লক্ষণ প্রকাশের ১৮ ঘণ্টায় মৃত্যু, মহামারির রহস্য আজো অজানা!
মানিকগঞ্জ বার্তা
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২০
এখনকার মতো মধ্যযুগেও মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হতো। যার ফলে তখনো মানুষের মনে ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করত। তবে এখনকার মতো তখন এতো উন্নত চিকিৎসাও ছিল না। মূলত উন্নত স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত জ্ঞানের অভাব ও মেনে না চলা এবং রোগের ধরণ বুঝতে না পারাই হয়তো তাদের রোগের প্রধান কারণ ছিল।
তবে সে সময়ের অসংখ্য রোগ সম্পর্কেই বর্তমানে চিকিৎসকরা যথাযথভাবে জেনেছেন। ফলে রোগগুলোকে মোকাবিলাও করতে পেরেছেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের ‘সোয়েটিং সিকনেস’ বা ‘ঘাম ঝরা রোগ’ এখনো চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে রহস্যই রয়ে গেছে।
পঞ্চদশ ও ষষ্টদশ শতকে এক রহস্যময় মহামারি রোগ ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই মহামারি রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রথমে জ্বর এবং ঠাণ্ডা কাঁপুনি নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেত। এছাড়াও এসবের পাশাপাশি মাথা ধরা, ঘাড়, কাঁধ এবং পায়ে তীব্র ব্যথা অনুভব করত। এ সময় রোগী মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ত।
মহামারি
প্রথম ধাপে শুরু হওয়া ঠাণ্ডা কাঁপুনি আধা ঘণ্টা থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত থাকত। এরপর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হতো। দ্বিতীয় ধাপে গরম পর্ব শুরু হতো। অর্থাৎ রোগীর শরীর গরম হয়ে যেত। এ সময় ঘাম ঝরা শুরু হতো এবং পিপাসা লাগত। পাশাপাশি রোগী প্রলাপ বকত। নাড়ির স্পন্দন বেড়ে যেত, বুক ধড়ফড় করত এবং বুক ব্যথা করত। তৃতীয় ধাপ তথা চূড়ান্ত পর্বে রোগী অবসন্ন হয়ে ঘুমিয়ে পড়ত। এই ঘুম থেকে আর জেগে উঠত না!
সোয়েটিং সিকনেস রোগের সবচেয়ে মারাত্মক দিকটি ছিল দ্রুত মৃত্যু ঘটানোর বিষয়টা। অধিকাংশ রোগীই লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার ১৮ ঘণ্টার মধ্যে মারা যেত। এত দ্রুত মারা গেলেও রোগটির আরেকটি আশ্চর্যজনক রহস্য ছিল। তা হচ্ছে কোনো রোগী যদি ২৪ ঘণ্টা বেঁচে থাকত তবে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতেন।
সোয়েটিং সিকনেসের সর্বশেষ রোগীর তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছিল ১৫৫১ সালে। এর পূর্বে ১৪৮৫ সাল পর্যন্ত পাঁচবার এই রোগ মহামারি আকারে প্রকাশ পেয়েছিল। সোয়েটিং সিকনেসের অনুরূপ আরেকটি রোগ ১৭১৮ সাল থেকে ১৮৭৪ সালে উত্তর ফ্রান্সে ছড়িয়েছিল। রোগটির নাম ছিল পিকার্দি সোয়েট। সে সময় দুই শতাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুহার খুব কম ছিল।
মহামারি
সোয়েটিং সিকনেস সপ্তম হেনরির (হেনরি ৭) রাজত্বকালে বোসওয়ার্থ যুদ্ধের পরপরই প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল। এর দ্বারা এক মাসের ভেতরেই ১০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল। ১৫০৭ সালে কিছুটা দুর্বলভাবে এই রোগটি বিস্তার লাভ করেছিল। তবে এই দুর্বলভাবে বিস্তার হওয়া রোগটিই পরবর্তীকালে তৃতীয়বারের মতো মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। যা ফ্রান্স পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। তৃতীয়বার ছড়িয়ে পড়া রোগটি কিছু কিছু এলাকার অর্ধেকের বেশি লোককে মেরে ফেলেছিল। চতুর্থবার যখন এই রোগ প্রকাশ পায় তখন দ্রুত পুরো ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়েছিল।
জানা যায়, চতুর্থবার ইংল্যান্ড জুড়ে রোগটি বিস্তার লাভ করলে অষ্টম হেনরি (হেনরি ৮) ভয়ে লন্ডন থেকে পালিয়েছিলেন। রোগ থেকে বাঁচার আশায় নিয়মিত এক বাসভবন থেকে অন্য বাসভবনে চলে যেতেন। প্রতিরাতে ভিন্ন ভিন্ন বিছানায় ঘুমাতেন।
এরপর এই রোগ হঠাৎ হামবুর্গে ছড়ায়। সেখানে লন্ডনের মতোই কাজ করতে থাকে রোগটি। হামবুর্গেও দ্রুত ছড়ায় এবং মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই এক হাজারের অধিক মানুষের মৃত্যু ঘটায়। এই রোগ পুরো ইউরোপে ছড়িয়েছিল। পরে সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড এবং রাশিয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল। তবে রোগটি ১৫৫১ সালের পর থেকে আর দেখা যায়নি।
রাজা অষ্টম হেনরীও এই মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন
সোয়েটিং সিকনেস রোগটির আরেকটি অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য ছিল। রোগটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্পদশালী ও উপরের শ্রেণির লোকদের আক্রমণ করত। তৎকালে ডিউক, বিশপ, মেয়ররা আক্রান্ত হয়েছিল। মঠগুলোতে মারাত্মকভাবে আঘাত হেনেছিল। আর পাদরীবর্গের মৃত্যু হয়েছিল বেশি।
এই রোগে রাজা সপ্তম হেনরির (হেনরি ৭) স্ত্রী অ্যানি বলেইনও আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থও হয়েছিলেন। তবে তাদের সন্তান আর্থার টিউডর মারা গিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
তৎকালে রোগটির কারণ সম্পর্কে কারও কোনোকিছু জানা ছিল না। বর্তমান সময়ের অনেক গবেষক মনে করেন রোগটির কারণ ছিল হান্টাভাইরাস। যা রোডেন্ট বা গর্তবাসী প্রাণী থেকে ছড়িয়েছিল। হান্টাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসে মারাত্মক প্রদাহ হয়, ফ্লুর মতো উপসর্গ যেমন – জ্বর, সর্দি, পেশিব্যথা, মাথা ধরা এবং অবসাদ প্রকাশ পায়। মৃত্যুহার ছিল শতকরা ৩৬ ভাগ!
আবার অনেক গবেষক মনে করেন, ভাইরাসটি আর্থ্রোপোডা পর্বের পতঙ্গ যেমন– এঁটুল (Tick) এবং মশার মাধ্যমে ছড়িয়েছিল। ধারণা করা হয়, মুষলধারে বৃষ্টি এবং বন্যার পর এই রোগটি বিস্তার লাভ করত। সমসাময়িক অনেক বিজ্ঞ পণ্ডিত ইংল্যান্ডের আর্দ্র জলবায়ুকে দায়ী করতেন।
মহামারি
প্রথম কে সোয়েটিং সিকনেসে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেটিও পরিষ্কার জানা যায় না। তবে অনেক ঐতিহাসিকগণের মতে, হেনরির বাবা ইংল্যান্ডের রাজত্ব পাকাপোক্ত করার জন্য বেশকিছু সৈন্য ভাড়া করে এনেছিলেন। এই ভাড়াটে সৈন্যদের থেকেই এই রোগটি ছড়িয়েছিল।
এই রোগটি ছড়ানোর বিষয়ে আরও একটি অনুমান নির্ভর তথ্য রয়েছে। ধারণা করা হয়, রোগটি খাদ্যবাহিত বটুলিজম এবং ছত্রাকজনিত কারণে ঘটা খাদ্যের বিষক্রিয়া। তবে অধিকাংশ মহামারি রোগের মতো এই রোগও হঠাৎই অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল।
বর্তমান সময়ে হান্টাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলকভাবে বিরল। ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত কোরিয়ার যুদ্ধের সময় ‘কোরিয়ান হেমোরেজিক ফিভার’ সৈন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই রোগের কারণ ছিল হান্টাভাইরাস। সে সময় প্রতি দশজন রোগীর মধ্যে একজন মারা যেত হান্টাভাইরাসের কারণে।
সূত্র : হিস্টোরি ডট কম, অ্যামিউজিং প্লানেট
- পাবনায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি
- ৮ ডাকাত গ্রেপ্তার
- শিল্পী সমিতির ভোটগ্রহণ সম্পন্ন
- নিয়ন্ত্রণে শিশু হাসপাতালের আ*গু*ন
- সংঘবদ্ধ ধর্ষণ গ্রেপ্তার ৫
- ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরায়েলের
- দুই ভাইয়ের হাতাহাতিতে বড় ভাই নিহত
- পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা চালু
- বৈশাখে ঘুরতে বেরিয়ে গণধর্ষণের শিকার তরুণী
- গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২
- ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিএনপি
- দেবে যাচ্ছে বেইলি সেতুর পাটাতন
- ২ বন্ধুর মৃত্যু নিয়ে রহস্য
- কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত ৪, আটক ২
- ভোজ্য তেল বিক্রি হবে আগের দামেই
- ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকায় আসছেন
- ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
- মাদকের টাকায় সম্পদের পাহাড়
- চিকিৎসকের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার দাবি
- তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯ মে
- পালিয়ে বাংলাদেশে এলেন আরো ১৭ জন
- পরিস্থিতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- ভূমি অফিসে তদবির করতে গিয়ে আটক
- কেরানীগঞ্জে ৯ প্রার্থী মনোনয়ন জমা
- মানিকগঞ্জে বৈশাখী মেলায় লোকজ নানা আয়োজন
- যুগান্তরের মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি নুরুজ্জামান
- মানিকগঞ্জে ৩২ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
- গঙ্গাস্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল
- ধানে হাসছে হাওর
- বৃষ্টির আভাস নেই
- গঙ্গাস্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল
- ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিএনপি
- ভূমি অফিসে তদবির করতে গিয়ে আটক
- তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯ মে
- সাভারে এসি বিস্ফোরণ, দুজন দগ্ধসহ আহত ৫
- শিল্পী সমিতির ভোটগ্রহণ সম্পন্ন
- ভোজ্য তেল বিক্রি হবে আগের দামেই
- ধানে হাসছে হাওর
- সংঘবদ্ধ ধর্ষণ গ্রেপ্তার ৫
- বৃষ্টির আভাস নেই
- মানিকগঞ্জে ৩২ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
- কেরানীগঞ্জে ৯ প্রার্থী মনোনয়ন জমা
- মানিকগঞ্জে বৈশাখী মেলায় লোকজ নানা আয়োজন
- নিয়ন্ত্রণে শিশু হাসপাতালের আ*গু*ন
- সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন বসবে ২ মে
- ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
- সাতসকালে সড়কে ঝরলো ১২ প্রাণ
- হিজবুল্লাহর হামলা
- ওমরাহ ভিসার নিয়ম পরিবর্তন
- যুগান্তরের মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি নুরুজ্জামান