• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মানিকগঞ্জের পদ্মায় জেগে ওঠা নতুন চর অতিথি পাখিতে মুখর

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২  

প্রকৃতিতে শীত আসতে না আসতেই মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মায় নতুন জেগে ওঠা চরাঞ্চল নানা প্রজাতির অতিথি পাখিতে মুখরিত।

সুদূর হিমালয় থেকে সাইবেরিয়া; তীব্র ঠান্ডার দেশ থেকে একটু উষ্ণতার খোঁজে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে পাখিরা এ দেশে আসে।

শুধু শীত এলেই তাদের দেখা মেলে। সেজন্যই আমাদের দেশে এদের অতিথি পাখি নামে ডাকা হয়। পাখিগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই চোখ জুড়ানো তাদের খুনসুটি!  

স্থানীয়রা জানান, হরিরামপুরের বয়ড়া ইউনিয়নের পদ্মায় নতুন জেগে ওঠা কুমারদহ বয়ড়া চর এবং উজান বয়ড়া চর এখন অতিথি পাখির দখলে।

বালু বাতান, জোড়ালী, কাদা খোঁচা, বাবু বাতানসহ নানা প্রজাতির অতিথি পাখির দেখা মেলবে এ দুই চরে।

কখনো জলে ডুব-সাঁতার দিচ্ছে; কখনো ঝাঁক বেঁধে মুক্ত আকাশের নীলে উড়ে বেড়াচ্ছে।

হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাট থেকে ট্রলারে ২০-২৫ মিনিট গেলেই চোখে পড়বে পদ্মায় জেগে ওঠা নতুন চর।

সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে সূর্যের সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়লে এসব চরে পাখিদের কিচিরমিচির বেড়ে যায়। দিন শেষে ঝাঁক বেঁধে ফেরে আশপাশের অস্থায়ী নীড়ে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও পাখি বিশেষজ্ঞ কামরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মানিকগঞ্জের চরাঞ্চলের আসা পাখিগুলো ছোট। এদের মধ্যে বালু বাতান, জোড়ালী, কাদা খোঁচা, বাবু বাতানই বেশি।

“মূলতঃ এ সময়টাতে মেরু অঞ্চল, ইউরোপ, সাইবেরিয়া, এশিয়ার কিছু অঞ্চল এবং হিমালয়ের আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত বরফ পড়ার কারণে তুলনামূলক কম শীতের বাংলাদেশে খাদ্য ও নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় চলে আসে এসব পাখি।”

গত শনিবার ট্রলারে চড়ে পদ্মার মাঝে জেগে ওঠা কুমারদহ বয়ড়া চর এবং উজান বয়ড়া চরের পাখি দেখেন আইন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব তৈয়বুল আজহার উজ্জ্বল। 

তিনি বলেন, “প্রকৃতির কাছে গেলে ভালো লাগবেই। পাখির ওড়াউড়ি আপনাদের ভালো লাগবেই। হাজার হাজার পাখি ওড়াউড়ি করছে নতুন চর দুটিতে।”

শীতের শুরুতে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এদেশের হাওড়-বাওড়, চরাঞ্চল, লেক ও জলাশয়গুলোতে অতিথি পাখির আগমনের সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু লোক পাখি শিকারে তৎপর হয়ে ওঠে।

এ বিষয়ে পাখি ও পরিবেশ লালন করি (পালক) সংগঠনের কার্যকরী সদস্য, মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম সারোয়ার ছানু বলেন, “পাখি হত্যা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। এ বিষয়ে আইন আছে। পাখি হত্যার মত বেআইনি কাজ যারা করবে তাদের ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।”

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রকৃতির অলংকার পাখি; এদের ধ্বংস করা মানে পরিবেশকে ধ্বংস করা। অতিথি পাখিরা যেন মুক্ত আকাশে, খালে, বিলে, হাওড়-বাওড়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে অবশ্যই সে ব্যবস্থা করতে হবে।”