• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

গাছের কান্না!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০১৯  

কেউ বলছে বিরল ঘটনা। কেউ বলছে গাছের কান্না। আবার কেউ বলছে সৃষ্টিকর্তার কুদরতি কারবার। ঘটনাস্থলের কাছে যেতেই দেখা গেল বৃষ্টির পানির মতো টিপ টিপ করে পানি ঝরছে গাছ থেকে।

দিনাজপুরের বিরলে বিশাল ধর্ম্মপুর বন বীটের বনে সাতদাগ নামক এলাকায় চারটি গাছ থেকে সার্বক্ষণিক পানি ঝরছে। আর এ দৃশ্য দেখার জন্য উৎসুক জনতার ভিড় লেগেই থাকছে।

অনেকে দীর্ঘ অপেক্ষা করে গাছটির পানি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। তাদের ধারণা এ গাছের পানি সেবনে জটিল ও কঠিন রোগ থেকে আরোগ্য লাভ হবে।

যে গাছটি থেকে বেশি পানি ঝরছে তার বেড় প্রায় চার ফুট এবং লম্বা ১২ ফুটের মতো। এর ডাল পালা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পাতাগুলো দেখতে গোলাকার।

স্থানীয়দের অনেকে বলেন, এ গাছ আগে কখনো দেখিনি। এসেছি বিরল এ গাছটি দেখতে। তবে অনেকের দাবি গাছটির নাম শেখরেদারে। তারা আগে এ গাছ দেখেছেন।

এরই মধ্যে গাছটি নিয়ে গবেষণা কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে।  দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাছটির ডাল-পাতাসহ নমুনা সংগ্রহ করেছে।

দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, যে কয়েকটি গাছ থেকে অনবরত বৃষ্টির মতো পানি পড়ছে, এটি গাটেশন প্রক্রিয়া। তবে যে পরিমাণে পানি বের হচ্ছে, তা অস্বাভাবিক। এ নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণা হয়েছে, এমন তথ্য জানা নেই। 

দেলোয়ার হোসেন বলেন, বর্ষাকালে অনেক গাছেই অতিরিক্ত পানি শোষণ করে। এ গাছও বেশি পরিমাণে পানি শোষণ করে। নতুন কাণ্ড বা নতুন কুঁড়ি বের হওয়ার স্থানে পুরাতন কাণ্ড ভেদ করে বের হওয়ার ফলে উদ্ভিদটির ভাসকুলার বান্ডেল তথা পরিবহন কলাগুলো বেরিয়ে পড়েছে। ফলে, উদ্ভিদের মূল থেকে আরোহিত পানি কাণ্ডের ওই অংশ থেকে বিন্দু বিন্দু আকারে ঝরে পড়ছে। অতিরিক্ত পানির চাপ থাকায় ভাসকুলার বান্ডেল তথা পরিবহন কলা কাণ্ডের ছিদ্র দিয়ে পানি বাইরে সজোরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। ভ্যাপার বা বাষ্পায়ন না ঘটার ফলে গাছের নিচে কেউ গেলে বৃষ্টির মতো ঝরা পানি অনুভব করছে।