আন্দোলন ও শৈশব
মানিকগঞ্জ বার্তা
প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২০

‘দেয়ালির আলো মেখে নক্ষত্র গিয়েছে পুড়ে কাল সারারাত
কাল সারারাত তার পাখা ঝ'রে পড়েছে বাতাসে
চরের বালিতে তাকে চিকিচিকি মাছের মতন মনে হয়
মনে হয় হৃদয়ের আলো পেলে সে উজ্জ্বল হ’তো।’ – শক্তি চট্টোপাধ্যায়
শান্তির সময়ে শিশুদের বয়স দ্রুত বাড়ে না। অর্থাৎ মন্থর সময়ে তাদের মানসিক বৃদ্ধির গতি উল্লেখযোগ্য নয়। তবে আন্দোলন, যুদ্ধ, এমনকি দুর্ভিক্ষের সময়কালেও শিশুদের মানসিক বৃদ্ধি খেয়াল করার মতো। যদিও এই সময়গুলোতে তাদের দিকে মনোযোগ দেয়ার মতো কেউই থাকে না।
কারণ এই বিশেষ সময়গুলোতে বড়দের মনোযোগ বা নিবিষ্টতা থাকে অন্যত্র। যেগুলোর উপাদানগুলোই স্বাভাবিক সময় থেকে ভিন্নতর। এটা এমন সময় যখন মানুষের মৌলিক অধিকারের বোধগুলোও ম্লান হয়ে আসে। অথবা সুপ্ত রূপ ধারণ করে। ফলে শিশুরা উপেক্ষিত হয় সবচেয়ে বেশি। এবং তারা তাদের স্বভাবগত শিশুসুলভ বৃত্তি সমূহকে লালন করতে সক্ষম হয় না।
আমার ধারণা এটাই প্রকারান্তরে তাদের দ্রুত মানসিক বৃদ্ধির কারণ। সময় তাদেরকে বাধ্য করে বড়দের উপযাচক অথবা বড়দের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে নিজেদের বৃদ্ধিকে গতিময় করে তুলতে।
খেলাধুলা করা শিশুদের অন্তর্গত স্বভাবের অংশ। কখনোই খেলাধুলাকে তারা পরিত্যাগ করতে সক্ষম নয়। শান্তি বা যুদ্ধ, কোনো সময়েই না। এ কারণেই আপদকালীন সময়ে তাদের খেলাধুলায় ভিন্নতা আসে। এমনকি খেলাধুলার উপকরণ সমূহেও। যেমন তার হাতের পুতুল প্রতিস্থাপিত হয় খেলনা অস্ত্র দিয়ে, মাটির ঢেলা পরিবর্তিত হয় প্রতীকী গ্রেনেডে! অন্য সময়ে ঘাসফড়িঙের পিছন পিছন ছুটতে পছন্দ করলেও যুদ্ধের সময়ে সে কাগজের বোমারু বিমান তৈরি করতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করে। এমনকি ছবি আঁকার ধরণ বদলে যেতে পারে তার। শিশু তার কলমের আচড়ে একটানে এঁকে ফেলতে সক্ষম হতে পারে স্বৈরাচারীর বিকৃত মুখ। পটুয়া কামরুল হাসানের নৈপুণ্য দিয়ে।
আমার জন্ম ১৯৬৫ সালে। ১৯৭১ সনে আমি ‘ছোট ওয়ান’ থেকে ‘বড় ওয়ানে’ পড়ি। যদিও তখনো আমার ভেতরে পরিপূর্ণভাবে অক্ষরজ্ঞান সৃষ্টি হয়নি। ‘সবুজ সাথী’ নামক স্বপ্নের ছড়া বই থেকে কবিতা আর অঙ্ক শিখি একসঙ্গে। – ‘পিঁপড়া পিঁপড়া কয়টা ডিম? – ১ টা, ২ টা, ৩ টা ডিম’। এই সময়ের পূর্ব থেকেই আমার শৈশব আমাকে ছেড়ে যাই যাই করছিলো। কারণ একটা উপদ্রুত সময় আমাদের পুরো দেশকে তখন গ্রাস করে বসেছিলো এবং আমাকে দ্রুত শিশু থেকে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত করে তুলছিলো!
১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ সাল। শেখ মুজিবুর রহমান ঔপনিবেশিক পাকিস্তানী শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেছেন। ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্য ছাত্র গোষ্ঠী ১১দফা প্রনয়ন করে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এই আন্দোলন ক্রমশ রূপ নিচ্ছে গণ আন্দোলনের। আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করেছে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা।
আমার স্মৃতির সময়কাল ১৯৬৯ সাল। আমার ছোট চাচা ঝাড় কাটা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। গণঅভ্যুত্থাণ তথা ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি যমুনা তীরের গরু চোর নিধন অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। ফলে পুলিশের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্যে একদিন তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেন। কোথায় আমরা জানি না। তবে উনার এই যাত্রা বা অগ্যস্ত যাত্রা আমরা যারা শিশু বা কিশোর তাদেরকে রাতারাতি বয়স্ক মানুষ বানিয়ে দিলো! আমরা সকল শিশুতোষ শব্দ ভুলে গেলাম। আমাদের অভিধান পূর্ণ হয়ে উঠলো নতুন নতুন শব্দে। ছয় দফা আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন, ১৪৪ ধারা, হরতাল, অ্যারেস্ট ইত্যাদি ইত্যাদিতে।
আমার স্পষ্ট খেয়াল আছে আমার ছোট চাচা বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছেন। তাকে ঘিরে আমাদের পুরো বৃহত্তর পরিবারে শোকের মাতম। আমার বাবা ক্রুদ্ধ নয়নে চাচার দিকে তাকিয়ে আছেন। বড় ফুপু হাউমাউ করে কাঁদছেন। তিনি যমুনা তীরের ‘গোবিন্দির চর’ থেকে এসেছেন। আসার পথে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে পুরো জনপদকে জানিয়ে এসেছেন যে আমার চাচা পালিয়ে যাবেন। আমার দ্বিতীয় শ্রেণি অতিক্রম করা দাদা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন সন্তানের দিকে। নিশ্চুপ ভাবে। হয়তোবা নিজের শৈশব বা কৈশোরের কথা মনে পড়ছে তার! ১৯২০-২২ সাল। গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন। অন্য সকল ছেলেদের সঙ্গে তিনি স্কুল থেকে বেরিয়ে এসেছেন। আর কোনোদিন প্রত্যাবর্তন করবেন না জেনে! আমার দাদী সুর করে কাঁদছেন। তার সন্তান কী করে সে সম্পর্কে তার কোন ধারণাই নেই! তবে তিনি তার সন্তানকে নিয়ে এই বিপদসঙ্কুল মুহূর্তেও প্রবলভাবে গর্বিত। অদৃশ্য কারো দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে কান্না আর গালি মিশ্রিত শব্দমালা ছুড়ে দিচ্ছেন। সুর করে। আমরা সকল শিশু কিশোরেরা অবাক নয়নে এই সমস্ত বয়স্ক বিষয় সমুহ দেখছি আর গিলছি।পরের দিন থেকে আমাদের সকল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে চাচার এবং তার বন্ধুদের ‘দ্য গ্রেট এস্কেপ’!
২৪ জানুয়ারি ১৯৬৯ সাল। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করেছে। রাজপথের মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ। নিহত এক উত্তাল কিশোর। নাম মতিউর রহমান। নবকুমার ইনস্টিটিউশনের নবম শ্রেণির ছাত্র। মুহূর্তেই উত্তাল হয়ে উঠলো ঢাকা থেকে বাংলার প্রত্যন্ত জনপদ। তৎকালীন পাকিস্তানের স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার বাধ্য হলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব আসামিকে মুক্তি দিতে!
তিন মাস অথবা ততোধিক কাল। চাচা প্রত্যাবর্তন করলেন। সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া দুইজন সহপাঠী। তারা নাকি রাতের বেলায় লোকালয় ছেড়ে যমুনা পাড়ের চরের বালিতে শুয়ে থাকতেন। আপাদমস্তক সাদা কাপড়ে আবৃত হয়ে। চাঁদের আলোতে! পুলিশ বা সেনাবাহিনীর রক্তচক্ষুর বাইরে থাকার জন্যে।
আমাদের বাড়িতে আনন্দের জোয়ার। বাইবেলের উড়নচণ্ডী নষ্ট সন্তানের গৃহে প্রত্যাবর্তনের মতো। পিতা তার অনুগত সন্তানদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে পালের সবচেয়ে সতেজ মেষটাকে জবাই করছেন। দাদা-দাদীর চোখে আনন্দাশ্রু। আমরা শিশুরাও আনন্দিত।
- বাংলাদেশকে বাসযোগ্য করতে ব্যবস্থা নিচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
- দৃশ্যমান ও অনুকরণীয় বাংলাদেশের উন্নয়ন
- এক দরে ডলার কেনা বেচা করবে ব্যাংক
- পদ্মা সেতুতে বদলে যাচ্ছে ফরিদপুর
- চট্টগ্রামে সেনা ক্যাম্পগুলোতে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে
- অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ
- আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ শনিবার ঢাকায় পৌঁছাবে
- আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
- রাজধানীতে প্রভাষক-ছাত্র অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে
- কুড়িয়ে পাওয়া ৪২ হাজার টাকা ফেরত দিলেন সাংবাদিক সিজেল
- সাভারে যথেচ্ছা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার রোধে এখনই সময়
- সাভার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা
- সাইবার পুলিশের নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে প্রতারণা, গ্রেফতার ২
- অনিবন্ধিত দুই ক্লিনিক সিলগালা
- দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে দুই ছিনতাইকারী গ্রেফতার
- সেই কলেজছাত্রী নিরাপত্তাহীনতায়, হুমকি-হয়রানির অভিযোগ
- লিবিয়ার বন্দিদশা থেকে দেশে ফিরলেন ১৬০ জন
- মির্জাপুরে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কেন্দ্র
- বাংলাদেশে কম্বাইন হারভেস্টার তৈরি করবে জাপানি প্রতিষ্ঠান
- বাংলাদেশের সভাপতিত্বকালেই সিভিএফ ন্যায্য কণ্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত
- ইভিএম ম্যানিপুলেট করা অসম্ভব: ড. জাফর ইকবাল
- ইউক্রেনে নিহত হাদিসুরের পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ ডলার
- উন্নয়নে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
- নবাবগঞ্জ ছাত্রলীগের সভাপতি সম্রাট, সম্পাদক সোহান
- ধামরাইয়ে আগুনে পুড়ল ১২ ঘর, ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি
- ব্যস্ত সড়কে সুয়ারেজের পানি, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী
- কেরানীগঞ্জে অস্ত্রসহ ছয় ডাকাত সদস্য আটক
- ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ৩ যুবক গ্রেফতার
- বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় চালক নিহত
- গাজীপুরে কিশোরীকে দেড় মাস আটকে রেখে ধর্ষণ
- হত্যার আগে স্ত্রীর কপালে চুমু দিয়ে মাফ চেয়ে নেন রুবেল
- আশুলিয়ায় কুকুরের মাংস দিয়ে কাচ্চি!
- সাভারবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন মঞ্জুরুল আলম রাজীব
- নির্বাচন প্রক্রিয়া কলুষিত করেছে বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী
- কক্সবাজারকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা অপরিহার্য
- বাংলাদেশের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে
- সেনাবাহিনীর পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে: সেনাপ্রধান
- স্তনে ট্যাটু, কটাক্ষের শিকার নুসরাত
- ফিনফিনে প্যান্টের ভিতর স্পষ্ট মালইকার অন্তর্বাস
- ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে: সজীব ওয়াজেদ জয়
- শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
- আমার শরীর বিক্রি করেই বড়লোক হয়েছে: পূজা
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
- ঈদের রাত থেকে যেসব এলাকায় থাকবে না গ্যাস
- বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা আকাশপাতাল
- কারা ফটকের সামনে থেকে ইয়াবাসহ বিদেশফেরত নারী আটক
- কনডম বিক্রি করতে গিয়ে অশ্লীল আক্রমণের শিকার নায়িকা
- গাজীপুরে দুই বাড়িতে ডাকাতের হানা
- `শেখ হাসিনা থাকতে এ দেশ কখনো শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান হবে না`
- সাভারের মহাসড়কে তীব্র যানজটের শঙ্কা