• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রতিশ্রুতি পূরণে সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে সরকার

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

নিউজ ডেস্ক: সরকারের ইসলাম প্রসারী মনোভাব বজায় রাখতে বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আধুনিক সুবিধা-সংবলিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদ বা ইসলামী স্থাপনা তৈরি করতে এবং মসজিদভিত্তিক সমাজের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ইসলামী মূল্যবোধের প্রসার ও ইসলামী সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিলো।  সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন, প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করতে হবে। উক্ত কমপ্লেক্সে লাইব্রেরি, গবেষণাকক্ষ, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, শিশুশিক্ষা কার্যক্রম এবং পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক নামাজ কক্ষ, মেহমানদের আবাসন ব্যবস্থা, বিদেশি পর্যটকদের পরিদর্শনের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ইত্যাদি থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছ।

এ প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা। যার পুরোটাই বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে।  প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে এপ্রিল ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত।  প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইসলামী মূল্যবোধের পরিচর্যা ও প্রসার ঘটানো। প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি জেলায় চারতলা এবং উপজেলায় তিনতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হবে।

মূল মসজিদটি হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।  উপকূলীয় এলাকায় নিচতলা উন্মুক্ত রেখে ভবনটি নির্মিত হবে।  নারী মুসল্লিদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের জন্য আলাদা ক্যাম্প থাকবে।  মসজিদের অবকাঠামোর মধ্যে থাকবে মুসলমান নারী ও পুরুষদের নামাজ আদায়ের সুবিধা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিস, লাইব্রেরি, গবেষণা ও দাওয়াহ কার্যক্রম, পবিত্র কোরআন পাঠের স্থান ও তাহফিজ, কনফারেন্স হল, প্রশিক্ষণকেন্দ্র, শিশুশিক্ষা, নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক অজুর ব্যবস্থা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রী ও ইমাম প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা।

প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৪৪০ পুরুষ এবং ৩১ হাজার ৪০০ নারীর নামাজ পড়ার সুযোগ হবে।  পবিত্র কোরআন ও হাদিসের জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে ৩৪ হাজার পাঠকের জন্য লাইব্রেরি সুবিধা নিশ্চিত হবে।  প্রতিদিন ৬ হাজার ৮০০ গবেষকের গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবে।  প্রতিদিন ৫৬ হাজার মুসল্লির দ্বীনই দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ হবে। প্রতিবছর ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কোরআন হিফজ করার সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি ১৬ হাজার ৮০০ শিশুর প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের ব্যবস্থা তৈরি হবে। প্রতিদিন ২ হাজার ২৪০ দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসনের সুবিধা পাওয়া যাবে।

এছাড়া মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা এবং হজযাত্রী ও ইমামদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যাবে।  এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে বিগত ৫ এপ্রিল ২০১৮ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ৯টি স্থানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।  উক্ত উদ্বোধনকৃত ৯টি স্থানে এরই মধ্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে।

প্রকল্পটির আওতায় বিভিন্ন সংস্থার মালিকাধীন ১৭৭টি জমির স্বত্ব/দখল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুকূলে হস্তান্তরের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। এ পর্যায়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ উপজেলা পরিষদের ১৬২টি জমির সমঝোতা স্মারক স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সম্পাদিত হয়েছে। এছাড়া গণপূর্ত অধিদপ্তর (৩টি), বাংলাদেশ রেলওয়ে (৪টি), সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (৫টি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (১টি), পানি উন্নয়ন বোর্ড (১টি) এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (১টি)-এর মালিকাধীন জমি/স্থান এ মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য বর্ণিত সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ- এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে ডিও লেটার প্রেরণ করা হয়েছে।