• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সখীপুরে অবৈধ সিসা কারখানায় হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২০  

টাঙ্গাইলের সখীপুরে কালিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে বনের জমি দখল করে আবাসিক এলাকায় পাশে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ সিসা কারখানা।

আশপাশে অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস থাকলেও ক্ষমতা দেখিয়ে অসাধুরা এ অবৈধ সিসার কারখানা গড়ে তুলেছেন।

চিকিৎসকদের মতে, সিসার রাসায়নিক পদার্থ আশপাশের এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে। মানছেন না কারখানার মালিকপক্ষ।


 
রবিবার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে রামখা এলাকার কেবিজি চালায় একটি সামাজিক বনায়নের ভেতর চারদিকে টিনের বেষ্টনী করে প্লটের গড়ে ওঠেছে এ সিসা কারখানা। 

প্লট মালিক আহম্মদ আলীকে ম্যানেজ করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জামাল মিয়া ওরফে চশমা জামালের সহযোগীতায় এঅবৈধ  সিসা কারখানা গড়ে তুলেছেন  সিসা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম।

 বাইর থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই  ভেতরে এত বড় একাটি সিসা কারখানা রয়েছে।

তাদের হাতে গ্লাভস থাকলেও মুখ-পায়ে কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম নেই।

 কারখানার পাশেই এসিড মিশ্রিত বর্জ্যের ছোট ছোট বেশ কয়েকটি স্তুুপ, মাটি গর্ত করে চারটি চুলা বানানো হয়েছে।

 বর্জ্য আগুনে পুড়ে তৈরি করে তরল সিসা ।

 লম্বা চামচ দিয়ে বর্জ্য সরিয়ে সিসা আলাদা করে লোহার কড়াইয়ে রাখালে তা জমাট হয়ে সিসার খন্ড তৈরি হয়।


 
স্থানীয়রা জানান, রাতে সিসা আগুনে পোড়ানোর সময় ধূসর ও কালো ধোঁয়ায় পুরো গ্রাম আচ্ছন্ন হয়ে যায়। রাত ৮টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলে এ সিসা তৈরির কাজ। এর দূষিত ধোঁয়ায় আশপাশের গাছপালাগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। 

কারখানার ধোঁয়া ও বর্জ্যে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কবলে আর এসিড পুড়ানোর ঝাঁঝালো গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে এলাকাবাসী। 


এ ব্যাপারে ওই জমির মালিক  আহম্মদ আলী বলেন, বনের জমি সংলগ্ন আমার অনাবাদী চালা ভাড়া নিয়ে সিসা কারখানা করছেন মুন্সিগঞ্জ জেলার রেজাউল করিম।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কারখানার পাশের বাড়ির একজন বলেন, রাতে যখন ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা বের করা হয়। তখন গোটা এলাকায় কালো ধোঁয়ায় ছাইয়া যায়।
স্থানীয় এলাকাবাসী মোস্তফা মিয়া জানান, ওই সিসা কারখানার কারণে আমার দুটি উন্নত জাতের গরু মারা গেছে। যার মূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা। একই কারনে স্থানীয় আরোও কয়েকজন কৃষকের গরু মারা গেছে বলেও তিনি জানান। 

 
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল রাজ্জাক ওরফে ধলা মিয়া বলেন, অনেক আগে থেকেই এই সিসার কারখার অভিযোগ শুনে আসছি। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো.আব্দুল জলিল বলেন, রামখা এলাকায় কয়েকজন কৃষকের গরু মরার বিষয় আমরা শুনেছি। পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ওই এলাকায় একটি সিসার কারখানা রয়েছে। পরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ওই সিসা কারখানা বন্ধের ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবদুস সোবাহান বলেন, ব্যাটারির সিসা পোড়ার ধোঁয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ কিডনিসহ ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।