• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সীমা বাড়ল ইন্টারনেট ব্যাংকিং লেনদেনে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০  

গ্রাহকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা। করোনার মধ্যে প্রায় সবধরনের লেনদেন কমে এলেও ইন্টারনেট ব্যাংকিং বেড়েছে ৫০ শতাংশ। গত জুনেই শুধু লেনদেন হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় লেনদেনের দৈনিক সীমা বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যক্তিপর্যায়ে দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা দুই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে দেড় শ’ ভাগ। আর প্রাতিষ্ঠানিকে দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা দুই লাখ টাকা থেকে ৪০০ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকেই কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, করোনার মধ্যে প্রায় সবধরনের ব্যাংক লেনদেন যেখানে কমে গেছে, সেখানে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন কমেনি, বরং বেড়ে গোেছ। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, এপ্রিলে ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯২টি লেনদেনের মাধ্যমে চার হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। মে মাসে তা ২০ লাখ ৫৪ হাজার ৬১২টি লেনদেনের মাধ্যমে পাঁচ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়। জুনে তা আরো বেড়ে ২২ লাখ ছয় হাজার ৮১৯টি লেনদেনের মাধ্যমে সাত হাজার ৪২১ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
লেনদেনের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো: শিরিন গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রতিনিয়তই ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ফান্ড ট্যান্সফারের (আইবিএফটি) লেনদেন বেড়ে যাচ্ছে। ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) আওতাধীন ব্যাংকগুলোর তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর আন্তঃব্যাংক সেবা জনপ্রিয় হওয়ায় অন্যতম কারণ হলো এ পদ্ধতিতে ঘরে বসে, অফিস থেকে এমনকি বিদেশ থেকেও গ্রাহকরা লেনদেন করতে পারে। এ কারণে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেড়ে গেছে। তিনি মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের সীমা বৃদ্ধি করায় ইন্টারনেট ব্যাংকিং আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এতে গ্রাহক যেমন উপকৃত হবে, তেমনি ব্যাংকের জন্যও ভালো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আগে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের আওতায় ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের সীমা অভিন্ন ছিল। অর্থাৎ ব্যক্তিপর্যায়ে একজন গ্রাহক প্রতিদিন পাঁচটি লেনদেনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা লেনদেন করতে পারত। আর একটি লেনদেনে সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৫০ হাজার টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রেও ওই একই ছিল। কিন্তু ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় এখন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের সীমার ক্ষেত্রে পৃথক করা হয়েছে। কারণ, ব্যক্তি লেনদেনের চেয়ে প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেন কয়েক গুণ বেশি হয়। এ কারণে, এখন দৈনিক একজন গ্রাহক পাঁচটি লেনদেনের পরিবর্তে ১০টি লেনদেন করতে পারবে। আর সর্বোচ্চ লেনদেন দুই লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে। আর প্রতিটি লেনদেন দ্বিগুণ করে ৫০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা করা হয়েছে।
অপর দিকে প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা চার গুণ বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। আগে যেখানে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দিনে দুই লাখ টাকা লেনদেন করা যেত, এখন তা বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। দৈনিক লেনদেন পাঁচটির স্থলে ২০টি করা হয়েছে। আর একক লেনদেন ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গতকাল ব্যাংকগুলোর জন্য একটি সার্কুলার লেটার জারি করা হয়েছে। এটি গতকালই ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকেই কার্যকর করতে বলা হয়েছে।