• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পুরান ঢাকা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৩  

ভূমিকম্পের ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। যদি দেশে উচ্চমাত্রায় ভূমিকম্প হয়, তাহলে ঢাকায় ভয়াবহভাবে ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে পুরান ঢাকা। কারণ এখানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ভবন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারবিষয়ক কর্মশালায় এসব কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান। কর্মশালায় আগত অতিথিরা দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে তাদের মতামত দেন।

এসময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, প্রতি বছর ঢাকায় ১০ হাজারের মতো নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এদের অধিকাংশ বিল্ডিং কোড অনুসরণ করছে না। সে কারণে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পে এসব ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুরান ঢাকায় অনেক অপরিকল্পিতভাবে ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ঝুঁকি রয়েছে বেশি।

মিজানুর রহমান জানান, প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ড, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভূমিকম্পের মতো ঘটনা ঘটার ২০-৩০ সেকেন্ড আগে যদি আমরা পূর্বাভাস পাই, তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বন্যা ও সাইক্লোনে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা কমে গেছে। এ বিষয়ে সফল হলেও ভূমিকম্প মোকাবিলায় আমাদের দক্ষতা নেই। তুরস্ক ও সিরিয়ার পর এশিয়ার অনেক দেশে বিভিন্ন মাত্রায় ভূমিকম্প দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে এই ঝুঁকির মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। একই সঙ্গে জরুরি কার্যক্রম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাথমিক শনাক্তকরণের মাধ্যমে দুর্যোগের ঝুঁকি নিরসন করতে হবে। বর্তমানে শহরে নানা কারণে অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা বেড়েছে। বেসরকারি খাতে ঘটছে বেশি।

আগুন ও পানি শনাক্তকরণ করে অগ্নিকাণ্ড এবং ভূমিকম্পের পূর্বাভাস করা গেলে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমে যাবে বলে জানান বক্তারা। তারা জানান, ২০২১ সাল থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকাকে চারটি ভাগে ভাগ করে দুর্ঘটনার পূর্বাভাস দেওয়া হবে।

একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অল্প খরচে সিসিটিভির মাধ্যমে পাবে এর সুবিধা। কোথাও অগ্নিকাণ্ডের আগে সেখানে ধোয় নির্গমন হলেই ব্যক্তির মোবাইলে সংকেত দেওয়া হবে। সেন্ট্রালি একটি মূল সার্ভার থাকবে সেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ হবে। শুরুতে শুধু ঢাকার মধ্যে নিশ্চিত করা হবে এ সুবিধা। ক্রমান্বয়ে অন্যান্য জেলা এ সুবিধার আওতায় আনা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে একশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করা হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউমেনিটেরিয়ান এইডের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে প্রকল্পটি।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাপ্পা গঞ্চিকারা, ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সাড়াদান ইউনিটের প্রধান মাসুদ রানা, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান সাদিয়া হামিদ কাজী, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও উদ্যোক্তা প্রমুখ।