• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মাটি ব্যবসায়ীদের কবলে মানিকগঞ্জের কৃষি জমি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারি ২০২৩  

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নে আইন-আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিন ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এর ফলে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে।

প্রায় ১০ ফুট গভীর করে জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার ফলে আশপাশের জমির মালিকরা শঙ্কায় আছেন, কারণ যেকোনো সময় তাদের জমি ধসে যেতে পারে।  
দেশে দিন দিন কমে আসছে কৃষি জমি। ফলে কৃষি জমি কোনোভাবেই নষ্ট না করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু এলাকার কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে ফসলী জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে মৌখিকভাবে মাটি না কাটার জন্য অনুরোধ করা হলেও তারা শুনছেন না।   

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের বাসাই কুড়িখোলা রাস্তার তিনটি জমির পর থেকেই দশ ফিট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ফারুক হোসেন ও ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের আলমগীরসহ আরও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। স্থানীয়রা প্রথম দিকে কয়েক বার বাধা দিলে তাদেরকে নানা ধরনের ভয় দেখানো হয়। ফলে এখন আর কেউ প্রতিবাদ করতে যান না। সরকারি অফিস ছুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিকেল থেকে শুরু হয় মাটি কাটার মহোৎসব। এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ তাকিয়ে আছে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দিকে।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষি নির্ভর। প্রতিটি জমিতে বছরে তিন থেকে চারটি ফসল হয়। আর এই ফসল বিক্রি করে সংসারের যাবতীয় খরচ আমরা করে থাকি। ফারুক ও আলমগীর প্রথমে আমাদের কাছে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া জন্য রাস্তা চেয়েছিলো, আমরা রাস্তা দিতে না চাইলে আমাদের ভয়ভীতি দেখায়। প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কিছুই বলতেও পারছে না।  

আটিগ্রাম ইউনিয়নের ৫ নম্বার ওয়ার্ড মেম্বার রবিউল হাসান বলেন, তিন ফসলী জমি থেকে মাটি কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং মাটি কাটার জন্য নিষেধ করি। এই মাটি কাটার জন্য আমার ওয়ার্ডে রাস্তার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তাদেরকে বিষয়টি জানালে আলমগীর নামের এক লোক বলে আমরা কথা বলেই সব কিছু করছি।

আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূরে আলম সরকার বলেন, বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে শুনেছি।  তবে আমি জেলার বাইরে থাকার জন্য তাকে কোনো নির্দেশনা দিতে পারিনি। সরেজমিন গিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।   

মাটি ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন ও আলমগীর মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।  

আটিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) সাত্তার হোসেন বলেন, আটিগ্রামের বাসাই চকে তিন ফসলী জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে, বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।  

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, আটিগ্রামের বাসাই কুড়িখোলা অঞ্চলে তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।