• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মডারেট দল গঠন করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন পদত্যাগী-বহিষ্কৃতরা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

নিউজ ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা এবং জামায়াত বিলুপ্তি প্রসঙ্গে মতানৈক্যের জেরে পদত্যাগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। একই কারণে বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি এবং জামায়াতের ঢাকা মহানগর মজলিসে শূরার সদস্য মজিবুর রহমান মঞ্জুকেও।

জামায়াতের এমন রাজনৈতিক বিপর্যয়ে গুঞ্জন উঠেছে, ব্যারিস্টার রাজ্জাক এবং মঞ্জুসহ জামায়াতের সংস্কারপন্থী নেতারা ভিন্ন নামে ইসলামিক দল গঠনের চেষ্টা করছেন। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামীতে গণহারে দলত্যাগেরও গুজব রটেছে জামায়াতের রাজনীতিতে। কারণ, আব্দুর রাজ্জাক পদত্যাগপত্রের শেষ দিকে লিখেছেন, ‘এখন থেকে আমি নিজস্ব পেশায় আত্মনিয়োগ করতে চাই। সেই সঙ্গে ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।’

এদিকে জামায়াতের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আটঘাট বেঁধেই নতুন দল গঠনের জন্য এরইমধ্যে বিভিন্ন সংস্কারপন্থী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। জানা গেছে, নতুন করে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া ইসলামী দলটির আধ্যাত্মিক নেতা হবেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। রাজ্জাকের মডারেট চিন্তাধারা অনুযায়ী, বর্তমান পুঁজিবাদী পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে নতুন দলটিকে গোঁড়ামিমুক্ত এবং আধুনিক দল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

জামায়াতের মূলধারার একটি সূত্র বলছে, ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পদত্যাগে জামায়াত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঠিকই, তবে রাজ্জাকের প্রতিটি কার্যক্রমে নিবিড় দৃষ্টি রাখছে জামায়াত। দলের ক্ষতি করে এমন কার্যক্রম থেকে ব্যারিস্টার রাজ্জাককে অনুৎসাহিত করার চিন্তা রয়েছে জামায়াতের। যদিও শঙ্কা রয়েছে যে, সংস্কারপন্থী এবং বহিষ্কৃত অনেক নেতাই ব্যারিস্টার রাজ্জাককে আধ্যাত্মিক গুরু মেনে তার অনুসারী হতে পারেন। যদি এমনটিই হয়, তবে জামায়াত সাংগঠনিকভাবে চরম দুর্বল হয়ে পড়বে এবং জামায়াতের দীর্ঘদিনের রাজনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে করে দলটির গ্রহণযোগ্যতা শূন্যের কোটায় পৌঁছে বিলুপ্তও হয়ে যেতে পারে।

বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে গৃহবিবাদ চলছে এটি সত্য। একটি পক্ষ দল ভেঙ্গে দিয়ে নতুন দল গঠন করার বিষয়ে অভিমত দিয়েছে। বিষয়টির কোন সমাধান হওয়ার আগেই ব্যারিস্টার রাজ্জাক পদত্যাগ করলেন। এটি হতাশাজনক। এখন শুনছি জামায়াতের বহিষ্কৃত নেতারা ব্যারিস্টার রাজ্জাকের ছায়াতলে একত্রিত হয়ে নতুন একটি মডারেট রাজনৈতিক দল গঠন করার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি উদ্বেগজনক। রাজনীতিতে ছাড় দেয়ার অর্থ অস্তিত্ব বিনাশের সুযোগ করে দেয়া। সেটি অন্তত জামায়াত করবে না। ব্যারিস্টার রাজ্জাক এখন জামায়াতের কেউ নন। সুতরাং তিনি জামায়াত ভেঙ্গে নতুন দল কিংবা মত গঠনের চেষ্টা করলে কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না।

এ বিষয়ে সদ্য বহিষ্কৃত মজিবুর রহমান মঞ্জুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাজনীতিতে অবসর বা বহিষ্কার বলে প্রতিষ্ঠিত কিছু নেই। জামায়াত বহিষ্কার করেছে, কিন্তু আমার রাজনীতি করার অধিকার তো কেড়ে নিতে পারেনি। আমরা দলগতভাবে ভিন্ন কিছু নিয়ে, কলঙ্কিত রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে রাজনীতিতে চমক দেয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের এই পরিকল্পনায় মূলে থাকবেন একজন শিক্ষিত, মার্জিত নেতা। বিভিন্ন স্বার্থে আমরা সেই নেতার নাম এখন প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। আমরা নতুন কিছু করতে চাই।