• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পুড়িয়ে হত্যা, নেপথ্যে ২০ লাখ টাকা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২১  

সাভারের ব্যবসায়ী আহসান হাবিবকে গাজীপুরে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নুরুন নবী রনিকে সোমবার রাতে কালিয়াকৈর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতার আসামি সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, পাওনা ২০ লাখ টাকা চাইতে গেলে আহসান হাবিবকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। নুরুন নবী আরও সহযোগী অংশ নেয়।

 
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক মাস আগে পোশাক ব্যবসায়ী আহসান হাবীবের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মৃত্যু হয়। পাঁচ দিন পর ১২ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশ শনাক্ত করেন স্বজনেরা।
 
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গত সোমবার রাতে ওই ঘটনায় নুরুন্নবী ওরফে রনী (২৭) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। এরপর জানতে পারে পাওনা ২০ লাখ টাকা চাইতে গেলে আহসান হাবীবকে হাতুড়ির আঘাতে অচেতন করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
 
রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শেখ নাজমুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিআইডির গণমাধ্যম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।
 
সংবাদ সম্মেলনে শেখ নাজমুল আলম বলেন, সাভার ও আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে তৈরি পোশাক বিক্রি করতেন আহসান হাবীব। প্রতিষ্ঠানটি তার ভগ্নিপতির হলেও তা তিনি দেখাশোনা করতেন। ৭ মে সন্ধ্যায় পাওনা টাকা আদায়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরদিন ৮ মে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আহসান হাবীব নিখোঁজ থাকার বিষয়ে কালিয়াকৈর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

অভিযান তদারকি কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ৭ মে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার হরিণহাটি এলাকার একটি বাসার নিচতলায় আগুনে দগ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন। সেখানে ৮ মে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর তিনদিন পর আহসান হাবিবের লাশ শনাক্ত করে তার পরিবার। এই ঘটনায় নিহতের শ্যালক জাকারিয়া একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনার তদন্তে নেমে আসামি নুরুন নবীকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
 
তিনি আরও জানান, দগ্ধ অবস্থায় আহসান হাবীবকে যে বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পরিচয় গোপন রেখে এক কক্ষের সেই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন নুরুন্নবী। ঘটনার দিন কয়েকজনসহ নুরুন্নবী ব্যবসায়ী আহসান হাবীবকে নিয়ে বাসায় ঢোকেন। একপর্যায়ে তিন সহযোগীকে নিয়ে আহসান হাবীবকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। পরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আবার ঘরে তালা মেরে পালিয়ে যান। হাবীব মারা গেছেন ভেবে নুরুন্নবী বাসাটি তালা মেরেছিলেন। কিন্তু ওই কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হলে বাড়ির মালিক দরজা ভেঙে দগ্ধ অবস্থায় আহসান হাবীবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু কেউই তাকে চিনতেন না। 
 
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডির টিম। তদন্তে জড়িত আসামি সম্পর্কে তথ্য ও অবস্থান শনাক্ত করা হয়। সোমবার (০৭ জুন) রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি মো. নুরুন নবী ওরফে রনিকে গ্রেফতার করা হয়।
 
হত্যাকান্ডের ঘটনায় পলাতক সহযোগীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে অভিযান চলছে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।