• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

তিশা-ইরফানকে মন্দিরে নিয়ে বলি দেয়ার হুমকি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২০  

ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ টেলিভিশন কাহিনিচিত্র ‘বিজয়া’ নির্মাণ করায় নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ, গল্পকার শোয়েব চৌধুরী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে মন্দিরে নিয়ে বলি দেয়ার হুমকি দিয়েছে অরুপ বনিক সহ বেশ কয়েক জন ফেসবুক ব্যবহারকারী।

এ ছাড়াও সনাতন ধর্ম ও ইসলামবিরোধী একটি চক্র অশালীন মন্তব্য করে হত্যার হুমকি দেয়। ‘বিজয়া’ কাহিনিচিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন নন্দিত অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। এতে তিশার বিপরীতে অভিনয় করেছন ইরফান সাজ্জাদ।

শুটিংয়ের কয়েকটি স্থিরচিত্র সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলে বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদ, নুসরাত ইমরোজ তিশা ও গল্পকার শোয়েব চৌধুরীকে হত্যার হুমকি দেয়।

এদিকে, নাটকের মাধ্যমে সনাতনী সম্প্রদায়কে কটাক্ষ এবং ধর্মান্তকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেয়ার অভিযোগ করে অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ও তার একটি নাটকের সহ-অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাদের আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। সোমবার (১২ অক্টোবর) লিটন কৃষ্ণ দাসের পক্ষে এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী সুমন কুমার রায়।

লিগ্যাল নোটিশপ্রাপ্তির ৭ দিনের (১২ অক্টোবর থেকে শুরু) মধ্যে সনাতন সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ ও সনাতন ধর্ম অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিতর্কিত ‘বিজয়া’ নাটকটি প্রত্যাহার করতে নোটিশে উল্লিখিত অভিযুক্তদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে দেশে প্রচলিত যে কোনো দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের আশ্রয় নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

এ বিষয়ে জানতে ‘বিজয়া’ নাটকের পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এমন নোটিশ হাস্যকর। কারণ, এখন পর্যন্ত নাটকের কোনো কিছুই আমরা প্রকাশ করিনি তারা কীভাবে নাটকের গল্প বুঝলেন? আগে তারা নাটকটি দেখুক তারপর মন্তব্য করুক। দর্শকের জন্য নাটক নির্মাণ করি। ধর্মে আঘাত লাগে এ রকম কাজ করার প্রশ্নই উঠে না। তা ছাড়া নুসরাত ইমরোজ তিশা বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি সনাতনী সম্প্রদায়কে কটাক্ষ এবং ধর্মান্তকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার মতো কোনো কাজ করার প্রশ্নই আসে না।’

গল্পকার শোয়েব চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নাটকের পোস্টার ও টিজার কিছু্ই প্রচার হয়নি। তারা ট্রায়াল ভার্সন কোথায় পেলেন? তবে কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কেউ শীর্ষ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ক্রাউনের পিছু লেগেছে। আমার তো মনে হচ্ছে কেউ ক্রাউনের কাজে হিংসা করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের ষড়যন্ত্র করছেন। এমন যদি কেউ ভেবে থাকেন তাহলে ভুল ভেবেছেন। শুটিংয়ের পর থেকেই বেশ কয়েকজন আমাকে, অভিনয়শিল্পী ও নাটকের টিমকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কয়েকজনের তথ্য সংগ্রহ করেছি। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজার বিশেষ নাটক বিজয়া-এর বিরুদ্ধে অকারণেই ক্ষোভ দেখাচ্ছে কিছু লোক। পুরো গল্পটা না জেনেই তারা অশালীন মন্তব্য করছে। আগে নাটকটি দেখুক তারপর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করুক। সবাইকে বলছি, আগে নাটকটি দেখুন। তারপর আপনারাই অনুতপ্ত হবেন! আরেকটা কথা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাকে বা এই নাটকের কাউকে হুমকি দিয়ে ফৌজদারি অপরাধ থেকে বিরত থাকুন।’

তিশা বলেন, নোটিশের ব্যাপারে অবগত নই। একটা কথা বলতে চাই ধর্মে আঘাত লাগে এ রকম কাজ কখনো করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। নাটকটি প্রচার হলে আগে দেখুন তারপর মন্তব্য করুন। কোনো কিছু না জেনে মন্তব্য করা কি ঠিক?

এ প্রসঙ্গে জানতে ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্টের ডেপুটি সিইও তাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘বিজয়া’ নিয়ে অশ্লীল মন্তব্যকারী এবং হত্যা হুমকিদানকারীর বিরুদ্ধে ক্রাউন কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। এরই মধ্যে বেশকিছু অপরাধীর পরিচয় চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।