছেপেছে দেশ রূপান্তর। 

সাভার অ্যাডভার্টাইজিং ফার্ম এর মালিক ভুক্তভোগী মতিউর রহমান অভিযোগ করেন, সরকারের সব নিয়ম মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করতে প্রতিষ্ঠানের নামে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন করা হয়। আমার জানা মতে, বছর শেষে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। প্রায় সাত মাস পর ফোনে প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন দাখিল করতে বলার পরদিন ভ্যাট কার্যালয়ে যাই। টানা দু’দিন টেবিলে টেবিলে ঘুরে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুর রহমানের কাছে যাই।

তিনি বলেন, সময়মতো রির্টান দাখিল না করা হলে গ্রাহককে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়। সে অনুযায়ী ৫ মাসে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে বলে জানতে পারি। এ ঘটনায় জরিমানা মওকুফের জন্য অনুরোধ করা হলে জরিমানার অর্ধেক ২৫ হাজার টাকা ঘুষ হিসাবে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের করার হুমকি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে তার সঙ্গে দেনদরবার করে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হই যার কথপোকথনের ভিডিও ফোনে ধারণ করা হয়েছে। টাকা জোগাড় করতে না পারায় তার সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করি নাই। কিন্তু সে দিনের পর থেকে আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুর রহমান প্রায়ই ফোন দিয়ে মামলা দায়েরের হুমকি দিয়ে আসছে। 

অভিযোগ অস্বীকার করে সাইদুর রহমান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের মালিক আমার কাছে আসার পর আমি তাকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে বলেছিলাম, কিন্তু তার কাছে কোনো অনৈতিক দাবি করা হয়নি’।

ঘুষ দাবির অডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কথপোকথনগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, সাভার ভ্যাট অফিসে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন অজুহাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেন কিছু অসাধু কর্মকর্তা। ভ্যাটের কাগজপত্র হালনাগাদ না থাকলে কোন টেন্ডারে অংশ নেয়া যায় না এমন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভ্যাট খুটিনাটি ভুলের জন্যও গ্রাহকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেন তারা।

কাপড় বিক্রেতা জুয়েল মোল্লা বলেন, শপিং মল, মুদি দোকান, মিষ্টি বিক্রেতা, সুপার মার্কেটসহ অনেক ব্যবসায়ীই ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা করে থাকে। এ জন্য ভ্যাটের হালনাগাদ কাগজপত্র খুব জরুরী। ব্যাংক লোনের কথা চিন্তা করেই ভ্যাট অফিসের কর্মকর্তাদের অনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা।

ঘুষ দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে, সাভার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার খায়রুল আলম বলেন, এমন কোন বিষয় আমার জানা নেই। তবে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করেন তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।