• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রোহিঙ্গারা বললেন, কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচরেই ভালো আছি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২০  

প্রত্যাশার তুলনায় জীবন মানের উন্নত সুযোগ সুবিধা পেয়ে খুশি ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্পে আসা রোহিঙ্গারা। নির্ধারিত বাসস্থান, খাবারের নিশ্চয়তা ও বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া নানা সুযোগ সুবিধায় কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছে কক্সবাজার থেকে স্থানান্তর হওয়া প্রথম বহরের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। একদিন যাপন করেই ভাসানচরের সুযোগ সুবিধার বিষয়টি টেকনাফ-উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে থাকা স্বজনদেরও জানিয়েছেন তারা।
 

শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্পে স্থানান্তর করে সরকার। ওইদিন সন্ধ্যার আগেই প্রত্যেক পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় নির্ধারিত আবাসস্থল। এরপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বরাদ্দ পাওয়া কক্ষে সরকারের দেওয়া সকালের নাস্তা দিয়েই শুরু হয়েছে প্রথম বহরে আসা এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভাসানচরের প্রথমদিন। 


কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রথম রাতে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় নির্ধারিত বাসস্থান। এরপর তাদের দেওয়া হয় রান্না করা রাতের খাবার। বরাদ্দ পাওয়া কক্ষে পরিবার পরিজন নিয়ে প্রথম রাত পার করেন ভাসানচরের রোহিঙ্গারা। 

শনিবারের (৫ ডিসেম্বর) দিনটা শুরু হয় তাদের সরকারের দেওয়া সকালের নাস্তার মধ্য দিয়ে। এরপর তাদের খোঁজ খবর নিতে সেখানে আসেন প্রকল্প পরিচালকসহ কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

শনিবার ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরের বিস্তীর্ণ খোলা জায়গায় খেলা-ধুলায় মেতে রয়েছে রোহিঙ্গা শিশুরা। আর কক্ষগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ শুনছেন গান, কেউ বা আবার সেই গানের তালে বাচ্চাদের নাচের মধ্যে পাচ্ছেন আনন্দ। আর প্রথম দিনেই গৃহস্থলির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন রোহিঙ্গা নারীরা। 

অনেকেই মুঠোফোনে কক্সবাজারের শিবিরে থাকা পরিজনদের খোঁজ খবর নিতেও দেখা যায়। একই সঙ্গে নতুন জায়গায় সরকারের দেওয়া সুযোগ সুবিধা পেয়ে তারাও যে ভালো আছে, সে খবরও জানাচ্ছিলেন টেকনাফ-উখিয়া শরণার্থী শিবিরে থাকা স্বজনদের।

কেমন কাটছে ভাসানচরের দিন সময় সংবাদের এমন প্রশ্নে সবার মুখেই শোনা গেছে প্রত্যাশার তুলনায় ভালো থাকার কথা। তারা জানালেন, রাতে তাদের বাসস্থান ও খাবার যথা সময়ে বুঝিয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। আর সকালে উন্নতমানের নাস্তার সঙ্গে আপেলের মতো ফল থাকায় অনেকটা উৎফুল্লতা প্রকাশ করেন তারা। 

কক্সবাজার থেকে ভাসানচরের জীবন ব্যবস্থা অনেক ভালো এমনটা জানিয়ে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশও করেছেন তারা। 

ভাসানচরের সুযোগ সুবিধা আর সেবাযত্নে খুশি হওয়া এসব রোহিঙ্গা শরণার্থী বলছেন, কেউ তাদের জোর করে নয়, স্বপ্রণোদিত হয়েই তারা এসেছেন ভাসানচরে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য গড়ে তোলা বাংলাদেশ সরকারের এই আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যাপারে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা শর্ত জুড়ে দিলেও তা না মেনে সরকারের সঙ্গে প্রথম ধাপে এই ১ হাজার ৬৪২ জন শরণার্থী নিজেদের ইচ্ছাতেই এসেছেন ভাসানচরে। আর নৌ ও সেনাবাহিনীর সাতটি জাহাজের মাধ্যমে কক্সবাজার থেকে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হয়।