• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মানিকগঞ্জে ফুটেছে ‘পাখি ফুল’

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের তরুণ উদ্যোক্তা তানভীর আহমেদের বাগানে ফুটেছে ‘পাখি ফুল’।

সবুজ পাতার আড়ালে বাদুড়ের মতো উল্টো হয়ে ঝুলে থাকা ফুলগুলো দেখতে অনেকটা পাখির মতো বলে অনেকে ডাকে ‘পাখি ফুল’ নামে।

বাগানের মালিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর  জানান, ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনের পাশে প্রথম পাখিফুল দেখে গাছ সংগ্রহ করার ইচ্ছে জাগে তার। পরে তিনি দুটো গাছ সংগ্রহ করেন। প্রথমটি রমনা পার্কের দায়িত্বরত এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে আর আরেকটা জাত আনেন থাইল্যান্ড থেকে।

তানভীর বলেন, পাখি ফুল কুঁড়ি অবস্থায় কদম ফুলের গুটির মতো থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে গুটি ফেটে রক্তজবা ফুলের মতো আলাদা আলাদা ৩০ থেকে ৩৫টি কলি বেরিয়ে আসে। কিছুদিন পরে কলিগুলো একসঙ্গে ফেটে পাপড়ি বেরিয়ে আসে। পাখি ফুলে গাছ খুব বাড়েও ধীরে।

দুর্লভ এ পাখি ফুলকে বাংলাদেশে ‘বিলাতি অশোক’ নামে ডাকা হয় জানালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সাব্বির আহমেদ।

 তিনি বলেন, বর্তমানে ঢাকার রমনা পার্ক, শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসে, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও চট্টগ্রামের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে এই পাখি ফুল গাছের দেখা মেলে।

এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম ব্রাউনিয়া ককসিনিয়া (Brownea Coccinea)। জন্মস্থান ভেনেজুয়েলা। বিদেশি হলেও ইদানীং বাংলাদেশের কোথাও কোথাও এই ফুলের গাছ দেখা যায়। একেক দেশে এই গাছ একেক নামে পরিচিত। প্রচলিত নাম রোজ আব ভেনেজুয়েলা। প্রজাতিটি গায়ানা, ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর স্থানীয় ফুল। এটি চিরহরিৎ বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ।

পাখি ফুলের গাছ ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। এছাড়া এই গাছ ঘন সবুজ পাতায় ঘেরা থাকে এবং এই ফুলের আয়তন সূর্যমুখী ফুলের কাছাকাছি।

জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে গাছে গাছে গন্ধহীন পাখি ফুল ফোটে বলে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এ প্রভাষক জানান।

পাখি ফুল নামের কারণ কি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বিদেশী এ ফুল নিয়ে এখনও তেমন গবেষণা হয়নি। তবে আমার ধারণা, কিছু পাখি আছে যারা গাছের পাতায় লুকিয়ে থাকে। দূর থেকে দেখা যায় না। তবে গাছে নিচে গেলে দেখা যায়। তেমনি এই ফুল গাছের পাতার নিচে থাকে। কাছে গেলে দেখা যায়। তাই এর নাম পাখি ফুল।”