• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মানিকগঞ্জে বিচারক না থাকায় তীব্র হচ্ছে মামলা জট

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২০  

মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ না থাকায় তীব্র হচ্ছে মামলা জট। স্থবির হয়ে পড়েছে বিভিন্ন মামলার কার্যক্রম। এতে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিয়ে ধীর গতিতে চলছে দুই আদালতের বিচার ব্যবস্থা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ নিয়োগ দেওয়ার দাবি তুলেছেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।

আদালত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জজশিপে গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ফৌজদারি মামলা চার হাজার ৫১৮টি ও দেওয়ানি মামলা ১৪ হাজার ৬৮টি বিচারাধীন অবস্থায় পড়ে আছে। জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ না থাকায় মামলার জট দিন দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়া মামলার জটে আটকে পড়া গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়ও হচ্ছে না।


আদালত সুত্রে জানাগেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগম বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। বদলির প্রায় দুই মাস হতে চললেও শূন্য পদে এখনও জেলা ও দায়রা জজ নিয়োগ হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে জেলা ও দায়রা জজ না থাকায় বিচারধীন মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় মামলার জট বেড়ে যাচ্ছে। জেলার প্রধান বিচারক না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ ও বিচারাধীন মামলা নিয়ে বিচারপ্রার্থীরা পড়েছেন বিপাকে, বেড়েছে তাদের দুর্ভোগ।

জেলা ও দায়রা জজের অবর্তমানে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শাহানা হক সিদ্দিকা। গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলা আদালতে উঠলেও সিংহভাগ মামলার কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে মার্ডারসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়, আপিল ও শুনানি সবই কার্যত বন্ধ।

সূত্র আরও জানায়, শুধু জেলা ও দায়রা জজই নন পাশাপাশি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ পদটি শূন্য রয়েছে ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে। বিচারক আনোয়ার ছাদাত বদলি হয়ে যাওয়ার এক বছরের অধিক সময় ধরে পদটি শূন্য অবস্থায় রয়েছে। যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ না থাকায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ম আফরোজা বেগম। যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ না থাকায় সেখানে বিচারাধীন মামলার জট বেড়ে যাওয়ায় বিচারপ্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম আজিজুল হক বলেন, জেলা ও দায়রা জজ না থাকায় মামলাগুলোর সমাধান হচ্ছে না। মামলার বিশাল জট বেধে গেছে। এতে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ না থাকায় সেখানে হাজার হাজার মামলার জট হওয়ায় বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সিনিয়র আইনজীবী আসাদুজ্জামান বলেন, জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা জজ আদালত-২ এর পদ শূন্য থাকায় মামলাজট তীব্র হয়েছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে নিয়মিত মামলাগুলো জজকোর্টে বিচার নিষ্পত্তির জন্য বদলি হয়ে যাচ্ছে। প্রথমত যদি বিচারক না থাকে তাহলে আদালতে বিচার কার্যক্রম ব্যহত হয়। দ্বিতীয়ত বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয় এবং তৃতীয়ত ন্যায়বিচার বঞ্চিত হলে অপরাধীরা অপরাধ করে আরও উৎসহ বোধ করে। সৃষ্টি হয় সামাজিক বিশৃঙ্খলা।

মানিকগঞ্জ আইনজীবি সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান বলেন, একটা জেলার প্রধান জজ না থাকলে মামলার গতি থাকে না। এর ফলে মামলা পরিচালনায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া করোনার কারণে প্রায় চার মাস কোর্টের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শূন্য পদে দুই বিচারক যোগ দিলে বিচারকাজে গতি আসবে।