• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সুস্থ সন্তান পেতে যেসব বিষয় মেনে চলা খুব জরুরি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২০  

আগের যুগের মতো না এখন দ্রুত বিয়ে করার প্রচলন রয়েছে, আর না দ্রুত গর্ভসঞ্চারের চিন্তাভাবনা করার। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরই এখন সবাই বিয়ে ও সন্তান নিয়ে চিন্তা করেন। আর এই দেরির ফলে কিছু জটিলতা অনেকের ক্ষেত্রেই আসে। তাই হবু সন্তানের সুস্থতার কথা মাথায় রেখে প্রথম থেকেই সচেতন হতে হবে।  

অনেকেই বিয়ের আগে হবু স্বামী-স্ত্রীরা থ্যালাসিমিয়ার স্ক্রিনিং টেস্ট করান। কারণ একজনের মধ্যে এই রোগ থাকলে সমস্যা নেই। কিন্তু দু’জনের হলেই সন্তানেরও এই রোগ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে জেনেটিক কাউন্সেলিং করে তবেই বিয়ে করা উচিত। 

এছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত পিরিয়ডের সঙ্গে মেদ ও ব্রণের সমস্যা থাকলে অর্থাৎ বেশি মাত্রার পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ থাকলে এবং ঘন ঘন প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগ সারিয়ে ফেলা জরুরি। না হলে গর্ভসঞ্চারে অসুবিধা হতে পারে। 

হবু স্বামীর কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করান। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে শুক্রাণুর গুণমান যাচাই করে নিতে পারেন। জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর ক্ষতি হতে পারে। কাজেই এসব খাবার বন্ধ করুন। ওজন খুব বেশি হলে ক্ষতি হতে পারে শুক্রাণুরও। কাজেই কম ক্যালোরির সুষম খাবার খেয়ে, ব্যায়াম করে ওজন কমান। সুস্থ শরীরে বিএমআই যেন ৩০-এর নিচে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। 

অতিরিক্ত মদ, সিগারেট এবং টেনশন থেকেও ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি। কাজেই এখন থেকেই নেশা ছাড়ার চেষ্টা করুন আর টেনশনকে দূরে রাখুন। আর কোনো ওষুধ নিয়মিত খেলে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন তাতে ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর ক্ষতি হতে পারে কি না। যদি হয় তাহলে কী করণীয় তাও জেনে নিন।

এছাড়া গর্ভসঞ্চারের আগে কী কী সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত সে সম্পর্কে গাইনী বিশেষজ্ঞরা যা বলেন চলুন সেগুলো জেনে নেয়া যাক-

> স্বামী–স্ত্রী ওজন কম রাখার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে স্ত্রীর। শরীরচর্চা করুন। মন শান্ত রাখুন।

> ঘরে বানানো কম ক্যালোরির সুষম খাবার খান।

> মদ্যপান ও ধূমপান করবেন না। সন্তান ধারণের সময়ে এই দুটিই বেশি ক্ষতিকর, বিশেষ করে জটিলতা থাকলে তো এসব আরো সমস্যা তৈরি করে।

> উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে এনে গর্ভসঞ্চারের কথা ভাবুন। ডায়াবেটিস বা হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে চিকিৎসা নিন।

> যৌন রোগের আশঙ্কা থাকলে রক্ত পরীক্ষা করে ভালো চিকিৎসা নিন।  কিছু যৌন রোগ ক্রনিক হয়ে গেলে বন্ধ্যাত্বও হতে পারে। তাই সাবধান থাকুন। 

> এইচআইভি টেস্ট করান। রিপোর্ট পজিটিভ এলে কীভাবে কী করতে হবে তা বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে তারপরই আগান।

> নারীদের রুবেলার প্রতিষেধক নেয়া জরুরি, স্ক্রিনিং টেস্ট করিয়ে প্রয়োজন হলে এমএমআর টিকা দিয়ে ৩ মাস অপেক্ষা করার পর গর্ভসঞ্চারের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।

> নারীরা ৪০০ মাইক্রোগ্রাম করে ফলিক অ্যাসিড খান। মাল্টিভিটামিনও খেতে পারেন। তবে অ্যানিমিয়া না থাকলে আয়রন সাপ্লিমেনন্টের দরকার নেই। 

> চিকেন পক্সের টেস্ট করান। রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে প্রতিষেধক দেয়ার পর তবেই গর্ভধারণের চিন্তা করুন। না হলে গর্ভপাত, সময়ের আগে প্রসব ও সন্তানের জন্মগত ত্রুটি থাকার আশঙ্কা থাকে।

> পরিবারে কোনো জেনেটিক অসুখ থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চলুন। প্রয়োজনে ক্রোমোজোমাল স্টাডি করে তবেই আগান।