• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অবশেষে হলে উঠলেন জাবি ছাত্রীরা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত একটি ছাত্রী হলে আসন বরাদ্দসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির পর অবশেষে সেই হলে উঠেছেন ফজিলাতুন্নেছা হলের ছাত্রীরা।

উপাচার্যের আশ্বাসের পর শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে লটারির মাধ্যমে নবনির্মিত ছাত্রী হলটিতে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ছাত্রীদের। আসন বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে নতুন হলে উঠতে শুরু করেছেন তারা।

ছাত্রীদের দাবিগুলো ছিল, ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের জন্য নবনির্মিত ১৮ নং হলে তাদের আসন বরাদ্দের জন্য রাতের মধ্যেই লটারি করা, শনিবারের মধ্যে সবার আসন বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করা, হলে কোনো রাজনৈতিক ব্লক না থাকার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া ও নবনির্মিত হলটির নামকরণ ফজিলাতুন্নেছা করা।

ফজিলাতুন্নেছা হলের ছাত্রীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ফজিলাতুন্নেছা হলে ছাত্রীদের তীব্র আসন সংকট থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংকট নিরসনে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। একাধিকবার হলের আসন সংকট নিরসনের দাবিতে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হলেও এর সমাধান করেনি হল প্রশাসন।

আসন সংকট নিরসনসহ চারদফা দাবি আদায়ে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে হলের সামনে জড়ো হন অর্ধশতাধিক ছাত্রী। পরে তারা একই দাবিতে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিল করে তারা উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসম ফিরোজ উল হাসান সেখানে উপস্থিত হন। তারা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখেন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলম বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি শনিবারের মধ্যে আসন সংকট নিরসনের আশ্বাস দিলে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান। পরে শনিবার নবনির্মিত ১৮নং হলে লটারির মাধ্যমে ছাত্রীদের আসন বরাদ্দ দেয়া হয়।

ফজিলাতুন্নেছা হলের ছাত্রী ইতি আক্তার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা হলের আসন সংকটসহ নানা সমস্যার বিষয়ে হল প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ও ৫০ তম ব্যাচের প্রায় ২৫০ ছাত্রীকে রাখা হয়েছিল শিক্ষকদের আবাসিক কোয়াটারে। বাধ্য হয়েই আমাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে হয়েছে।’

পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদা বিনতে মৌ বলেন, দীর্ঘদিন গণরুমে কাটানোর পর অবশেষে একটা সিট (আসন) পাইলাম। নতুন হলে একটি লিফট চালু থাকায় ওঠানামায় একটু সমস্যা হচ্ছে। তারপরও সিট পাওয়ায় ভালো লাগছে।

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রিশা এরিন বলেন, ‘দীর্ঘ অপেক্ষার পর হলে সিট পেলাম। সকালে লটারির মাধ্যমে আমাদের নতুন হলে সিট (আসন) দেয়া হয়। এরপর সবাই সব জিনিসপত্র নিয়ে আজই নতুন হলে চলে যাচ্ছি।’

ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, নবনির্মিত হলে ছাত্রীদের আসন বরাদ্দের বিষয়টি আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ছাত্রীদের মাঝে কেউ একজন তাদের আগে নতুন হলটিতে অন্য হলের ছাত্রীদের আসন বরাদ্দ দেয়া হবে এমন গুজব ছড়ালে তারা বিক্ষোভ প্রকাশ করে। পরে তাদের বুঝিয়ে বললে তারা ভুলটি বুঝতে পারে। অনেক আগেই ফজিলাতুন্নেছা হলটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে এ হলেই ছাত্রীদের রাখতে হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘শনিবার সকাল ১০টার দিকে লটারির মাধ্যমে সব ছাত্রীর নতুন হলে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নতুন হলটির নামকরণ প্রশাসনিকভাবে কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে করতে হবে। আমরা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করব।’