• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বছর ঘুরে আবার এলো অমর একুশে বইমেলা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বুদ্ধিবৃত্তি এবং মননশীলতার বিকাশে ধারক ও বাহক এই বইমেলা।
লেখক, পাঠক ও প্রকাশকরা পুরো বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন এই মাসটির জন্য, এই দিনগুলোর জন্য, এই মিলনমেলার জন্য। বইপ্রেমী মানুষের কাছে এই মেলা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা অধীর আগ্রহে এই মাসটির জন্য অপেক্ষা করেন। জাতীয়ভাবেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক, প্রকাশক ও পাঠকের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের বার্ষিক মিলনমেলা হলো এই একুশে বইমেলা। বিভিন্ন প্রকাশকের সাজানো স্টলগুলোতে নানা বিষয়ের নানা রঙের হাজারো বই আকর্ষিত করে পাঠকপ্রেমীদের, বইপ্রেমীদের। অনেক পাঠক আসে প্রিয় লেখককে দেখতে, তাঁর নতুন বই ও অটোগ্রাফ সংগ্রহ করতে। অনেকে প্রিয় লেখকদের সঙ্গে আলোচনা ও আড্ডায় মেতে ওঠে।
বিশ্বের কোনও জাতির ভাষা নিয়ে আমাদের মতো গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নেই। এই মেলা আমাদের ভাষার ইতিহাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। তাই এর আবেদন যেন পুরোপুরিই আলাদা।
বইমেলায় পাঠক কি শুধু বই-ই কিনতে আসেন? রক্তের সাথে বইয়ের টান যাদের রয়েছে, তারা প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে ছুটে আসেন মেলায়। নতুন বইয়ের মলাটে পাঠকের স্পর্শে দীপ্ত হয় প্রতিটি স্টল। লেখকের অটোগ্রাফ দেওয়া বই যত্ন করে সাজানো থাকে বুক সেলফে।

কিভাবে শুরু হলো এই বইমেলা? – ভাষা আন্দোলনের গৌরবের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতেই বইমেলার নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’। ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে বটতলায় এক টুকরো চটের উপর কলকতা থেকে আনা ৩২ টি বই দিয়ে বইমেলার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশী শরণার্থী লেখকদের লেখা এ বইগুলি প্রকাশিত হয়েছিল চিত্তরঞ্জন সাহা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ থেকে যার বর্তমান নাম মুক্তধারা প্রকাশনী।
১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বইমেলা চলে এভাবেই। চিত্তরঞ্জন সাহার প্রচেষ্টায় এ মেলা বিকশিত হতে থাকে ক্রমাগত। ১৯৭৬ সালে বইমেলার প্রতি উৎসাহিত হন অন্য প্রকাশকরা। বইমেলার পরিধি বাড়তে থাকে। পরবর্তী বছরে বিক্রেতার সংখ্যা বেড়ে যায়।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি সরাসরি যুক্ত হয় মেলার সঙ্গে। আর ১৯৭৮ সালেই বইমেলা একটি পূর্ণাঙ্গ মেলায় রূপান্তরিত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে। ১৯৭৯ সালে বইমেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। তৎকালীন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. আশরাফ সিদ্দিক বাংলা একাডেমিকে বইমেলার সাথে সম্পৃক্ত করার ঘোষণা প্রদান করেন। তখন থেকেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বাঙালীর এ প্রাণের মেলা শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়।