• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সবচেয়ে শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল ১০ সামরিক বিমান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০১৯  

বিশ্বের প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই সামরিক বিমান রয়েছে। তবে সব বিমানই শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল নয়। জানেন কি, সমর শক্তিতে পৃথিবীতে শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়। সামরিক শক্তিতে কেউ কাউকে পরোয়া করে না। এই দেশ দুইটি সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য একের পর এক যুদ্ধ যান তৈরি করছে। বিশেষ করে উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে রাশিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে ‍যুক্তরাষ্ট্র। জেনে নিন ১০ সামরিক বিমান ও হেলিকপ্টার, যা সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল।

১. এফ/এ-১৮ হর্নেট
যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্সের নাম্বার ওয়ান আক্রমণাত্মক যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধবিমানটি সার্ভিস শুরু করে ১৯৮০ সালে। গ্রাউন্ড এবং এরিয়াল উভয় টার্গেটে অ্যাটাক করতে সক্ষম। বর্তমানে এটি ইউএস এয়ারফোর্স ছাড়াও কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, কুয়েত, মালয়েশিয়া, স্পেন এবং সুইজারল্যান্ডের সামরিক ভাণ্ডারে মার্কিন পারিতোষিক হিসাবে জায়গা পেয়েছে। এর মূল্য  ৯৪০ লক্ষ ডলার।

২. ইএ-এইট্টিন জি গ্রাউলার  
এটি মূলত এফ/এ-১৮ হর্নেট ফাইটারের একটি হালকা অস্ত্রসজ্জিত সংস্করণ। মূলত ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ারের জন্যই একে তৈরি করা হয়েছে। মূলত এখন মার্কিন নৌবহরে কাজ করছে। এটি অ্যান্টি এয়ারক্রাফট রাডার অবজেক্ট খুঁজে বের করে এবং শত্রুপক্ষের কমিউনিকেশন সিস্টেম নিজের পাঠানো সিগন্যালের মাধ্যমে পুরো জ্যাম করে দিতেও সক্ষম। এর মূল্য ১০২০ লক্ষ ডলার।

৩. ভি-টোয়েন্টিটু অস্প্রে
২০০৭ সালে সাদ্দাম-পরবর্তী ইরাকে হিংসা দমনে প্রথম ব্যবহার করা হয় ভি-টোয়েন্টিটু অস্প্রে। টিল্ট রোটারের মাধ্যমে মাটি ছেড়ে ওড়া এই যুদ্ধবিমান হেলিকপ্টারের মতো ওঠানামা করে। তাও তা একটি ফিক্সড উইং প্লেনের চাইতে দ্রুত উড়ে যেতে পারে। মারাত্মক শক্তিসম্পন্ন এই বিমানের ইতিহাস আরেকটু ঘাঁটলে জানা যাবে এর ধ্বংসযজ্ঞের আরও তথ্য। এর মূল্য ১১৮০ লক্ষ ডলার।

৪. এফ-৩৫ লাইটনিং
মার্কিন সমরবিভাগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ডিল সই হয় এই সুপারসনিক ফাইটারের প্রজেক্ট শুরু হওয়ার সময়। ২০০১ সালে। যদিও কোনো কোনো লবির এক্সপার্টরা মনে করছেন, এই বিমান তাদের আশা পূরণ করতে পারেনি। তাদের মতে, এটি খুবই হালকা এবং তুলনামূলকভাবে অস্ত্রবহনে অসমর্থ। ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে কম্পিউটার হ্যাকারদের দ্বারা ৭.৫ মিলিয়ন কোডের তথ্য পাচারকালে এই বিমানের তথ্যও পাচার হয়ে গিয়েছে বলে আশঙ্কা করেন কেউ কেউ। তাই আমেরিকার প্রতিপক্ষের স্কোয়াডে এই বিমানের দেখা পাওয়া গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এর মূল্য ১২২০ লক্ষ ডলার।

৫. ই টু ডি-অ্যাডভান্সড হক আই
টার্গেটেড টেরিটরি ছাপিয়ে এর পাওয়ারফুল এবং অ্যাডভান্সড রাডার সিস্টেম ৩০০% এলাকা আরও বেশি কভার করবে। এখনও এটি আন্ডার-ডেভেলপড অবস্থায় আছে। যদিও এর দুটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ এর মধ্যেই মার্কিন নেভিকে সরবরাহ করা হয়েছে। আমেরিকার নৌবাহিনী যে এতে সন্তুষ্ট সে কথা তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর মূল্য ২৩২০ লক্ষ ডলার।

৬. ভিএইচ-সেভেন্টিওয়ান কেস্ট্রেল
এই হাই-টেক হেলিকপ্টার প্রজেক্ট ইতোমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাবেক চপার ফ্লিটের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। অর্থাৎ, এই যুদ্ধ হেলিকপ্টার বারাক ওবামা ও তার পরবর্তী প্রেসিডেন্টদের অফিস থেকে বাড়ি ফেরার যান হতে চলেছে। তবে গত ২২ জুলাই মার্কিন কংগ্রেসে এই হেলিকপ্টার প্রকল্পের জন্য বাজেট বাড়িয়ে ৪৮৫০ লক্ষ ডলার করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর বর্তমান মূল্য ২৪১০ লক্ষ ডলার।

৭. পি-৮ এ পসাইডন
৭৮৭ জেটের এই সামরিক ভার্সনটি মার্কিন নেভির হাতে তুলে দেয়া হবে, যা ব্যবহৃত হবে মূলত সাবমেরিন যুদ্ধ এবং ইন্টেলিজেন্স সংগ্রহের কাজে। তবে এর সার্ভিস পুরোপুরি পেতে অপেক্ষা করতে হবে বলে এই প্রজেক্টের ডেভেলপাররা জানিয়েছেন। এর মূল্য ২৯০০ লক্ষ ডলার।

৮. সি সেভেন্টিন এ গ্লোবমাস্টার
মার্কিন এয়ারফোর্সের সামরিক সরবরাহে নিয়োজিত এই বিমান সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে মেডিকেল সার্ভিস দিয়ে থাকে। তবে একইসঙ্গে এয়ারড্রপ মিশনেও তাকে কাজে লাগানো হয়। এই মুহূর্তে আমেরিকান এয়ারফোর্সে ১৯০টি সি সেভেন্টিন এ গ্লোবমাস্টার সার্ভিস দিচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে। ১০২ জন প্যারাট্রুপার একযোগে ডাইভ দিতে পারে এই বিমানের খোল থেকে। এর আগে আমেরিকার ইরাক আক্রমণ এবং লাদেন-তালিবান বিরোধী আফগান যুদ্ধেও ব্যবহৃত হয়েছে এই মালবাহী সামরিক বিমান। এর মূল্য ৩২৮০ লক্ষ ডলার।

৯. এফ-টোয়েন্টি টু ব়্যাপটর  
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী, বিশ্বের মধ্যে এই এফ-টোয়েন্টি টু ব়্যাপটর-ই সম্মুখসমরে সব চাইতে পারদর্শী বিমান। এর মানুফ্যাকচারিং ডিজাইনার আমেরিকার নামকরা (খ্যাতি-অখ্যাতি উভয়তই) মিলিটারি কর্পোরেট লকহেড মারটিন। শত্রুপক্ষের নিক্ষেপ করা ক্রুজ মিসাই উড়িয়ে দেয়ার মতো অব্যর্থ লক্ষ্যভেদী সামর্থ্য ছাড়াও এই যুদ্ধবিমানের আছে সুপারসনিক স্পিড। এ রকম আরো সাতটি বানানো হবে কি না, তা নিয়ে এখন মার্কিন সেনেটে বড়সড় বিতর্ক চলছে। এর মোট খরচ পড়বে ১৬৭ কোটি ডলার এবং এই প্রকল্পে যুক্ত থাকবেন ২৫ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তিবিদ-কর্মী। তবে এর বর্তমান মূল্য ৩৫০০ লক্ষ ডলার।

১০. বি টু স্পিরিট
বি টু স্পিরিট আসলে বোমারু বিমান। এখন ২০টি বি টু স্পিরিট আমেরিকার সামরিক বাহিনীতে আছে। ইনফ্রা-রেড, অ্যাকুইস্টেক এবং ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডার ভিসুয়াল সিগন্যালেও এখনও পর্যন্ত শত্রু এলাকায় একে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর আফগানিস্তানে তালিবান ও আল-কায়েদা দমন অভিযানে এবং আমেরিকার ২০০৩ সালের ইরাক আক্রমণের সময় সমানে বোমা ফেলা হয়েছিল এই বিমান থেকে। এর মূল্য ২৪০ কোটি ডলার।