• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পেঁয়াজ আমদানিতে বিকল্প পরামর্শ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০  

স্থানীয় বাজার ঠিক রাখতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। গতকাল সোমবার এ উপলক্ষে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক অভিৎ জাধব স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই হঠাৎ করে রাতারাতি বাংলাদেশের বাজারে কয়েকদিন ধরে বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে আরেক দফা।

যে পেঁয়াজ গতরাতেও ছিলো ৬০ টাকা কেজি। রাত পোহাতে না পোহাতেই সেই পেঁয়াজের দাম এখন কেজি প্রতি ৯০ টাকা। আর পাইকারি বাজারে আমদানি করা ৫০ টাকার পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে ভারতের বিকল্প হিসেবে আটটি দেশের বাজারের সন্ধান করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

দেশগুলো হচ্ছে- মিয়ানমার (বার্মা), আফগানিস্তান, মিসর, তুরস্ক, চীন, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডস।

ট্যারিফ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন। সাধারণত স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ও আমদানির মাধ্যমে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করা হয়।

২০১৯-২০ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ২৫ লাখ ৫৭ হাজার টন। এর মধ্যে ২২-২৫ শতাংশ সংগ্রহকালীন এবং সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে স্থানীয় উৎপাদিত পেঁয়াজ থেকে বাজারে মোট সরবরাহ করা হয় ১৯ লাখ ১৭ হাজার টন।

এ ছাড়া ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার টন।

যা ২০১৯ সালে ছিল ৬ লাখ ৭৪ হাজার টন এবং ২০১৮ সালে ৬ লাখ ৯৬ হাজার টন। অর্থাৎ, ২০১৯ ও ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২০ সালে যথাক্রমে ৩৫ ও ৩৮ শতাংশ পেঁয়াজ কম আমদানি হয়েছে।

আমদানি কম হওয়ায় চলতি বছর স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজের ব্যবহার বেশি হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের শুরুর পর এপ্রিল মাসের দিকে বাংলাদেশে সব ধরনের আমদানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। স্বাভাবিক আমদানি না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ ব্যবহার হয়েছে বেশি।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও মানিকগঞ্জে বর্তমানে পেঁয়াজের মজুদের পরিমাণ ৫ লাখ ২৫ হাজার টন।

তবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের মৌসুম আসতে এখনও ছয় মাস বাকি। এই সময়ে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১১ লাখ টন। যা আমদানি করেই মেটাতে হবে। অর্থাৎ, মার্চের আগপর্যন্ত আরো প্রায় ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির দরকার পড়বে।

জানতে চাইলে ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (বাণিজ্য নীতি) শাহ মো. আবু রায়হান আলবেরুনী বলেন, স্থানীয় বাজারকে প্রোটেকশন দেয়ার জন্য ভারত পেঁয়াজের রফতানি বন্ধ করে।

সে জন্য ভারত বাদেও চীন, তুরস্ক, মিসর, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি দ্রুত শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এরইমধ্যে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দিয়েছে বিকল্প থেকে পেঁয়াজ আমদানির।