ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বে চিরভাস্বর একজন বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমান
মানিকগঞ্জ বার্তা
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
নিউজ ডেস্ক: স্বাধীন বাংলার স্থপতি তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করে সফল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নেতৃত্ব দিতে গিয়ে জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি কারাভোগ করেছিলেন। এমনকি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কারারুদ্ধ থাকা সত্ত্বেও মাতৃভাষা আন্দোলনে অবিস্মরণীয় ভূমিকা ও অবদান রেখেছেন তিনি।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালির প্রতি আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের পাশাপাশি ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর প্রথম আঘাত হানা, যা পূর্ববঙ্গের অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা শুরুতেই উপলব্ধি করতে শুরু করে। পাঞ্জাবি শাসকগোষ্ঠী তাদের নিজেদের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার গভীর চক্রান্তে নেমেছিল। যা প্রতিহত করার অগ্রপথিক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আন্দোলনের প্রারম্ভে ঢাকায় আয়োজিত এক সম্মেলনে গঠিত হয় গণতান্ত্রিক যুবলীগ। ভাষা-বিষয়ক কিছু প্রস্তাব সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়, ওই প্রস্তাবে তৎকালীন যুবনেতা শেখ মুজিবুর রহমান উল্লেখ করেন, ‘বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের লেখার বাহন এবং আইন-আদালতের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হোক। সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে, সে সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়া হোক এবং জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গৃহীত হোক।’ পাকিস্তান সৃষ্টির পর এভাবেই সর্বপ্রথম মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার দাবি উচ্চারিত হয়েছিল।
১৯৪৭ সালের শুরুতে কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যুব নেতা শেখ মুজিবসহ কিছু নেতা অসাম্প্রদায়িক ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে শেখ মুজিবসহ ১৪ জন ভাষা প্রেমিক বাংলা ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন দাবি-সংবলিত ২১ দফা ইশতেহার প্রণয়নে ভূমিকা রাখেন, যা পুস্তক আকারে প্রকাশ হয়ে নামকরণ হয়— ‘রাষ্ট্রভাষা ২১ দফা ইশতেহার—ঐতিহাসিক দলিল’। শেখ মুজিব তমদ্দুন মজলিসের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন এবং এর পক্ষে গণস্বাক্ষর গ্রহণ করেন।
তৎকালীন প্রগতিশীল ছাত্র-যুব আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভাষা আন্দোলনে মোগল টুলীর ১৫০ নম্বর বাড়িটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। এখান থেকে মাতৃভাষাসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রচার চালানো হতো। শেখ মুজিব, কমরুদ্দিন, জহিরুদ্দিন, নঈমুদ্দিন, শওকত আলী প্রমুখ ছিলেন এর সংগঠক।
১৯৪৮- এর ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ১০ দফা দাবির মধ্যে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা আদায়ের জোরালো দাবি উত্থাপিত হয়, যার অন্যতম কুশীলব ছিলেন শেখ মুজিব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তৎকালীন প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় এবং ঢাকা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন ও দলে দলে যোগদানের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ১৯৪৮- এর ২৬ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা ভাষার পক্ষে অনুষ্ঠিত এই সফল সমাবেশের ব্যবস্থাপনা এবং সফলতার কৃতিত্ব পান তৎকালীন যুব নেতা শেখ মুজিব।
শেখ মুজিবসহ প্রগতিবাদী ছাত্র ও যুব নেতারা এ সমাবেশে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার এবং সর্বাত্মক সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ফজলুল হক মুসলিম ছাত্র হলে অনুষ্ঠিত মুসলিম ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিসের যৌথ সভায় নতুন করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। শেখ মুজিব ছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন শামছুল হক, আবুল কাশেম, রনেশ দাস গুপ্ত, অজিত গুহ, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহা।
১৯৪৮ সালের ১ মার্চ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রদত্ত বিবৃতিতে ১১ মার্চের হরতাল যেকোনো মূল্যে সফল করার আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর দেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান, তমদ্দুন মজলিসের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, মুসলিম ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নঈমুদিন আহমেদ ও আবদুর রহমান চৌধুরী। ১১ মার্চ সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর এই হরতাল প্রথমবারের মতো পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চিন্তাকে নাড়া দেয়। এই হরতাল চলাকালে শেখ মুজিব পুলিশি হামলায় আহত ও গ্রেপ্তার হন। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা অলি আহাদ তার লিখিত গ্রন্থে উল্লিখিত ঘটনায় শেখ মুজিবের সাহসী ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। সম্ভবত শেখ মুজিবই প্রথম রাজবন্দী, যিনি পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে মাতৃভাষা আন্দোলনের জন্য সর্ব প্রথম গ্রেপ্তার হন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ১৯৪৮-এর ১৫ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের আট দফা চুক্তি অনুসারে শেখ মুজিবসহ অন্য ভাষা সংগ্রামীরা কারামুক্ত হন। ভাষা সংগ্রাম আরো তীব্র করার লক্ষ্যে সেই বছরের ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শেখ মুজিবের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদ ভবন অভিমুখে (পুরনো জগন্নাথ হল ছাত্রাবাস) বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় বাংলা ভাষাসহ অন্যান্য দাবি পেশ করার লক্ষ্যে।
পরদিন ১৭ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুসারে ওই দিন দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূলত ভাষার দাবিতে সফল ধর্মঘট পালিত হয়। দৃঢ় প্রত্যয়ী এবং আন্দোলন প্রশ্নে অবিচল শেখ মুজিব ক্রমেই ছাত্র-যুব সমাজের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি পেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় ১৯৪৯ সালে শেখ মুজিব দুবার কারারুদ্ধ হন। ভাষা আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখনো তিনি কারাগারে ছিলেন। কারা অভ্যন্তরে থেকেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা পাঠাতেন।
নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫ শতাংশের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও এর স্থলে সংখ্যালঘু মাত্র ৫ শতাংশের ভাষা উর্দুকে অযৌক্তিক ও অনৈতিকভাবে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাঙালি ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ হয়। মাত্র সাড়ে চার বছরের মাথায় ১৯৫২ সালে রক্ত ঝরে ঢাকার রাজপথে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার মহান আন্দোলনই বাঙালি জাতিকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা তথা জাতীয় মুক্তি সংগ্রামকে তরান্বিত করে। মাতৃভাষা আন্দোলনের এবং পর্যায়ক্রমে চলমান প্রতিটি আন্দোলনের সুযোগ্য এবং অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।
- ‘বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যে দক্ষ শ্রমিক দিতে পারবে’
- কারাবন্দির মৃত্যু
- বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়
- জিআই সনদ পেল ১৪ পণ্য
- এক রাতে ৫ সেচ মেশিন চুরি
- মোদি ও রাহুলকে ইসির নোটিশ:আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ
- ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা আজ
- নারীসহ দালাল চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
- সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত মেট্রোরেল সংযোগ সম্প্রসারণের দাবি
- ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনার পরিকল্পনা’
- ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা
- কমান্ডার আরাফাত র্যাবের নতুন মুখপাত্র
- আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ বিজিপি-সেনাকে হস্তান্তর
- ৩ দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
- হিট স্ট্রোকে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
- কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাজতির মৃত্যু
- স্ত্রীকে কু*পি*য়ে জ*খ*ম করল পাষণ্ড স্বামী
- গরমেও চলছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা!
- দায়ীদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ
- দুই দিনে দুই মাদরাসাছাত্র নিখোঁজ
- খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
- বুবলির নায়ক সিয়াম
- প্রাবোওকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল ইন্দোনেশিয়া
- একই গাড়ির চাপায় চালক ও সহকারীর মৃত্যু
- কারাভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি কক্সবাজারে
- প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক পৌঁছেছেন
- নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা
- তৈফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
- এখনো শেষ হয়নি তিন মামলার বিচার
- দেশে ফিরবেন সেই ২৩ নাবিক
- আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ বিজিপি-সেনাকে হস্তান্তর
- প্রাবোওকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল ইন্দোনেশিয়া
- একই গাড়ির চাপায় চালক ও সহকারীর মৃত্যু
- তৈফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
- স্ত্রীকে কু*পি*য়ে জ*খ*ম করল পাষণ্ড স্বামী
- বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৩ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে
- ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা আজ
- জিআই সনদ পেল ১৪ পণ্য
- কারাভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি কক্সবাজারে
- স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার
- প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক পৌঁছেছেন
- বুধবার গ্যাস থাকবে না ১২ ঘণ্টা
- দেশে ফিরবেন সেই ২৩ নাবিক
- এক রাতে ৫ সেচ মেশিন চুরি
- দুই দিনে দুই মাদরাসাছাত্র নিখোঁজ
- মোদি ও রাহুলকে ইসির নোটিশ:আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ
- এখনো শেষ হয়নি তিন মামলার বিচার
- দায়ীদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ
- ইসরায়েলের ‘কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না’
- খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত