• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মনের খোরাক মেটাচ্ছে শখের সূর্যমুখী বাগান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

স্থানীয়ভাবে কৃষকদের অনাগ্রহের কারণে সূর্যমুখী ফুলের চাষ খুব একটা হয় না। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় এ বছর ৩ গুণ বেশি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন কৃষকরা। কৃষি অফিসের প্রদর্শনী, প্রণোদনা ও পুনর্বাসন এবং স্থানীয় কৃষকদের নিজ উদ্যোগে অনেকটা শখের বসেই চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল।

কৃষকের সেই শখের বাগান এখন স্থানীয়দের কাছে বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে। ফলনে সন্তুষ্ট হয়ে আগামীতে কোলেস্টরেলফ্রি ও হার্ট এবং উচ্চ রক্তচাপের জন্য উপকারী এই তৈল ফসলটি আরো বেশি জমিতে চাষ করতে চান কৃষকরা। একই কথা বলছে স্থানীয় কৃষি অফিস।


স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে মাত্র ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছরে ৩ গুণ বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে কৃষি রাজস্ব খাতের অর্থায়নে ৪০ একর জমিতে কৃষি অফিসের প্রদর্শনী, ৩০ একর কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন এবং বাকি জমিতে নিজ উদ্যোগে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন কৃষক।

উপজেলার কালীগঞ্জ পৌরসভা, নাগরী, তুমলিয়া, বক্তারপুর, জাঙ্গালীয়া, মোক্তারপুর, জামালপুর ও বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের সবখানে এই তৈলজাত ফসলটির চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বারি সূর্যমুখী-৩ ও আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ বেশি হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার এ উপজেলায় ৮ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে এ ফসলটি।

হলুদ রঙে সয়লাব আর সূর্য্যের দিকে তাক হয়ে থাকা ফুলের সুন্দর পরিবেশ দেখে অনেকেই ছবি বা সেলফি তুলতে ছুটে আসছেন। অনেকে আবার বন্ধু-বান্ধবের কাছে খবর পেয়ে আসছেন পরিবারসহ।

উপজেলার তুময়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালী গ্রামের বাসিন্দা রনি হায়দার সুমন বলেন, ফুল কে না ভালবাসে? তাছাড়া সড়কের পাশে এমন হলুদ আভা যে কাউকে এই সূর্যমুখী ফুলের সাথে মিতালি করতে বাধ্য করবে।

উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের গৃহবধূ স্বেচ্ছাসেবী নূসরাত কবির বলেন, বন্ধু-বান্ধব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংষদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি আপার সূর্যমুখী ফুলের বাগানে একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাই আমিও স্বামী-সন্তান নিয়ে চলে এলাম।


কালীগঞ্জ পৌর এলাকার তুমলিয়া গ্রামের সুকুমার পালমা এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে এ সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। একই এলাকার দুবার্টি গ্রামের আব্দুর রহিম ভূইয়া অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তৈলজাত এ শষ্যটির চাষ করেছেন সমপরিমাণ জমিতে।

তারা দুজনেই এই প্রতিবেদককে জানান, দর্শনার্থীরা দলে দলে ছুটে আসায় তাদের খুব ভালো লাগছে। আগামীতে আরো বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবেন তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, কৃষকদের আগ্রহ ও ভালো ফলনের কারণে আগামীতে উপকারী তৈলজাত এ ফসলটির চাষ আরো বৃদ্ধি করা হবে। সুন্দর এ তৈলজাত ফসলটি মানুষের প্রশান্তির খোরাকও বলে তিনি মন্তব্য করেন।