• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সিরামিক খাতের সাফল্য

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮  

আদি মৃৎ শিল্প থেকে সিরামিক শিল্পের আবির্ভাব। হাজার বছর শিল্পের পুরানো নিদর্শন ঠাঁই করে নিয়েছে দেশি-বিদেশী সকল জাদুঘরে। আমাদের দেশে রপ্তানি পণ্যের তালিকায় সিরামিক পণ্য বিশ্বে সপ্তম। রপ্তানির পাশাপাশি দেশের বাজারেও সিরামিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অভ্যন্তরীণ বাজারের আকার সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। মোট চাহিদার ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণভাবে মেটাচ্ছে দেশিয় সিরামিক। বাকি প্রায় ১৫ শতাংশ এখনও আমদানি করা হয়।

এই খাত যেহেতু বিশ্ব বাজারে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে তাই এই খাত  নিয়ে উদ্যোক্তারাও এখন স্বপ্ন দেখছেন।

সিরামিক পণ্যের চাহিদা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বাইরেও সাড়া ফেলছে। একই সাথে এর সম্প্রসারণও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত পাঁচ বছরে এই খাতে উৎপাদন বেড়েছে দুইশ শতাংশ। সিরামিক খাতে এখন মোট ৬২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সিরামিক এর মধ্যে টাইলস কোম্পানির ২৬টি ও স্যানিটারি পণ্য উৎপাদনের ১৬টি কারখানা রয়েছে। উৎপাদনের মূল্য সংযোজনের ৬৫ শতাংশ, সব মিলিয়ে সিরামিক শিল্প ১০০ কোটি ডলার বা ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ খাতটির সঙ্গে জড়িত। ২৬টি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ কোটি পিস, তৈজসপত্রের দৈনন্দিন চাহিদা ৮৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ পূরণ করে। ২৬টি টাইলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দৈনন্দিন চাহিদায় ৭২ দশমিক ২৯ শতাংশ জোগান দেয়।  সিরামিক পণ্য হিসেবে গৃহস্থালি তৈজসপত্র, বেসিন, কমোড, মার্বেলের তৈজসপত্র এসব দৈনন্দিন ব্যবহারের উপযোগী পণ্য উৎপাদন করা হয়। সিরামিক পণ্যের কাঁচামাল সাধারণত বিদেশ থেকেই আমদানি করা হয় কিন্তু ৩০ শতাংশের কাঁচামাল দেশ থেকেই করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

বর্তমানে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ইতালিসহ বিশ্বের ৫০টিরও  বেশি দেশে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্যসামগ্রী রপ্তানি হচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪ কোটি ১৮ লাখ কোটি ডলার বা ৩৩৮ কোটি টাকার সিরামিক পণ্য রপ্তানি করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এই আয় আগের অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ১৪ শতাংশ বেশি। সিরামিক পণ্যের মধ্যে তৈজসপত্র বেশি রপ্তানি হচ্ছে। গত অর্থবছর ৩৩৮ কোটি টাকার রপ্তানির মধ্যে ছিল তৈজসপত্র ২৮৮ কোটি ও টাইলস ৫০ কোটি টাকার। বিগত কয়েক বছর বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায় আগে সিরামিকের উৎপাদন এতো বেশি ছিল না।

কিন্তু এখন দিন দিন সিরামিকের আমদানি ও রপ্তানি দুটোই বেড়ে চলেছে।  তাই এখন আমাদের দেশে সিরামিক ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হচ্ছে।

সিরামিকের রফতানির তুলনায় দেশে আয় হচ্ছে বেশি হারে। গত অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ বাজার বেড়েছে ২৩ শতাংশ। গত অর্থবছরে এই পণ্যের দেশিয় বাজার ছিল চার হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার। তাই এখন বলা যায় সিরামিক  আমাদের দেশকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে পারবে।