• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কাল থেকে শুরু ইতিকাফ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২০  

ইতিকাফ। মুসলিম উম্মাহর পবিত্র রমজান মাসের বিশেষ একটি ইবাদত। আত্মশুদ্ধির চর্চা ও আত্মার পবিত্রতা অর্জন করাসহ ইতিকাফ পালন করার মূল উদ্দেশ্য হলো মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করা। 

বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে পুরো বিশ্ব যখন স্থবির আর ঠিক এসময়ই শুরু হতে যাচ্ছে রমজানের এ বিশেষ ইবাদতটি।

করোনার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মসজিদগুলোতে পাঞ্জেগানা, জুমা, তারাবিহ ও ইতেকাফে রয়েছে স্থগিতাদেশ। ধর্ম মন্ত্রণালয় শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশের মসজিদগুলো সাধারণ মুসল্লিদের নামাজের জন্য উন্মুক্ত রাখার স্থগিতাদেশ উঠিয়ে নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২০ রমজান ১৪৪১ হিজরি সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে রমজানের অনন্য ইবাদত ইতিকাফ। ইতেকাফকারীরা লাইলাতুল কদর তালাশে ইতেকাফ পালনে বৃহস্পতিবার ইফতারের আগেই মসজিদে অবস্থান নেবে।

রমজানে ইতেকাফ পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভ করা। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমে চূড়ান্ত নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করা। প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বছর রমজানে ইতেকাফ করতেন।

কেননা মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জনে নিরবচ্ছিন্ন ইবাদাত বন্দেগিতে সময় কাটানো ও ইতিকাফ পালনের মাধ্যমেই লাইলাতুল ক্বদর প্রাপ্তির একমাত্র সুবর্ণ সুযোগ আসে। ইতিকাফ হচ্ছে নিজের নফসকে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে আবদ্ধ করা ও তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। আর দুনিয়ার সব কিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহর জিকির-আজকারের মাধ্যমে নিজের অন্তরকে দুনিয়াবী কাজ-কর্ম থেকে বিরত রাখা জরুরি।

রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতে হয়। তাই ইতেকাফের রয়েছে কিছু প্রস্তুতি। ইতেকাফে বসলে রোজাদার কোনো ধরনের কথা-বার্তা, লেন-দেন, ব্যবসা-বানিজ্য, চাকরি-বাকরি কোনো কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে পারে না। ইতেকাফের বিধি-নিষেধ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَلاَ تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ

‘তোমরা মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সঙ্গে (তোমাদের স্ত্রীদের) সঙ্গম করো না।’ (সূরা : বাকারা, আয়াত : ১২৭)।

ইতিকাফে বসার আগে করণীয় :

> পরিবারের ঈদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা।
ফিতরা আদায়ের ব্যবস্থা করা।
> পরিবারের ব্যয়ভার বহনের ব্যবস্থা করা।
মসজিদে ইফতার ও সেহরি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।
> দুনিয়াবি জরুরি সম্ভাব্য কাজের সমাধানের ব্যবস্থা করা।
> পারিবারিক যাবতীয় প্রয়োজনীয় বিষয়াদির ব্যবস্থা করে যাওয়া।

ইতেকাফে বসার জন্য মসজিদে প্রবেশের আগেই পারিবারিক ও প্রয়োজনীয় সব সমস্যার সমাধানে সার্বিক ইন্তেজাম সম্পন্ন করা মুমিন মুসলমান রোজাদারের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

উল্লেখ্য, এবার যারা ইতেকাফে বসবেন, তাদের নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি যথাযথ গুরুত্বারোপ করাও জরুরি। বিশেষ করে বয়স্ক ও প্রবীণদের ইতেকাফে অংশগ্রহণ না করাই হবে উত্তম। ইতিমধ্যে মসজিদের মাইকেও এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে ইতেকাফে পালনের তাওফিক দান করুন। ইতেকাফের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হাসিলের তাওফিক দান করুন। মহামারি করোনা থেকে সারা বিশ্বকে হেফাজত করুন। আমিন।