• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আশুলিয়ায় ৬ মাসের শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘাতক গ্রেফতার

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২০  

দীর্ঘ ৮ মাস পর ময়না তদন্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা শেষে আশুলিয়ায় ৬ মাসের শিশু মারিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক ও হত্যাকারী নরপশু ঘাতক শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


জানতে পেরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বন্যায় পানিবন্দী শিশু মারিয়ামের বাবা ও স্বজনরা ছুটে এসেছেন নির্মম ঘটনার বিচারের আশায়। 


 বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক সাজ্জাদুর রহমান। আশুলিয়ার গাজীরচটের বুড়িবাজার থেকে শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়। সাথে তার শাশুড়ি ও নিহত শিশুটির পরিচর্যাকারী নুরজাহান বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত শিশুর বাবা ফারুক প্রামাণিক বাদী হয়ে শনিবার (২৫ জুলাই) আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

গ্রেফতারকৃত শিমুল (২৫) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রসুলপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। সে আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। এবং নুরজাহান জামালপুর জেলার আটাবরি এলাকার মৃত মেহের আলীর স্ত্রী। শিমুল সম্পর্কে নুরজাহান বেগমের মেয়ের জামাই। তিনিও আশুলিয়ার গাজীরচটের বুড়িরবাজার এলাকায় ভাড়া থেকে শিশু পরিচর্যা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

শিশুর এমন নির্মম ঘটনার বিচার চাইলেন সন্তানহারা পিতা। আর এভাবে যেন কোন শিশুকে প্রাণ হারাতে না হয়, সেই দাবীও জানালেন পিতা ফারুক প্রামাণিক।


 
তবে নিহত শিশুর দাদা মালেক প্রামাণিক জানান, বিচার চাইলেও দারিদ্র্যতা বড় বাঁধা। টাকা পয়সা নেই। পুলিশ টাকা দিয়েছে বলে আমরা আসতে পেরেছি। পরে মামলার প্রয়োজনে আদালতে বা থানায় আসতে হলে সেই উপায় নেই। তাই সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই। 

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক সাজ্জাদুর রহমান জানান, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আশুলিয়ার বুড়িবাজার এলাকায় পরিচর্যাকারী নুরজাহানের কাছে থাকা অবস্থায় শিশু মারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তখন শিশুর শরীরে ও মলদ্বারে কিছু অস্বাভিবকতা ছিল। পরে নিহত শিশুর ময়না তদন্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা দেয়া হয়। বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হই শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেই সূত্র ধরে শিশু পরিচর্যাকারী নুরজাহানের মেয়ের জামাই শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া তথ্য গোপন ও অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টার জন্য শিমুলের শাশুড়ি নুরজাহান বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ওইদিন ঘরে একা পেয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে বখাটে শিমুল। শিশুটির মুখে ধর্ষকের আঙ্গুলের ছাপ ও মলদ্বারে ক্ষত দেখা গেছে। সুরহাতাল করতে গিয়ে হাত কেপে উঠছিল বার বার-এমন নির্মম ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন সাজ্জাদুর রহমান।

এদিকে ঘটনার পর শিশুরটি বাবা-মা দুইজনই চাকরি ছেড়ে তাদের নিজ গ্রাম রাজশাহীতে চলে যায়। পরে (২৫ জুলাই) তাদের খবর দিয়ে আশুলিয়া থানা আনা হয়। পরে এ ঘটনায় পিতা ফারুক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর আশুলিয়ার বুড়িবাজার এলাকা থেকে পরিচর্যাকারী নুরজাহানের বাসা থেকে ৬ মাসের শিশুর মারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিশুর বাবা ফারুক ও মা রেখা দুইজনেই পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। তাই দেখাশুনার জন্য প্রতিবেশী নুরজাহান বেগমের কাছে মাসিক ৩ হাজার টাকার চুক্তিতে লালন-পালনের জন্য রেখে যেতেন।