• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দোহারে নদীভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২২  

ঢাকার দোহারের পাশ দিয়ে বয়ে চলা পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে গত পনের দিনে বিলাসপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ঘর-বাড়িসহ ফসলি জমি। পানি বৃদ্ধি আর ভাঙনের কবলে পড়ে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, বর্ষার পানি আসার সাথে সাথেই ভাঙছে দোহারের বিলাসপুর, কতুবপুর, হাজারবিঘা, দেবিনগর, কুলছুরি হয়ে মধুরচর সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত। এরই মধ্যে তিন কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে পদ্মা কেড়ে নিয়েছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর। ইতোমধ্যে তারা ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আবার মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে প্রতিবেশিদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। 

প্রতিরাতে ভাঙন আতঙ্কে কাটছে এই অঞ্চলের মানুষের দিনরাত। বিলীন হয়েছে ফসলি জমি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে বিলাসপুর ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে ৭নং ওয়ার্ড। এমনটাই জানালেন পদ্মাপারের বাসিন্দারা। একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে পানি বৃদ্ধি। সবমিলে এই অঞ্চলের মানুষের জনদূর্ভোগ চরমে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন যদি এখনই কোন প্রকার উদ্যোগ না নেয়া হয় তাহলে তাদের যাওয়ার কোনো যায়গা থাকবে না।

ভাঙন কবলিত শেফালি বেগম ৭০ জানান, বাড়ি-ঘর ভাঙা গেলে জনপ্রতিনিধিরা আহে পাঁচ কেজি চাল নিয়া আমাগো দিতে। আর ভোটোর আগে দেয় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। আমরা ত্রাণ চাই না, চাই ভাঙন থেকে মুক্তি।  

কৃষক ইসলাম মিয়া জানান, বাড়ি-ঘড়সহ ফসলি জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। শুনছি সরকার থেকে অনেক কিছু দেয় আমরা তো কিছুই পেলাম না। 

বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ চোকদার বলেন, শীঘ্রই ভাঙনরোধে সকলকে নিয়ে সমস্যা সমাধানে কাজ করা হবে।  তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোবাশ্বের আলম বলেন, এরই মধ্যে দোহার-নবাবগঞ্জ ঢাকা-১ আসনের এমপি ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভাঙনকবলিত ১১০টি পরিবারের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে শুকনো খাবারের প্যাকেট, দুই মেট্রিক টন চাল ও নগদ তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।   

এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন। 

তিনি জানান, পদ্মা নদীর বাম তীরের সাড়ে ছয় কিলোমিটার সংরক্ষণে ২১৭ কোটি টাকা ব্যায়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় শীঘ্রই কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে। এছাড়া এ অঞ্চলের সাংসদ সালমান এফ রহমানের সাথে কথা বলে খুব দ্রুত ভাঙনরোধে কাজ করা হবে।