গুড়ের প্রেমে পড়েছিলেন রানি এলিজাবেথ!
মানিকগঞ্জ বার্তা
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩
মানিকগঞ্জের হাজারি গুড়। নাম শুনলেই যেন জিভে জল চলে আসে। যার পরিচিতি রয়েছে দেশ-বিদেশে। শুধু তাই নয়, লোভনীয় স্বাদ আর মনমাতানো সুগন্ধে অতুলনীয় খেজুর রসের এই গুড়ের প্রেমে পড়েছিলেন ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ। রানি এ গুড় খেয়ে অভিভূত হয়ে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন ‘হাজারি’ লেখা পিতলের একটি সিলমোহর।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের ঝিটকা শিকদারপাড়া গ্রামের হাজারি পরিবার প্রায় ৩০০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় এ গুড় তৈরি করে আসছে। আগে অনেকেই এই গুড় তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকলেও নানা কারণে তারা পেশা ছেড়েছেন। তবে এখনো টিকে আছে ২২টি পরিবার। তাদের হাত ধরেই টিকে আছে হাজারি গুড়ের ঐতিহ্য।
মজার ব্যাপার হলো, এ গুড় স্থান পেয়েছে জেলার ব্র্যান্ডিংয়ে। কথায় আছে, লোকসংগীত আর হাজারি গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর। তবে দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমতে থাকায়, কমছে হাজারি গুড়ের উৎপাদন। এ কারণে দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও তা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
এছাড়া সাধারণ গুড়ের চেয়ে হাজারি গুড় তৈরিতে পরিশ্রম বেশি। গাছ কাটা, হাড়িধোয়া, রস জাল দেওয়া ও গুড় তৈরিসহ প্রতিটি ধাপেই রয়েছে নানা কৌশল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই শুরু হয় গাছি পরিবারের ব্যস্ততা। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রসভর্তি হাড়ি সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে আসেন। সেই রস মাটির চুলায় কড়াইতে ঢেলে জ্বাল দেওয়া হয়। এরপর মাটির একটি বিশেষ পাত্রে (স্থানীয়ভাবে জালা নামে পরিচিত) ফুটন্ত রস ঢেলে কাঠ কিংবা তালের লাঠি দিয়ে ঘুটা দেওয়া হয়। অনেকক্ষণ ধরে ঘুটার পর রস বাদামি রং হয়। এরপর সেই গুড় মাটির ছোট পাত্রে (সাজ) পাটালি বানানো হয়। এরপর হাজারি লেখা সিল দিয়ে বিক্রি করা হয়। আগে খোলাভাবেই হাজারি গুড় বিক্রি করা হতো। তবে বর্তমানে হাজারি প্রোডাক্টসের নামে প্যাকেটজাত করা হয়।
হাজারি পরিবারের সদস্য রহিজ হাজারি বলেন, প্রায় ৩০০ বছর আগে তাদের বংশের হাজারি প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে এ গুড়ের যাত্রা শুরু। একবার ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ বেড়াতে এসেছিলেন। তখন তার খাবার টেবিলে এই গুড় দেওয়া হয়েছিল। গুড় খেয়ে তিনি অভিভূত হয়েছিলেন। পরে উপহার হিসেবে হাজারি লেখা পিতলের একটি সিলমোহর উপহার দেন তিনি। এরপর থেকেই হাজারি গুড়ের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। পিতলের সেই সিলমোহরটি শামীম হাজারির কাছে সংরক্ষিত।
তিনি আরও বলেন, বহু বছর ধরে হাজারি পরিবারের সদস্যরাই এ গুড় তৈরি করে আসছি। কিন্তু অনেকেই এখন পেশা ছেড়েছেন। বর্তমানে হাজারি পরিবারের দুই সদস্যসহ ২২টি পরিবার এ গুড় তৈরির সঙ্গে জড়িত। শীতের এই সময় হাজারি গুড় তৈরি করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। হাজারি পরিবারের অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ হাজারি গুড় তৈরি করতে পারবে না। গুড় তৈরির পর পাটালির গায়ে হাজারি ব্র্যান্ডের সিল দেওয়া হয়। যাদের অনুমতি আছে একমাত্র তারাই এই সিল ব্যবহার করতে পারেন।
গাছি খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, হাজারি পরিবারের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই হাজারি গুড় তৈরির সঙ্গে জড়িত। এই গুড় তৈরিতে অনেক পরিশ্রম। গাছকাটা, হাড়িধোয়া, রস জ্বাল দেওয়াসহ গুড় বানানোর প্রতিটি ধাপেই বাড়তি কৌশল ও সতর্কতার প্রয়োজন হয়, যা সাধারণ গুড়ের পাটালি তৈরিতে লাগে না।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ পাটালি গুড়ের চেয়ে হাজারি গুড়ের পার্থক্য অনেক। সাধারণ পাটালি গুড় দেখতে লাল রং হয়। আর হাজারি গুড়ের রং হয় সাদা। যার ঘ্রাণটাই অন্যরকম। মুখে দেওয়ার পর গলে যায়। হাতের মুঠোতেই ভাঙা যায়।
রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, সারাবিশ্বেই হাজারি গুড়ের ব্যাপক চাহিদা। গুড় বাজারে তোলার সময়ই পাওয়া যায় না। আগে থেকেই অর্ডার হয়। তবে দিন দিন খেজুর গাছ আর গাছি সংকট দেখা দেওয়ায় গুড়ের উৎপাদন অনেক কমেছে। ফলে চাহিদা মতো গুড় সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে যাচ্ছে হাজারি গুড়। হাজারি গুড় টিকিয়ে রাখতে ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারিভাবে রাস্তার দুই পাশসহ বিভিন্ন জায়গায় খেজুর গাছ রোপণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে হাজারি গুড় ১ হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, এ জেলার ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে হাজারি গুড়। এই গুড় আর কোথাও তৈরি হয় না। স্থান দেওয়া হয়েছে জেলা ব্র্যান্ডিংয়েও। তাই গুড়ের গুণগতমান ও উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হাজারি নামে যেন কোনো ভেজাল গুড় বাজারে আসতে না পারে এজন্য ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান চলছে। পাশাপাশি ওই এলাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে খেজুর গাছ রোপণ করা হবে।
- জিআই সনদ পেল ১৪ পণ্য
- এক রাতে ৫ সেচ মেশিন চুরি
- মোদি ও রাহুলকে ইসির নোটিশ:আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ
- ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা আজ
- নারীসহ দালাল চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
- সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত মেট্রোরেল সংযোগ সম্প্রসারণের দাবি
- ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনার পরিকল্পনা’
- ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা
- কমান্ডার আরাফাত র্যাবের নতুন মুখপাত্র
- আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ বিজিপি-সেনাকে হস্তান্তর
- ৩ দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
- হিট স্ট্রোকে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
- কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাজতির মৃত্যু
- স্ত্রীকে কু*পি*য়ে জ*খ*ম করল পাষণ্ড স্বামী
- গরমেও চলছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা!
- দায়ীদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ
- দুই দিনে দুই মাদরাসাছাত্র নিখোঁজ
- খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
- বুবলির নায়ক সিয়াম
- প্রাবোওকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল ইন্দোনেশিয়া
- একই গাড়ির চাপায় চালক ও সহকারীর মৃত্যু
- কারাভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি কক্সবাজারে
- প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক পৌঁছেছেন
- নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা
- তৈফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
- এখনো শেষ হয়নি তিন মামলার বিচার
- দেশে ফিরবেন সেই ২৩ নাবিক
- ইসরায়েলের ‘কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না’
- জিবুতিতে ফের অভিবাসীদের নৌকাডুবি
- যাত্রা শুরু হলো মারামারি দিয়ে
- আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ বিজিপি-সেনাকে হস্তান্তর
- প্রাবোওকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল ইন্দোনেশিয়া
- একই গাড়ির চাপায় চালক ও সহকারীর মৃত্যু
- তৈফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
- স্ত্রীকে কু*পি*য়ে জ*খ*ম করল পাষণ্ড স্বামী
- বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৩ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে
- ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা আজ
- কারাভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি কক্সবাজারে
- স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার
- প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক পৌঁছেছেন
- বুধবার গ্যাস থাকবে না ১২ ঘণ্টা
- দেশে ফিরবেন সেই ২৩ নাবিক
- দুই দিনে দুই মাদরাসাছাত্র নিখোঁজ
- এখনো শেষ হয়নি তিন মামলার বিচার
- দায়ীদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ
- ইসরায়েলের ‘কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না’
- খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
- জিবুতিতে ফের অভিবাসীদের নৌকাডুবি
- গরমেও চলছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা!
- যাত্রা শুরু হলো মারামারি দিয়ে