• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিশু মনির হত্যায় জড়িত তারই মাদরাসার অধ্যক্ষ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৯  

রাজধানীর ডেমরার মাদরাসা শিক্ষার্থী মনির হোসেনকে (৮) শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল জলিল হাদী ও তার ২ সহযোগী মো. আকরাম হোসেন ও আহাম্মদ সফি ওরফে তোহা জড়িত। মনিরকে হত্যার পর হত্যাকারীরা তার পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল।

গোয়েন্দা তথ্য, প্রযুক্তির সহায়তা ও অনুসন্ধানে হাত্যাকাণ্ডের তিন দিনের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষার্থী মনির হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।

বুধবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী জোনের ডিসি মো. ফরিদ উদ্দিন। 

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ডেমরার ডগাইর নতুন পাড়ার মো. সাইদুল হকের বড় মেয়ে ফাতেমা আক্তার (১২), মেঝ মেয়ে মুন্নি আক্তার (৯) ও ছোট ছেলে মো. মনির হোসেন (৮) নুর-ই মদিনা মাদরাসায় লেখাপড়া করত।  গত ৭ এপ্রিল  (রোববার) সকালে প্রতিদিনের মত মাদরাসায় যায় মনির ও তার দুই ভাই-বোন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল ১১টায় মাদরাসা ছুটির পর মনিরকে অপহরণ করে তারই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীরা। 

অপহরনের পর মনিরকে পাশের নির্মাণাধীন মসজিদে (মসজিদুল-ই-আয়শা) নিয়ে যায় তারা। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আব্দুল জলিল হাদী মসজিদুল-ই-আয়শারও ঈমাম। ওখানে নেয়ার পর শিশু শিক্ষার্থী মনির কান্না-কাটি শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরে একজন। তখন মনির আরো জোরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এ সময় হাদী গামছা দিয়ে মনিরের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। এক সময় অপহরণকারীরা বুঝতে পারে মনির আর বেঁচে নেই। তখন তারা মনিরের হাত-পা বেঁধে লাশটি একটি সিমেন্টের বস্তায় ঢুকিয়ে সিঁড়ির পাশে রেখে দেয়।

ডিসি আরো জানান, মনির মারা গেছে জেনেও অপরহরণকারী অধ্যক্ষ্য ও তার সহযোগীরা তার বাবা সাইদুল হকের কাছে মুঠোফোনে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণকারীরা মসজিদের লাশ রাখার খাটিয়ায় মুক্তিপণের টাকা রেখে যেতে বলে। যত দ্রুত সম্ভব মনিরের বাবা ১ লাখ টাকা জোগার করে অপহরনকারীদের নির্দেশ মতে মসজিদে নিয়ে আসে। মনিরকে ফিরে পাওয়ার আশায় তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় তিনি মুক্তিপণের টাকা মসজিদের ঈমাম হাদীর কাছে রাখেন। রাতভর অপেক্ষা করেও মনির ফিরে না আসায় পরদিন সকালে তিনি টাকা নিয়ে চলে আসেন।
 
এদিকে পরদিন ৮ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে মসজিদের সিঁড়ির কাছ থেকে বস্তাবন্দি মনিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতয়ি তলার সিঁড়ির মাঝে বস্তাবন্দি মনিরের লাশটি রাখা ছিল। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও ছাত্র তোহাকে আটক করে পুলিশ।

আটক দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে স্বীকার না করলেও গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মনিরকে অপহরন ও হত্যার কথা স্বীকার করে তারা। তাদের দেয়া তথ্যে বংশালের মালিটোলা থেকে অপর আসামি আকরামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ডিসি ফরিদ উদ্দিন।