• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয় পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত মানিকগঞ্জের কৃষকেরা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২০  

অনুকূল আবহাওয়া আর উত্তম পরিচর্যায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয় ঢাকার প্রতিবেশী জেলা মানিকগঞ্জে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে মানিকগঞ্জের কৃষকেরা।

 জেলার সাতটি উপজেলার প্রতিটি উপজেলাতেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ হয় পেঁয়াজের।

তবে হরিরামপুর, শিবালয়, ঘিওর এবং সাটুরিয়া উপজেলায় পেঁয়াজের চাষাবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। ভালো বাজারদর পেতে আগাম পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব এলাকার কৃষকেরা। পরিবারের পুরুষ সদস্যের পাশাপাশি পেঁয়াজের জমিতে কাজ করে যাচ্ছে নারী ও শিশু সদস্যরাও।


জেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ হাজার ৯৫৪ হেক্টর। এরই মধ্যে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমিতে পেঁয়াজের চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ততা বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার নবগ্রাম এলাকার কৃষক লাভলু মিয়ার সাথে পেঁয়াজ চাষাবাদের বিষয়ে আলাপ হলে তিনি বলেন, দুই বিঘা (৫৪ শতাংশ) জমিতে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের চাষাবাদ করেছেন তিনি। জমি তৈরি, সার, কীটনাশক, বীজ ও কৃষকের পারিশ্রমিক দিয়ে এরই মধ্যে খরচ করেছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

ফলন পাওয়া পর্যন্ত আরো প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। অনুকূল পরিবেশে আর ভালো ফলন হলে ওই জমি থেকে প্রায় দুই লাখ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করা যাবে। তবে বাজারদর আশানুরূপের চেয়ে কমে গেলে মুনাফাও কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জেলার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা এলাকার কৃষক মোতালেব মিয়া বলেন, পেঁয়াজের জমিতে নিয়মিত যত্ন নিতে হয়। বিশেষ করে পানি ও সার জমিতে সময় মতো না দিতে পারলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় না। প্রায় তিন যুগ ধরে তিনি নিয়মিত পেঁয়াজ চাষ করেন। পেঁয়াজের বাজারদর নিয়ে প্রতি মৌসুমে কৃষকদের মাঝে হতাশা থাকলেও গত মৌসুমে পেঁয়াজের চড়া বাজারে খুশি কৃষক। তবে পেঁয়াজের দাম অতিরিক্ত কমে গেলে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে বলেও জানান তিনি।

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, গেলো মৌসুমে জেলায় পাঁচ হাজার ৩৪৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষাবাদ হয়েছিল। ভালো বাজারদরে পেঁয়াজ চাষিদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে গেলো বছরের চেয়ে ৬১১ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষাবাদ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুকূল আবহাওয়ায় আশানুরূপ ফলন এবং পেঁয়াজের স্বাভাবিক বাজারদর থাকলে কৃষকরা বেশ লাভবান হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের মাঠ কর্মীরা পেঁয়াজ চাষিদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।