• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি-জামায়াতের আমলনামাঃ পর্ব ৪- ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ড

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০১৮  

২১ আগস্ট,২০০৪ সাল। দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত সন্ত্রাস ও বোমা হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সন্ত্রাসবিরোধী সেই সমাবেশেই গ্রেনেড নিক্ষেপ করে চিহ্নিত খুনীচক্র। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে মানবঢাল তৈরি করে সেদিন একের পর এক ছুঁড়ে মারা গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিশ্বের ইতিহাসে এরকম নজির আর আছে কিনা জানা নেই।

বিএনপি-জামায়াতের এই পৈশাচিক হামলায় প্রাণ হারান আইভী রহমানসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অসংখ্য নেতাকর্মী। ১৩ বছর আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের এই ঘটনা ছিল নৃশংস রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।

ওই ঘটনায় খুনী খালেদা-তারেকসহ তৎকালীন মন্ত্রী, আমলা, পুলিশ-গোয়েন্দা, রাজনৈতিক নেতা এবং মুফতি হান্নানের হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশকে (হুজি) ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে দেখা গেছে। হামলার পরপরই আহতদের উদ্ধার না করে বিস্ময়করভাবে লাঠিচার্জ ও হামলার সকল আলামত নষ্ট করে দিতে ব্যস্ত ছিল দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এমনকি আহতদের চিকিৎসা নিতেও বাধা দিয়েছেন তারা।

হামলার পরে সংসদে দাঁড়িয়ে তথাকথিত মাদারে গণতন্ত্র খালেদার সেই দম্ভোক্তি আজও ভোলেনি দেশবাসী।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের তৈরি করা এই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে মুফতি হান্নানের জঙ্গি দল হুজিকে নিয়োগ করা হয়। তার আগে হুজি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য বোমা পেতেছিল। ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। ২১ আগস্টে তিনিই মূল টার্গেট ছিলেন।

আসলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ৩০ বছর পর সেই আগস্ট মাসেই আবারও গণহত্যার এই ঘটনা ঘটে। এ গ্রেনেড হামলা ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট তথা খালেদা-নিজামীর নীলনকশা আর জঙ্গিবাদ উত্থানের ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত।

অথচ সে সময় খালেদা-নিজামীর হুকুমের গোলাম বাবরের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত কমিটি করে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিল। নষ্ট করা হয়েছিল গ্রেনেড হামলার সব আলামত। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে জজ মিয়াদের কোনো দোষ খুঁজে পায়নি। বরং ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৫২ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হলে প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়।

সম্প্রতি বহুল আলোচিত এই মামলার রায় প্রদান করেছেন বিজ্ঞ আদালত।  গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িত থাকার দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরিসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ৫২ আসামির মধ্যে ৩৩ জন কারাগারে; পলাতক ১২ জনের মধ্যে তারেক রহমান লন্ডনে, হারিছ চৌধুরী আসামে, কেউ কেউ আছেন কানাডা, ব্যাংকক, আমেরিকায়; হুজির শীর্ষ নেতারা পাকিস্তানে পালিয়েছে। এদের সবাইকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে রায় কার্যকর