• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সপ্তম দিনে গড়ালো জাবি শিক্ষার্থীর অনশন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৩  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণরুম বিলুপ্ত করাসহ তিনদফা দাবিতে সপ্তম দিনের মতো ‘অনশন’ কর্মসূচি পালন করছেন সামিউল ইসলাম প্রত্যয় নামে এক শিক্ষার্থী। এদিকে তার দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষক ও প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

শীঘ্রই অছাত্রদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য। তবে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী সামিউল। মঙ্গলবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে ‘অনশন’ কর্মসূচি পালন করছিলেন। এর আগে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খেলার মাঠে ‘অনশন’ কর্মসূচি শুরু করেন। প্রত্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৯তম ব্যাচ) ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে কাঁথা বিছিয়ে শুয়ে আছেন সামিউল। তার পাশে একটি প্ল্যাকার্ডে তিনটি দাবির কথা লেখা। সেগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে গণরুম বিলুপ্তি করা, অছাত্রদের বের করা ও গণরুমে অবস্থানরত বৈধ শিক্ষার্থীদের আসন নিশ্চিত করা।

এদিকে রোববার প্রত্যয়ের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি ও প্রগতিশীল শিক্ষকরা। এ সময় তারা হল থেকে গণরুম বিলুপ্তির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। পরে সন্ধ্যায় অনশনরত শিক্ষার্থী প্রত্যয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার ও প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান দেখা করেন। 

প্রত্যয়ের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রশাসন থেকে অছাত্রদের কক্ষে গিয়ে হল ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সামিউল ইসলাম প্রত্যয়য়ের অনশনস্থলে অবস্থান নেন মীর মশাররফ হোসেন হলের শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় তারা অনশনকারী শিক্ষার্থী ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি ও অশ্লীল গালিগালাজ করতে থাকেন। 

সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে অনশন করছি। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাস অনুযায়ী, আগামী সাত দিনের মধ্যে অছাত্রদের হল থেকে বের করলেই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবো। আমি কোনো হুমকিতে শঙ্কিত নই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ইতিমধ্যে হল প্রশাসন থেকে অছাত্রদের কক্ষে হল ছাড়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধ শিক্ষার্থীদের বের করার জন্য তালিকা তৈরির কার্যক্রম চলছে। শুরু থেকেই প্রত্যয়ের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সব ধরণের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে সবগুলো দাবি বাস্তবায়নের জন্য সময় চেয়েছি। কিন্তু প্রত্যয় আমাদের সময় দিতে রাজি হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, উপাচার্য স্যারের নির্দেশে হলগুলোতে অবস্থানরত অছাত্রদের তালিকা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আংশিক তালিকা হয়েছে। তবে অন্য হলগুলোর বিষয়ে প্রাধ্যক্ষদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানাতে পারবো।

উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘প্রত্যয়ের দাবিগুলো যৌক্তিক, তবে বাস্তবায়ন করতে সময় প্রয়োজন। ইতিমধ্যে গণরুম বিলুপ্তির জন্য নতুন হল চালু করেছি। নির্মাণাধীন হলগুলো চালু হলে এ সমস্যা থাকবে না। এছাড়া হলে অবস্থানরত অছাত্রদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি। তালিকা অনুযায়ী অছাত্রদের বের করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।