• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দুর্যোগপ্রবণ হয়েও বাংলাদেশ আজ রোল মডেল : প্রতিমন্ত্রী

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২১  

পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ হয়েও বাংলাদেশ আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘রোল মডেল’ হিসেবে গণ্য বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশ টুয়ার্ডস সাইক্লোন রেজিলিয়েন্স থ্রো দ্য লিগ্যাসি অব বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমি-ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন ১৯৭৫ সালে, তার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তা স্তিমিত হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করার পর দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমনে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ হয়েও আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় রোল মডেল হিসেবে গণ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭০ সালে এই ভূখণ্ডে আঘাত হানে এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। এই দুর্যোগের ব্যাপারে আগাম কোনো সতর্কতাই দেয়নি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। আর এই ঝড় চলে যাওয়ার পর ত্রাণ ও উদ্ধার কাজেও সেভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়নি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী। এই ঘূর্ণিঝড়ে শোষক পাকিস্তানিদের তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতি চরম অবহেলা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। সেটা ছিল স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে সময় ১৯৭০ সালের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড ছেড়ে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবি তাজুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার পর উপকূলীয় অধিবাসীদের জানমাল ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি লাঘব করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটাকে সরকারি কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করেন। এভাবেই ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি পরিপূর্ণভাবে যাত্রা শুরু করে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এক নতুন মাত্রা লাভ করে। দুর্যোগ প্রস্তুতি, প্রশমন ও ব্যবস্থাপনার সাথে সাথে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিকশিত হয়েছে।


প্রধান আলোচক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে বিপন্ন মানবতার কল্যাণে যে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি ও নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের এই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে একটি দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম দেশে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের এই সাফল্যের কৌশল জানতে বিশ্ব মহলও উন্মুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, সিপিপির ৭৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে আগাম দুর্যোগ সতর্ক বার্তা প্রচার, অপসারণ ও উদ্ধার, ২০১২ সালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, প্রশাসনিক কাঠামো, বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, মুজিব কিল্লা সংস্কার ও নির্মাণ, দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি, নদী এবং উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ, মহামারি করোনা মোকাবিলা প্রভৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমনের এই প্রয়াস আজ বিশ্বমহলে প্রশংসিত।