• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ঢাবিতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

নারী শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর উদ্যোগে উদ্বোধন করা হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন। এতে মাত্র ১০ টাকায় সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। 

বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘ফ্রিডম স্যানিটারি ন্যাপকিন কর্ণার’ এর শুভ উদ্বোধন করেন।

ডাকসু ও সিনেট সদস্য তিলোত্তমা শিকদার ও ফরিদা পারভীনের সমন্বয়ে এবং এসিআইয়ের সহযোগিতায় এসব ‘ফ্রিডম স্যানিটারি ন্যাপকিন কর্ণার’ বসানো হচ্ছে। যা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন ও ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শিবলী  রুবাইয়াতুল ইসলাম।

 

 

এসিআই কনজিউমার ব্র্যান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ আলমগীর, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আরিফা পারভীন জামান মৌসুমী, ডাকসুর সদস্য ফরিদা পারভীন, তিলোত্তমা শিকদার-সহ সব নির্বাচিত প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাধারণ  শিক্ষার্থীবৃন্দ।

ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনের স্পটগুলো হলো-  ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), কলা ভবন ছাত্রী কমনরুম, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সাইন্স লাইব্রেরী, চারুকলা অনুষদ, রোকেয়া হল, বঙ্গমতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, শামসুননাহার হল এবং কবি সুফিয়া কামাল হল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিপু মনি বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে স্যানিটারি ন্যাপকিন চালু করা একটি অসাধারণ উদ্যোগ। সব অসাধারণ উদ্যোগগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়। নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশাল অগ্রগতি সাধিত হলো।

 

 

তিনি বলেন, একজন ১০ থেকে ৪৫ বছরের নারীর কর্শক্ষম সময়টিতে মাসে ৫-৭ টি দিন তিনি কিন্তু কর্মক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করতে পারেন না। ওইভাবে ধরতে গেলে তার জীবনে দিনের সংখ্যা অনেক কমে আসে। সেটি মাথায় রেখে এই যে তাকে স্বাধীনতা দেয়া, এক ধরনের মুক্তির ব্যবস্থা করা। এ কারণে এই সেবার নাম যে ‘ফ্রিডম হাইজিন কর্ণার’ খুবই উপযুক্ত।

এ ব্যাপারে ডাকসু সদস্য ফরিদা পারভীন ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আমরা ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম ছাত্রীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবস্থা করব। এরই পরিপেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের সুবিধার ভিত্তিতে নির্ধারিত ১০টি স্পটে এসিআই এবং ডাকসুর সহযোগিতায় উদ্বোধন হয়ে গেল সেই কাঙ্ক্ষিত ভেন্ডিং মেশিনের। 

তিনি আরো বলেন, ভেন্ডিং মেশিন বসানোর ফলে নারী শিক্ষার্থীদের অর্থব্যয় অনেকটা কমে আসবে এবং স্বাস্থ্য সতর্ক থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। 

অনুষ্ঠানে ডাকসুর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, এটির বাস্তবায়ন করা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিলো। শিক্ষার্থীদের মাঝে টেকসই, সুলভ ও ব্যবহার উপযোগী এই ব্যবস্থাপনাটি নিয়ে আসাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিলো না। 

আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিলো এই সমাজে যে ট্যাবুটি রয়েছে সেটাকে ভেঙ্গে দেয়া এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি জনসচেতনতা তৈরি করা। সমাজের ট্যাবুর কারণে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে অনাগ্রহ দেখা যায়। যার ফলশ্রুতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। সমাজের সেই ট্যাবুর বিরুদ্ধে আজ আমরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই । 

আমরা ডাকসুর পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি এই উদ্যোগ যাতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের সব উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই সেবার আওতায় আনার এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অনুরোধ জানাচ্ছি।