• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

প্রাচীন মিশরীয়দের অদ্ভুত ধর্ম পালন!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২০  

প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব ধর্ম রয়েছে। রয়েছে নিজের ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাসও। তবে প্রাচীন যুগের মানুষদের ধর্মের প্রতি বিশ্বাস ছিল একটু অদ্ভুত  ধরনের। যা বর্তমান সময়ের মানুষ শুনলে অবাক না হয়ে পারেন না।

ডেইলি বাংলাদেশের আজকের প্রতিবেদন সাজানো হয়েছে প্রাচীন মিশরীয়দের অদ্ভুত ধর্ম পালনের ইতিহাস নিয়ে। নিশ্চয়ই জানেন, প্রাচীন সভ্যতার অনেক আশ্চর্যই রয়েছে মিশরে! তারা খুব শক্তিশালী একটি দেশ ছিল। সেখানে তৈরি হয়েছে আশ্চর্য অনেক কিছুই। যা বর্তমানে সবাইকে অবাক করে। প্রাচীন মিশরে আগে মানুষ মারা গেলে তাদের মমি বানিয়ে রাখতেন। যেগুলো এখনো সেখানকার জাদুঘরে রয়েছে।

তাছাড়া মিশর দেশের প্রাচীনকালের ধর্মে অনেক দেবদেবীর পূজার নিয়ম ছিল। নানান কিছুর পূজাতে তারা অভ্যস্ত ছিল। একেক কাজের জন্য একেক দেব-দেবীর উপর তারা বিশ্বাস রাখতেন। আর সেই মোতাবেক পূজাও করতেন। তাদের মধ্যে প্রধান ছিলেন সূর্যদেবতা 'রি' বা 'রা'। তার চেহারা মানুষের মতো, কেবল মাথাটাই ছিল বাজপাখির মতো। তার মাথায় থাকত একটি সাপ-জড়ানো গোল মুকুট। পরে 'রা' নাম বদলে আমন, আটন ইত্যাদি নামকরণ হয়েছিল।

সেদেশের শাস্ত্রে বলে যে, একেবারে গোড়ায় ছিল এক মহাসমুদ্র, আর তাতে ভাসছিল একটি ফুল। তা থেকে জন্ম নিলেন সূর্যদেবতা। তার তিন ছেলে শু, টেফনুট, নুট আর একটি মেয়ে সেব। সেব হলো পৃথিবী, নুট আকাশ, আর শু এবং টেফনুট হল বায়ুমন্ডল। সেবের দুই ছেলে- ওসাইরিস ও সেট, আর দুই মেয়ে। তার মধ্যে আইসিস হলেন ওসাইরিসের স্ত্রী।

সেট ছিল ভারী খারাপ দেবতা, হাতির মতো তার মুখ  সে ওসাইরিসকে মেরে ফেলল তখন আইসিস গেলেন শেয়ালমুখো দেবতা আনুবিসের কাছে। দুজনে মিলে অনেক মন্ত্রতন্ত্রের প্রভাবে ওসাইরিসকে বাঁচিয়ে তুললেন। তবে ওসাইরিস আর মৃতের দেশ পাতাল থেকে ফিরে এলেন না, তিনি সেদেশের রাজা হয়ে রইলেন।

আইসিসের এক ছেলে হল হোরাস, তিনিও সূর্যদেবতা। তার মাথাটিও বাজপাখির মতো। তিনি তার বাবার শত্রুকে দূর করে দিয়ে রাজা হয়ে বসলেন। সেট নালিশ করল যে হোরাস রাজা হতে পারে না, কেননা সে রাজার ছেলে নয়। মরা ওসাইরিসের কখনো ছেলে হতে পারে? শেষে জ্ঞানের দেবতা সারসমুখো থথ প্রমাণ করে দিলেন যে হোরাস ওসাইরিসেরই ছেলে, কাজেই সে রাজপুত্র।

এইসব দেবতা ছাড়া আরো অনেক দেবতার পূজা করা হত প্রাচীন মিশরে। আর তাদের ধর্মে বলত যে, মানুষ মরে গেলেই শেষ হয়ে যায় না, তার শরীরটা তখন পড়ে থাকে কিন্তু তার আত্নাটা বেরিয়ে যায়। আত্নাটা একদিন শরীরের মধ্যে ফিরে আসতে পারে। এই বিশ্বাসে প্রাচীন মিশরীরা মৃতদেহকে রেখে দেবার ব্যবস্থা করত। আর তার সঙ্গে রেখে দিত তার সুখসুবিধার জন্য নানারকম জিনিস। যাতে মৃতদেহ পচে নষ্ট না হয়ে যায়, সে জন্য দেহের ভেতরকার সব যন্ত্র বের করে ফেলে তাতে নানারকম মসলা পুরে আরক মাখিয়ে রাখা হত। এরকম দেহকে বলে 'মমি'।

হাজার হাজার বছর আগেকার এরকম একটি মমি কলকাতার জাদুঘরে আছে। অবশ্য শুধু রাজা কিংবা খুব বড়লোকের মৃতদেহেরই মমি করা হত। প্রাচীন মিশরের মানুষ নীলনদকেও দেবতাজ্ঞানে পূজা করত। মরুভূমির শুকনো হাওয়াও মিশরয়াসীদের কাছে দেবতা ছিল। এই পুরনো ধর্ম বহুকাল হল মিশর থেকে লুপ্ত হয়েছে। তবে রয়ে গেছে প্রাচীন মিশরের ইতিহাস।