• ||

  • ||

যা বললেন ইসি আলমগীর এমপি আনারের আসনে নির্বাচন নিয়ে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২৪  

একজন সংসদ সদস্যের যদি সাধারণ মৃত্যু কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে তাহলে সেই ক্ষেত্রে ওই আসনে কী হবে? এটি সংবিধানের কোথাও উল্লেখ করা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, সংবিধানের ৬৬ বা ৬৭ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে আমরা কোনো কিছু উল্লেখ দেখি না। মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে এটি আমি এ পর্যন্ত সংবিধানে দেখিনি। সাধারণত এটি ধরে নেওয়া হয়, যদি সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন তার পক্ষে তো আর সংসদে আসা সম্ভব নয়। এটি ধরে নিয়েই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয় এবং আমাদেরকে যখন জানানো হয়, আমরা সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন করি। সোমবার (৩ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার সম্প্রতি কলকাতায় খুন হয়েছেন বলে খবর প্রকাশ হয়। এ ক্ষেত্রে ওই আসনে কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমীগর বলেন, স্বাভাবিক বা অপমৃত্যু যাই হোক না কেন এটা হলো সংসদের দায়িত্ব। স্পিকার যখন মৃত্যু সনদ পাবেন তখন সংসদ আসনটি শূন্য ঘোষণা করবেন। শূন্য ঘোষণা করলে গেজেট আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এরপরে আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব। সংসদ সদস্যের মৃত্যু কারণে আসন শূন্য হবে এটি সংবিধানে উল্লেখ নেই কেন জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, এটি কেন উল্লেখ করা হয়নি এটি তো আমি বলতে পারব না। সংসদ সচিব সাহেবকে জিজ্ঞেস করবেন, ওখানে যারা সংসদ সদস্য আছেন, ওনারা বললে বলতে পারেন। সংবিধানে থাকলে ভালো হতো। যেহেতু টানা ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে স্পিকার সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করেন। যদিও সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা নেই মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনানের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনি মারা গেছেন কি, মারা যাননি সেটি তো আমরা জানি না। আমরা অফিসিয়ালি জানি না। এটি সংসদ থেকে গেজেট করে যখন জানাবে তখন আমরা জানতে পারব। উনি মারা গেছেন কি না। সংসদ যদি আসনটি শূন্য ঘোষণা করে তখন আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব। সবকিছু স্পষ্ট করে লেখা না থাকলে যে কাজ করা যাবে না তাতো নয়। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত গেজেট না পাবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা নির্বাচন করতে পারব না। ধাপে ধাপে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে ইসি বলেন, কমিশন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আমাদের বক্তব্য হলো- পদ্ধতি যেটাই হোক না কেন, পদ্ধতি ঠিক করবে রাজনৈতিক দল, সংসদ, ভোটার তারাই ঠিক করবেন। যে পদ্ধতিই অনুসরণ করা হোক না কেন, সংবিধানে যে অবস্থা থাকবে, সেই অবস্থার মধ্যে আমরা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্বাচনটা সুষ্ঠু করার। ওটা নিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দ নেই।

কমিশনের একজন মাথা যখন চিন্তা করে ধাপে ধাপে জাতীয় নির্বাচন হলে ভোটটা ভালো হবে। কেন মনে হলো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওইটা কমিশনের কোনো সিদ্ধান্ত হিসেবে বলেননি উনি। উনি যেটা বলেছেন সেটা হলো যে, একাডেমিক ডিসকাশনের ক্ষেত্রে উনি মনে করেন সেইটা। এ রকম সিদ্ধান্ত দেয়নি যে কমিশন মনে করে এই পদ্ধতিটা ভালো। সেটি ব্যক্তিগত আলোচনা। ইভিএমের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, সিদ্ধান্ত নয়, ইভিএমের ভালো দিকগুলো নিয়ে ব্যক্তিগত আলোচনা হয়েছে যে, ইভিএমে বিশ্বাস করা উচিত কারণ ইভিএমে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন হওয়ার পরে কিন্তু কোনো প্রার্থী বলেনি নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। এই ধরনের একটি অভিযোগও আমরা পাইনি। সব রাজনৈতিক দল যদি ইভিএমের  ভোটের বিষয়টি সমর্থন করত তাহলে ভালো হতো সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।  

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধাপে ধাপে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা আছে কী? জবাবে তিনি বলেন, এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ অপছন্দের বিষয় নয়। এটা হলো জাতীয় সংসদ, দেশের রাজনৈতিক দল যে পদ্ধতি নির্ধারণ করবেন, কমিশন সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচন করবে। কমিশন কোনো গাইডলাইন দিতে পারে না, সুপারিশ করতে পারে না। বরং সংবিধানে কি আছে, সে অনুযায়ী কমিশনকে ফলো করতে হবে। সংবিধান রচনা করবেন মহান জাতীয় সংসদ। মহান জাতীয় সংসদে কারা আছেন? সংসদ সদস্যরা। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই ঠিক করে দেবেন যে, এই দেশের শাসন ব্যবস্থা কেমন হবে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কেমন হবে, সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে, নির্বাচন ব্যবস্থা কেমন হবে।